এম্বেসিতে কথা বলার প্রতীকী ছবি

এক দেশের এ্যাম্বাসিতে আমার ইন্টারভিউ আছে। কিন্তু আমি যদি মিথ্যা না বলি— তাহলে সে দেশে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভবপর হবে না। তবে সে মিথ্যায় কারও কোনো ক্ষতি নেই; বরং এতে আমার উপকার রয়েছে।

যেমন- আমি বলব যে, আমার এক বন্ধু আমার দেশে আমার কাছে এসে বেড়িয়ে গেছে। এরপর সে আমাকে তার দেশে গিয়ে বেড়িয়ে আসার দাওয়াত দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে মূলত আমার কোনো বন্ধু নেই। কিন্তু আমি সে দেশে যেতে চাই। এ অবস্থায় মিথ্যা বলা কি আমার জন্য জায়েজ হবে? এ ভ্রমণের পর আমি যদি কোনো চাকরি লাভ করি, সেটা কি হারাম হবে?

এ প্রশ্নের উত্তর হলো- শরিয়তে মৌলিক বিধান হচ্ছে মিথ্যা বলা ও মিথ্যা কাজ করা হারাম, নিন্দনীয় এবং নিষিদ্ধ; তবে কিছু অবস্থায় ব্যতিক্রম। সেসব ব্যতিক্রম অবস্থার মধ্যে আপনার অবস্থাটি পড়ে না। কেননা আপনার অবস্থাটি অন্যের অধিকারের সাথে সম্পৃক্ত; সেটি হচ্ছে রাষ্ট্র। রাষ্ট্র যাদের প্রবেশের অনুমতি দেবে— তাদের ক্ষেত্রে কিছু শর্ত নির্ধারণ করেছে। তাই এই শর্তগুলোর ক্ষেত্রে মিথ্যা বলা ও ছল-চাতুরি করা নাজায়েজ। এটাই হলো মৌলিক বিধান। তবে ব্যতিক্রম অবস্থার কারণে কিছু মাসআলার ক্ষেত্রে শর্তসাপেক্ষে আলাদা ফতওয়া রয়েছে।

আরও পড়ুন : টাকার ব্যবসা করা জায়েজ কি?

নবী কারিম (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয় সত্য নেকির পথ দেখায়। নেকি জান্নাতের দিকে নিয়ে যায়। নিশ্চয় ব্যক্তি সত্য বলতে বলতে— এক পর্যায়ে অতিশয় সত্যবাদী হয়ে যায়। নিশ্চয় মিথ্যা পাপের পথ দেখায়। পাপ জাহান্নামে নিয়ে যায়। নিশ্চয় ব্যক্তি মিথ্যা বলতে বলতে এক পর্যায়ে তাকে আল্লাহ্‌র কাছে মিথ্যাবাদী হিসেবে লিপিবদ্ধ করা হয়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিদস : ৫৬২৯; সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪৭১৯)

অন্য হাদিসে নবী কারিম (সা.) বলেন, ‘প্রতারণা ও ধোঁকাবাজি জাহান্নামে।’ (সহিহুল জামি, হাদিস : ৬৭২৫)

দ্বিতীয়ত জেনে রাখা উচিত যে, কোনো ব্যক্তি যদি মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে কোনো দেশে প্রবেশ করার পর সেই দেশে কোনো বৈধ ও হালাল চাকুরি করে— তাহলে তার সে চাকরি করা হারাম হবে না। (যদি চাকরিদাতা এমন কোনো শর্ত না করে যে, সেই দেশে বৈধভাবে প্রবেশ করতে হবে। এমনটি শর্ত করে থাকলে তার সঙ্গে ধোঁকাবাজি করা ও মিথ্যা বলা হারাম এবং সেই চাকরি করাও হারাম হবে।)

আরও পড়ুন : ঘুষ দিতে বাধ্য হলে কি গুনাহ হবে?