যেসব শিক্ষার্থী কোরআন হিফজ করেছে

রাজধানীর একটি ইংলিশ মিডিয়ামের ৩৮ শিক্ষার্থী পবিত্র কোরআন হিফজ সম্পন্ন করেছে। তাদের মধ্যে ২৮ জন ছেলে ও ১০ জন মেয়ে শিক্ষার্থী। শিক্ষকদের সার্বিক তত্ত্বাবধানেই তারা কোরআনের হিফজ সম্পন্ন করেছেন। ওই প্রতিষ্ঠানটির নাম ওয়েটন ইন্টারন্যাশনাল স্কুল।

এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৫ জন করোনা করোনাকালীন দুই বছরে হিফজ সম্পন্ন করেছে। এছাড়া অন্যদের দুই বছরের মতো সময় লেগেছে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর। আবার কেউ কেউ মাত্র এক বছরেও হিফজ করেছে। জানা গেছে, সাধারণত প্রতিদিন সকালে দুই ঘণ্টা, রমজান মাস ও শীতকালীন ছুটির সময়ে এই কোর্সের শিক্ষার্থীরা বেশি সময় হিফজে ব্যয় করে বলে জানান তিনি।

মোহাম্মদপুর লালমাটিয়ার এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি মূলত কেমব্রিজ পাঠক্রম অনুকরণ করে। তবে সেখানে আরবি ভাষা ও ইসলাম শিক্ষাও সব ক্লাসের আবশ্যিক বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত। প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিত ক্লাসের পাশাপাশি আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য কোরআন হিফজের ব্যবস্থা করেছে ।

ওয়েটন ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবদুল্লাহ জামান, ক্লাসের স্বাভাবিক পড়াশোনা অবশ্যই নিশ্চিতের পাশাপাশি কোরআন হিফজের এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। তাই প্রতিদিন ফজর নামাজের পর দুই ঘণ্টা এবং বার্ষিক বিভিন্ন ছুটির সময়কে কাজে লাগিয়েই কোরআন হিফজ শেষ করেছে।

সংবাদমাধ্যমকে স্কুলটির প্রধান শিক্ষক আরও জানান, ‘শিক্ষার্থীদের মধ্যে মৌলিক আরবি ও ইসলামী শিক্ষা প্রসারে আমাদের দেশে মসজিদভিত্তিক মক্তব ব্যবস্থা একসময় খুবই জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু কালপরিক্রমায় শহরকেন্দ্রিক উচ্চশিক্ষিত পরিবারগুলোতে আগের মতো এর গুরুত্ব এখন নেই। তবে সচেতন মুসলিম মা-বাবারা সব সময় সন্তানের ইসলামের মৌলিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে চান। তাই আমরা আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য সকাল ৬টা থেকে ৮টা পর্যন্ত কোরআন শিক্ষার ক্লাস চালু করি। নির্দিষ্ট সময় পর এই ক্লাসের হিফজে আগ্রহীদের জন্য হিফজ কোর্স চালু করা হয়।’

শিক্ষার্থীরা যেন উচ্চশিক্ষিত হয়েও ধর্মীয় মূল্যবোধ, সহনশীলতা ও পরিমিতিবোধ ধারণের পাশাপাশি সব শিক্ষার্থীর মধ্যে দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তৈরি হয়— সেই সংকল্পে নানা উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। গত ২০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবসের সুবর্ণ জয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু কর্নার চালু করা হয়। এই কর্নার থেকে শিক্ষার্থীরা মাত্র ১০ টাকায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা যেকোনো বই কিনতে পারবে।

স্কুলটির পরিচালক আনোয়ার হোসেন রয়েল রানা বলেন, ‘আমাদের সন্তানরা যেন দেশপ্রেমিক হয় এবং আন্তর্জাতিক মানের সুশিক্ষিত নাগরিক হয়, সে জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।’