প্রতীকী ছবি

যারা নিয়মিত মুসল্লি— তারা আগে-ভাগে মসজিদে উপস্থিত হন। ফলে জামাতে নামাজ আদায়ে তাদের কোনো অসুবিধা হয় না। তবে হতে পারে— কখনো কোনো কারণে মসজিদে আসতে দেরি হয়ে যায়। তখন দুই-এক রাকাত নামাজ ছুটে যায়।

আপনি জামাতে নামাজ আদায় করতে গেছেন, কিন্তু কিছু রাকাত ছুটে গেছে— তখন করণীয় কী? তা জেনে রাখা জরুরি।

এক. প্রথম কথা হলো— জামাতে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে যে ব্যক্তির এক বা তার অধিক রাকাত ছুটে যায়, তাকে ‘মাসবুক’ বলা হয়। মাসবুক ব্যক্তি ইমামকে যে অবস্থায় পাবে, ওই অবস্থায়ই ইমামের সঙ্গে নামাজে শরিক হয়ে যাবে এবং যথারীতি নামাজ আদায় করবে। এটাই জামাতে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে মাসবুকের নিয়ম।

দুই. যদি সে প্রথম রাকাতের রুকুতে শরিক হতে না পারে, তবে ইমামের সঙ্গে বাকি নামাজ আদায় করে— শেষ বৈঠকে শুধু তাশাহহুদ পড়ে চুপ করে বসে থাকবে। এরপর ইমামের উভয় দিকে সালাম ফেরানো শেষ হলে— সে তার ছুটে যাওয়া রাকাতগুলো আদায় করে নেবে। (বাদায়েউস সানায়ে: ১/৩১৪)

তিন. মাসবুকের ছুটে যাওয়া নামাজ আদায়ের পদ্ধতি হলো, কিরাত পড়ার ক্ষেত্রে তার ছুটে যাওয়া রাকাতকে প্রথম ও শুরুর রাকাত ধরা হবে অর্থাৎ ফাতিহা পড়ার পর সুরা মেলাবে। আর বৈঠক ও তাশাহহুদ পড়ার ক্ষেত্রে ইমামের সঙ্গে পঠিতগুলোকে প্রথম ধরে বাকিগুলোকে পরবর্তী রাকাত গণ্য করে নামাজ আদায় করবে। (আল মাবসুত সারাখসি : ১/১৯০, আল বাহরুর রায়েক : ১/৩৭৯)

আরও পড়ুন : আসরের পর কাজা নামাজ পড়া যাবে?

ওই নিয়মানুসারে কোনো ব্যক্তির এক রাকাত ছুটে গেলে— সে ওই রাকাতে কিরাত সুরা মিলিয়ে শেষ বৈঠক করে সালাম ফেরাবে।

চার. চার রাকাতবিশিষ্ট নামাজের জামাতে দুই রাকাত ছুটে গেলে যথারীতি উভয় রাকাতে কিরাত সুরা মিলিয়ে পড়বে এবং এর প্রথম রাকাতে না বসে শেষ রাকাতে বসে তাশাহহুদ, দরুদ ও দোয়া পড়ে সালাম ফেরাবে। (খুলাসাতুল ফাতাওয়া : ১/১৬৫)

পাঁচ. তিন রাকাতবিশিষ্ট নামাজের জামাতে দুই রাকাত ছুটে গেলে— ইমামের সালামের পর যথারীতি উভয় রাকাতেই কিরাত সুরা মিলিয়ে পড়বে এবং প্রথম রাকাতে বসে তাশাহহুদ পড়ে উঠে যাবে। কেননা এ রাকাত বৈঠকের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় রাকাত হিসেবে ধর্তব্য হবে। অতঃপর শেষ রাকাতে বসে সালাম ফেরাবে। (রদ্দুল মুহতার : ১/৫৯৬)

আরও পড়ুন : মাস্ক পরে নামাজ পড়া যাবে কি?

ছয়. যদি চার রাকাতবিশিষ্ট নামাজের জামাতে তিন রাকাত ইমামের পেছনে না পায়, তাহলে সালাম ফেরানোর পর ছুটে যাওয়া রাকাতের মধ্যে প্রথম দুই রাকাতে ফাতিহার সঙ্গে সুরা মিলিয়ে পড়বে এবং শেষ রাকাতে সুরা না মিলিয়ে শুধু ফাতিহা পড়বে। আর প্রথম রাকাতে বসে তাশাহহুদ পড়ে উঠে যাবে। এরপর দ্বিতীয় রাকাতে না বসে শেষ রাকাত পড়ে বৈঠক করবে। (রদ্দুল মুহতার : ১/৫৯৬)