কিয়ামতের দিন শহীদদের নেতা হবেন যে সাহাবি
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে আঘাত করে মুশরিক নেতা আবু জাহেল। এ কথা জানতে পেরে আবু জাহেলের ওপর পাল্টা হামলা চালান নবীজি (সা.) চাচা হজরত হামজা এবং প্রকাশ্যে ইসলাম গ্রহণের ঘোষণা দেন। তিনি ইসলাম গ্রহণের কিছুদিন পরই ওমর (রা.) ইসলাম গ্রহণ করেন। এর মাধ্যমে মুসলিম সমাজ শক্তিশালী হয় এবং প্রকাশ্যে ইসলামের কার্যক্রমের সূচনা হয়।
হামজা (রা.) ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তিনি উহুদ যুদ্ধে শহীদ হন। রাসুল (সা.) তাকে সাইয়্যিদুশ শুহাদা বা শহীদদের নেতা উপাধি দিয়েছিলেন।
বিজ্ঞাপন
উহুদ যুদ্ধে তাকে নির্মমভাবে শহীদ করা হয়। তাকে শহীদ করেছিলেন ওয়াহশী ইবনে হারব। যিনি পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন।
মক্কায় ইসলামের সূচনা লগ্নে একজন মুশরিকের কৃতদাস ছিলেন হজরত ওয়াহশী ইবনে হারব (রা.)। দাস জীবন থেকে মুক্তির জন্য হত্যা করেছিলেন ইসলামের বিখ্যাত সাহাবি হজরত হামজা রা.-কে। পরবর্তীতে আল্লাহ তায়ালা তার অন্তরে হেদায়েতের নূর ঢেলে দেন। ইসলাম গ্রহণ করে ধন্য হন তিনি।
বিজ্ঞাপন
ওয়াহশী (রা.) ছিলেন মূলত হাবশার এক কৃষ্ণাঙ্গ। কুরায়শের বিখ্যাত নেতা জুবায়র ইবন মুতইমের দাস ছিলেন তিনি। বদরের যুদ্ধে জুবায়র ইবন মুতইমের চাচা তুআয়মা ইবন আদী নিহত হন। তখন তিনি ওয়াহশীকে বলেন, তুমি যদি আমার চাচার হত্যার প্রতিশোধ নিতে পার, তবে তোমাকে মুক্ত করব আমি।
তুআয়মা নিহত হয়েছিল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চাচা হজরত হামজা (রা.)-এর হাতে। বদর যুদ্ধের পরে উহুদ যুদ্ধের ঘোষণা করা হলো। তখন ওয়াহশী দাস জীবন থেকে মুক্তি লাভের আশায় হামজা (রা.)-কে হত্যা করার প্রতিজ্ঞা নিয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করলেন।
যুদ্ধের সময় ওয়াহশী একটি বড় পাথরের আড়ালে ওঁৎ পেতে থাকেন। এক পর্যায়ে হজরত হামজা (রা.)-কে নাগালের মধ্যে পেয়ে যান এবং নির্মমভাবে তাকে হত্যা করেন। বিনিময়ে জুবায়র ইবন মুতইম তাকে মুক্তি দেন।
রাসুল (সা.) যখন শহীদ চাচার লাশ দেখেছিলেন তখন তিনি নিজেকে সংবরণ করতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এবং বলেছিলেন, কিয়ামতের দিন হামজা হবে ‘সাইয়েদুশ শুহাদা’ বা সকল শহীদের নেতা। তিনি আরও বলেন, তোমার ওপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক। আমার জানামতে, তুমি ছিলে আত্মীয়তার সম্পর্কের ব্যাপারে অধিক সচেতন ও অতিশয় সৎকর্মশীল।
আসহাবে রাসুলের জীবনকথা, ১/১০৬
এনটি