দুবাইয়ে প্রদর্শিত হবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের অনুদিত কোরআন। ছবি : সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও তৃতীয় প্রেসিডেন্ট টমাস জেফারসন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ প্রদর্শনী ‘দুবাই এক্সপো ২০২০’ এর যুক্তরাষ্ট্রের প্যাভিলিয়নে  রাখা হবে তার মালিকানাধীন পবিত্র কোরআনের একটি কপি। দুবাই প্রদর্শনী বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের আরব আমিরাতে চলমান রয়েছে। 

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, দুই খণ্ডের পবিত্র কোরআনের অনুবাদটি ১৭৬৪ সালে প্রথমবারের মতো লন্ডনে মুদ্রিত হয়। পবিত্র কোরআনের ঐতিহাসিক এই ইংরেজি অনুবাদের ভূমিকা লিখেন জর্জ সেল। পবিত্র কোরআনের কপিটি লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের তথ্য মতে যুক্তরাষ্ট্রের আবিষ্কার, উদ্ভাবন ও সাংস্কৃতিক অর্জনের মধ্যে অন্যতম বলে বিবেচিত।

ধর্মীয় বৈচিত্রের প্রতি আমেরিকার শ্রদ্ধার প্রতীক

প্রথম বারের মতো কোরআনের কপিটি আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে আনা হয়। আমেরিকান মুসলিম অ্যান্ড মাল্টিফেইথ এম্পাওয়ারমেন্ট কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠাতা আনিলা আলি বলেন, ‘এটা আমার জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম একজনের মালিকানায় থাকা পবিত্র কোরআনের কপি বিশ্বের কাছে প্রদর্শিত হতে যাচ্ছে, যা ধর্মীয় বৈচিত্রের প্রতি আমেরিকার শ্রদ্ধার প্রতীক হিসেবে গণ্য হবে।’

‘দুবাই এক্সপো ২০২০’ আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত চললেও জেফারসনের মালিকানাধীন পবিত্র কোরআন শুধু প্রথম তিন মাস প্রদর্শনীতে থাকবে বলে জানা যায়। লাইব্রেরি কংগ্রেস জানায়, পবিত্র কোরআনের অনুবাদ কপির মতো ঐতিহাসিক বস্তু সাধারণত জাদুঘর কিংবা সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে রাখা হয়। তবে ব্যতিক্রম হিসেবে এবার তা দুবাই প্রদর্শনীতে আনা হয়।

যেসব পরিচয় ছিল টমাস জেফারসনের

টমাস জেফারসন ছিলেন রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, আইনজীবী, স্থপতি, সঙ্গীতজ্ঞ, দার্শনিক ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ১৭৯০-১৭৯৩ সালে দায়িত্ব পালন করেন।এরপর ১৮০১ থেকে ১৮০৯ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ভূ-রাজনৈতিক কারণে মুসলিম বিশ্বের প্রতি তীক্ষ্ণ বুদ্ধির অধিকারী জেফারসনের আগ্রহ ছিল প্রবল। ১৭৭৭ সালে নানা প্রচেষ্টায় তৎকালীন মরক্কো সর্বপ্রথম আমেরিকার স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়। মুসলিমদের ধর্মীয় অধিকার পূরণে নানাভাবে ভূমিকা রাখায় জেফারসন আমেরিকান মুসলিমদের কাছে স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব।

১৮০৫ সালে প্রথম বারবারি যুদ্ধের সময় জেফারসন একজন তিউনিসিয়ান দূতকে রমজান মাসে হোয়াইট হাউসে আপ্যায়ন করেছিলেন। এমনকি জেফারসনের মুসলিম অতিথিদের ধর্মীয় চাহিদা মেটাতে সূর্যাস্তের সময় ইফতার বা ডিনার অনুষ্ঠিত হত।