২০২৫ সালে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের যে আলেমরা বিদায় নিয়েছেন
ছবি : ঢাকা পোস্ট গ্রাফিক্স
নিজের দেশ, সমাজের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ইসলামের বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন এমন আলেমের সংখ্যা অনেক। জীবদ্দশায় তাদের শূন্যতা অনুভব হয় না খুব একটা। তবে তাদের বিদায়ে শূন্যতা তৈরি হয় ধীরেধীরে, যা সহসাই পূরণ হয় না। ২০২৫ সালের আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে বিদায় নেওয়া বরেণ্য আলেমদের তালিকা তুলে ধরা হলো এখানে—
সিরীয় আলেম শায়খ সারিয়া আব্দুল কারিম আল রিফায়ী
বিজ্ঞাপন
সিরিয়ান আলেম শায়খ সারিয়া আব্দুল কারিম আল রিফায়ী ইন্তেকাল করেন ০৬ জানুয়ারি (সোমবার)। দীর্ঘ ১২ বছর ধরে তুরস্কে নির্বাসিত ছিলেন। ৭৭ বছর বয়সে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ইন্তেকাল করেন তিনি।
শায়খ সারিয়া আব্দুল কারিম আল রিফায়ী ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা সংগ্রামের সমর্থক ছিলেন। তার ইন্তেকালে শোক প্রকাশ জানায় গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা সংগ্রামী সংগঠন হামাস।
বিজ্ঞাপন
শায়খ সারিয়া আব্দুল কারিম আল রিফায়ী ১৯৪৮ সালে দামেস্কে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা শায়খ আব্দুল কারিম আল রিফায়ী সিরিয়ার প্রসিদ্ধ আলেমদের একজন। তিনি বাবার কাছে বেড়ে উঠেছেন। তিনি ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত দামেস্কে মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। এরপর মিশরের আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে উসুলদ্ব দ্বীন ও তাফসির বিষয়ে অধ্যয়ন করেন।
তিনি কয়েক বছর সিরিয়ান আরব প্রজাতন্ত্রের সাবেক মুফতি শায়খ আবি ইসার আবিদিনের কাছে থেকে আরবি ও হানাফী ফিকাহশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন।
দামেস্কে ফিরে আসার পর শায়খ সারিয়া আল-রিফাই ইসলামিক আইন বিষয়ে কাজ করেন। একইসঙ্গে দাতব্য ও সামাজিক কাজে অংশ নেন এবং তিনি দামেস্ক শহরের জায়েদ বিন সাবিত মসজিদের ইমাম ছিলেন। তিনি হিফজুন্নুমা নামক একটি দাতব্য সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
শায়খ সারিয়া আল-রিফায়ী কোরআনের চর্চায় জায়েদ বিন সাবিত ইনস্টিটিউট পুনরায় চালু করেছিলেন। এটি তার বাবা শায়খ আব্দুল করিম আল-রিফায়ী শুরু করেছিলেন।
দাতব্য, সামাজিক সেবা এবং আন্তর্জাতিক ইসলামী সম্মেলনে অংশগ্রহণের পাশাপাশি, তিনি সিরিয়ান ইসলামিক কাউন্সিল এবং লিগ অফ লেভান্ট স্কলারের সদস্য ছিলেন।
সারিয়া আল-রিফায়ী সবসময় সিরিয়ার স্বৈরশাসক বাশার আল আসাদ পরিবারের দমন-পীড়নের বিরোধী ছিলেন। বাশার আল আসাদের বাবা হাফেজ আল-আসাদের শাসনামলে জুলুম নির্যাতনের শিকার হন তিনি। এক কারণে ১৯৮০ থেকে ১০৯৩ সাল পর্যন্ত তাকে সিরিয়ার বাইরে অবস্থান করতে হয়েছিল।
২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে বিপ্লবীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন তিনি। আসাদ পরিবারের স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে সিরিয়ার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর ছিলেন।
২০১১ সালের আগস্টে রমজান মাসে সিরিয়ার হাউলা শহরে আসাদ বাহিনী কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যার প্রথম সমালোচকদের অন্যতম ছিলেন তিনি। বিপ্লবের সমর্থন এবং আসাদ সরকারের বিরোধী অবস্থানের কারণে ২০১২ সালে সিরিয়া ত্যাগ করেন তিনি।
মসজিদুল হারামের প্রসিদ্ধ গাইড শেখ মোস্তফা দাব্বাগ
মসজিদুল হারামের জনপ্রিয় গাইড শায়খ মোস্তফা আল-দাব্বাগ ইন্তেকাল করেন ১৪ জানুয়ারি (মঙ্গলবার)। তার ইন্তেকালে হারমাইন শরিফাইন কর্তৃপক্ষ শোক প্রকাশ করে। তিনি পবিত্র মসজিদে আগত হাজি ও ইবাদতকারীদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন। নিঃস্বার্থ সেবার জন্য পরিচিত ছিলেন তিনি। তিনি হাজিদের সঠিক নিয়ম মেনে তাওয়াফ, সাঈ ও অন্যান্য ইবাদত করার পদ্ধতি শিক্ষা দিতেন।
তার অনেক প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন হারাম শরিফ কর্তৃপক্ষ । যেমন হারামের প্রবেশপথে জুতা রাখার জন্য ব্যাগের ব্যবস্থা ইত্যাদি।
দেওবন্দের সাবেক মুহতামিম মাওলানা গোলাম মুহাম্মদ বুস্তানবী
উপমহাদেশের প্রখ্যাত দীনি বিদ্যাপীঠ দারুল উলুম দেওবন্দের সাবেক মুহতামিম মাওলানা গোলাম মুহাম্মদ বুস্তানবী ইন্তেকাল করেন ৪ মে (রোববার)।
দেওবন্দের দীর্ঘকালীন মুহতামিম মাওলানা মারগুবুর রহমানের ইন্তেকালের পর মাওলানা গোলাম মুহাম্মদ বুস্তানবী দেওবন্দের মুহতামিম হয়েছিলেন। তিনি ২০১১ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে ২৪ জুলাই ২০১১ স্বল্প সময়ের মুহতামিম ছিলেন। ২০১১ সালে তিনি নরেন্দ্র মোদির প্রশংসা করলে তাকে দারুল উলুম দেওবন্দের মুহতামিমের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
তিনি দায়িত্ব পালনকালে দারুল উলুম দেওবন্দে মেডিসিন ও প্রকৌশলের মতো বিষয় চালু করে মাদরাসা শিক্ষার সংস্কারে ভূমিকা রাখেন।
দেওবন্দের মজলিসে শুরার দীর্ঘদিনের সদস্য মাওলানা গোলাম মুহাম্মদ বুস্তানবী জামিয়া এশায়াতুল উলুম আক্কলকোয়া, মহারাষ্ট্র, ভারত-এর প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম। ভারতের অসংখ্য মসজিদ-মাদরাসা, স্কুল, কলেজ, মেডিকেল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা তিনি।
মাজাহিরুল উলুম সাহারানপুরের মুহতামিম মাওলানা মুহাম্মদ সাঈদী
ভারতের উত্তর প্রদেশের বিখ্যাত দীনি বিদ্যাপীঠ মাজাহিরুল উলুম (ওয়াকফ) সাহারানপুরের মুহতামিম মাওলানা মুহাম্মদ সাঈদী ইন্তেকাল করেন ৪ জুন (বুধবার)।
মাওলানা মুহাম্মদ সাঈদ ২০০৩ সাল থেকে মাজাহিরুল উলুমের মুহতামিমের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি প্রায় ২২ বছর বিশ্ববিখ্যাত প্রতিষ্ঠানটির প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। তার সময়ে প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক উন্নতি ও সুনাম সাধিত হয়।
মাওলানা মুহাম্মদ সাঈদীর জন্ম ১৯৭০ সালে। পারিবারিক পরিবেশে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। কোরআন হিফজ করেন মাদরাসা মাজাহিরুল উলুমে (ওয়াকফ)। ১৪০৯ হিজরিতে দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন।
সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শায়খ আবদুল আজিজ
সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি ও দেশটির সিনিয়র ওলামা পরিষদের প্রধান শায়খ আবদুল আজিজ আল-শায়খ ইন্তেকাল করেন ২৩ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার)। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
১৯৯৯ সালে শায়খ আবদুল আজিজ আল-শায়খ সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি সিনিয়র ওলামা পরিষদের চেয়ারম্যান, ইসলামী গবেষণা ও ইফতা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং মন্ত্রী পর্যায়ের মর্যাদা ভোগ করছিলেন। শায়খ মুহাম্মদ বিন ইবরাহিম আল-শায়খ ও শেখ আবদুল আজিজ বিন বাযের পর তিনি দেশটির তৃতীয় গ্র্যান্ড মুফতি হিসেবে এই দায়িত্বে ছিলেন।
১৯৪৩ সালের ৩০ নভেম্বর মক্কায় জন্ম নেন শায়খ আবদুল আজিজ আল-শায়খ। তিনি আট বছর বয়সের আগেই বাবাকে হারান। শৈশবেই কোরআন হিফজ করেন এবং ২০ বছর বয়সে এক চোখের দৃষ্টি হারান।
এরপরও শরিয়াহ শিক্ষায় অগ্রসর হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন, রিয়াদের ইমাম তুর্কি বিন আব্দুল্লাহ মসজিদে ইমামতি ও জুমার খুতবা দিতেন। আরাফাতের নামাজের স্থান ঐতিহাসিক নামিরাহ মসজিদেরও অন্যতম খতিব ছিলেন তিনি।
মুসলিম ওয়ার্ল্ড লীগের সাবেক মহাসচিব আব্দুল্লাহ ওমর নাসিফ
সৌদি আরবের প্রখ্যাত আলেম ও মুসলিম ওয়ার্ল্ড লীগের (এমডব্লিউএল) সাবেক মহাসচিব আব্দুল্লাহ ওমর নাসিফ ইন্তেকাল করেন ১৩ অক্টোবর। তিনি ৮৬ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
আব্দুল্লাহ ওমর নাসিফ জেদ্দার কিং আবদুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ, আন্তর্জাতিক ইসলামি রিলিফ অর্গানাইজেশন, ওয়ার্ল্ড মুসলিম কংগ্রেস এবং আন্তর্জাতিক ইসলামী দাওয়াহ ও রিলিফ কাউন্সিলের মহাসচিব হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বিশ্ব স্কাউট কমিটি এবং মুসলিম স্কাউটসের আন্তর্জাতিক ইউনিয়নের নেতৃত্বে ছিলেন।
১৯৯১ সালে ইসলামী শিক্ষা, নেতৃত্ব ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় অবদানের জন্য তিনি কিং ফয়সাল পুরস্কার লাভ করেন।
তিনি ১৯৮৩ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত মুসলিম ওয়ার্ল্ড লীগে সৌদি আরবের প্রতিনিধি ছিলেন এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ইসলামী বিষয় ও আন্তধর্মীয় সংলাপকে এগিয়ে এনেছেন। শুরা কাউন্সিলের উপ-সভাপতি হিসেবে তিনি জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রে নিউ মেক্সিকোতে ‘দার আল-ইসলাম’, শিকাগোর ইসলামিক কলেজ এবং কেমব্রিজের ইসলামিক অ্যাকাডেমির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। পাকিস্তানের ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় ও নাইজারের ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পরিষদের সভাপতিও ছিলেন।
তিনি ১৯৩৯ সালে জেদ্দায় জন্মগ্রহণ করেন। কিং সৌদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন এবং পরে লন্ডন ও আমেরিকার ভূতত্ত্ব সমিতির ফেলো হন।
বিশ্বখ্যাত কোরআন গবেষক ড. জাগলুল নাজ্জার
বিশ্ববিখ্যাত কোরআন গবেষক, ভূতত্ত্ববিদ ও ইসলামি পণ্ডিত মিসরের ড. জাগলুল নাজ্জার ইন্তেকাল করেন ৯ নভেম্বর (রোববার)। জর্ডানের রাজধানী আম্মানে ৯২ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন তিনি।
ড. জাগলুল নাজ্জার ১৯৩৩ সালের ১৭ নভেম্বর মিসরে জন্মগ্রহণ করেন। ভূতত্ত্ববিদ হওয়া সত্ত্বেও কোরআনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা এবং মহাজাগতিক আয়াতের তাফসিরের মাধ্যমে তিনি বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেন। তার রচিত ‘তফসিরুল আয়াত আল-কাওনিয়্যা’ গ্রন্থটি কোরআনের আয়াতসমূহের আধুনিক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা উপস্থাপনের জন্য বিশ্বজুড়ে সমাদৃত।
তিনি কায়রোর ইসলামিক বিষয়ক সুপ্রিম কাউন্সিলের ‘কমিটি অন সায়েন্টিফিক কনসেপ্টস ইন দ্য হোলি কোরআন’ এর চেয়ারম্যান হিসেবে দীর্ঘকাল দায়িত্ব পালন করেছেন। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার পাশাপাশি ইসলামি জ্ঞানের প্রসারে তিনি অসংখ্য সেমিনার, প্রবন্ধ ও আন্তর্জাতিক বক্তৃতার মাধ্যমে মুসলিম ও বিজ্ঞানপন্থী গবেষকদের অনুপ্রাণিত করেছেন।
ড. জাগলুল নাজ্জারের গবেষণা ও লেখনী মুসলিম বিশ্বে কোরআন ও বিজ্ঞানের সমন্বয়ের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী প্রভাব রেখেছে। তার কাজ কোরআন-অনুসন্ধানী শিক্ষাবিদ ও বিজ্ঞানপন্থী মুসলিম গবেষকদের জন্য একটি অমর দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে, তিনি ২০০৭ সালে এমন কিছু ছবি ব্যবহার করে দাবি করেছিলেন যে নাসা চাঁদের দ্বিখণ্ডিত হওয়ার প্রমাণ খুঁজে পেয়েছে। যদিও পরে তা ভুল প্রমাণিত হয়েছিল।
জনপ্রিয় আলেম ও পীর জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি
নকশবন্দি তরিকার খ্যাতিমান আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব ও পাকিস্তানের জনপ্রিয় আলেম পীর মাওলানা জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ইন্তেকাল করেন ১৪ ডিসেম্বর।
পীর মাওলানা জুলফিকার আহমদ নকশবন্দির সঙ্গে দেশ-বিদেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের আধ্যাত্মিক সম্পর্ক ছিল। তাদের মধ্যে পাকিস্তানের প্রভাবশালী রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতা, জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমানও রয়েছেন। বাংলাদেশেও তার ভক্ত ও শুভাকাঙ্খী রয়েছেন। বাংলা ভাষায় তার অসংখ্য গ্রন্থ অনুবাদ করা হয়েছে।
তিনি ১৯৫৩ সালের ১ এপ্রিল পাকিস্তানের ঝং শহরে জন্মগ্রহণ করেন। জীবনের পুরো সময় তিনি ইসলাম প্রচার ও প্রসারে নিবেদিত ছিলেন। বিশেষভাবে তাসাউফ, শরিয়ত ও সুলুকের শিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়া এবং মানুষকে দ্বীনের প্রকৃত বার্তার সঙ্গে পরিচিত করানো ছিল তার জীবনের মূল লক্ষ্য।
তার চিন্তাধারা, বয়ান, গ্রন্থ ও আধ্যাত্মিক সাধনা অসংখ্য মানুষের জীবনে হেদায়াত ও আলোর পথ দেখিয়েছে। তার ইন্তেকালে ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক অঙ্গনে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মসজিদে নববীর ২৫ বছরের মুয়াজ্জিন শায়খ ফয়সাল নোমান
মসজিদে নববীর প্রবীণ মুয়াজ্জিন শায়খ ফয়সাল বিন আবদুল মালিক নোমান ইন্তেকাল করেন ২৩ ডিসেম্বর। দীর্ঘ কর্মজীবনে শায়খ ফয়সাল বিন আবদুল মালিক নোমান মসজিদে নববীর একাধিক সম্প্রসারণ কাজের সাক্ষী ছিলেন। প্রতি বছর রমজান মাসে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তারাবিহ ও কিয়ামুল লাইল পড়তে মসজিদে নববীতে সমাবেত হন লাখো মুসল্লি। লাখ লাখ মুসল্লিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক জামাতে আজানের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
২০০১ সালে মসজিদে নববীর মুয়াজ্জিন হিসেবে নিয়োগ পান শায়খ ফয়সাল বিন আবদুল মালিক নোমান। তার পরিবার কয়েক প্রজন্ম ধরে মসজিদে নববীতে আজান দেওয়ার সম্মান লাভ করেছে। তার দাদা ছিলেন মসজিদে নববীর মুয়াজ্জিন। তার পিতাও মাত্র চৌদ্দ বছর বয়সে এই দায়িত্বে নিযুক্ত হন এবং নব্বই বছরের বেশি বয়স পর্যন্ত দশকের পর দশক নিষ্ঠার সঙ্গে আজান দিয়ে গেছেন।
শায়খ ফয়সাল বিন আবদুল মালিক নোমান ২০০১ থেকে ২০২৫ (১৪২২ থেকে ১৪৪৭ হিজরি ) পর্যন্ত টানা ২৫ বছর ধরে আন্তরিকতা ও বিনয়ের সঙ্গে মসজিদে নববীর মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এনটি