হাত থেকে ফসকে যাওয়া ম্যাচে প্রাণ ফেরান সুনীল নারিন আর রিঙ্কু সিং। শেষ ওভারে জয়ের জন্য কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রয়োজন ২১ রান, বোলার মার্কাস স্টয়েনিস, স্ট্রাইক ব্যাটসনম্যান রিঙ্কু। স্টয়েনিসকে প্রথম বলে ৪, পরের দুই বলে টান দুই ৬, পরের বলে ২ নিয়ে ম্যাচ শুধু জমিয়েই তুললেন না, বরং নিজেদের পক্ষে নিয়ে নিলেন রিঙ্কু। শেষ ২ বলে প্রয়োজন ৩ রান। এবার ভুল করে বসলেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান, তার উড়িয়ে মারা বল দৌড়ে এসে দর্শনীয় ক্যাচে এক হাতে তালুবন্দি করলেন এভিন লুইস।

ম্যাচ টাইব্রেকারে নিতে শেষ বলে অন্তত ২ রান করতে হতো কেকেআরকে। স্টয়েনিসের ইয়র্কার স্টাম্প ভেঙে দিল নতুন ব্যাটসম্যান উমেশ যাদবের। কুইন্টন ডি ককের ব্যাটিং তাণ্ডবে ২১১ রানের লক্ষ্য দিয়ে ২ রানের নাটকীয় জয়ে প্লে-অফে লখনৌ সুপার জায়ান্ট। এই হারে এবারের আইপিএল থেকে ছিটকে গেল শাহরুখ খানের নাইট রাইডার্স। ফলে ঘরে ফেরা হলো না তাদের। ম্যাচটি জিতলে প্লে-অফের দৌড়ে থাকত কেকেআর। সেক্ষেত্রে নিজেদের ঘরে মাঠ ইডেন গার্ডেন্সে খেলার সুযোগ ছিল তাদের।

ডিওয়াই পাতিল স্পোর্টস একাডেমি মাঠে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করে ইতিহাস তৈরি করে ওপেনিং জুটিতে ২১০ রান তোলে লখনৌ। গোটা ইনিংসে একটি উইকেটও তারা হারায়নি তারা। উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ডি কক ৭০ বলে ১৪০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। ১০টি চার এবং ১০টি ছয় দিয়ে নিজের ইনিংস সাজান তিনি। গড়েন একাধিক রেকর্ড। আইপিএলের চলতি মৌসুমে ডি ককের এই ১৪০ রান সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস। সঙ্গে আইপিএল ইতিহাসে উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান হিসেবে সর্বোচ্চ সংগ্রহ।

কম যাননি অধিনায়ক কে এল রাহুল। খেলেন ৫১ বলে ৬৮ রানের ইনিংস। তার ইনিংসে ছিল ৩টি চার এবং ৪টি ছয়। দুইজনের এই ২১০ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি আইপিএল ইতিহাসে ওপেনিং সর্বোচ্চ। এর আগে ওপেনিং জুটির রেকর্ড ছিল জনি বেয়ারস্টো ও ডেভিড ওয়ার্নারের ১৮৫ রানের। সব মিলিয়ে আইপিএলের যেকোনো উইকেট জুটিতে তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড জুটি।

২১১ রানের পাহাড়সমান লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই একের পর এক উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে কলকাতা। প্রথম ওভারেই রানের খাতা না খুলে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার। অজিঙ্ক রাহানের পরিবর্তে এই ম্যাচে সুযোগ পাওয়া অভিজিৎ তোমার ফেরেন ৪ রানে। ৯ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ধুকতে থাকা কেকেআরকে অক্সিজেন দেন নিতীশ রানা এবং শ্রেয়স আইয়ার। রানা ২২ বলে ৪২ রান করেন গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে। ২৯ বলে ৫০ রানের ইনিংস খেলে প্যাভিলিয়নে ফেরেন শ্রেয়স আইয়ার। 

স্যাম বিলিংস করেন ৩৬ রান। তবে, দলের অত্যন্ত প্রয়োজনের সময়ে এই ম্যাচে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি আন্দ্রে রাসেল, ১১ বল খেলে ৫ রান করেন তিনি। ১৬.৪ ওভারে ১৫০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধুকতে থাকা কেকেআরকে খাদের কিনার থেকে উঠে আসার স্বপ্ন দেখান রিঙ্কু আর নারিন। ১৫ বলে ৪০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন রিঙ্কু। ৭ বলে ২১ রানে অপরাজিত থাকেন নারিন।

এই জয়ে লিগ পর্বের ১৪ ম্যাচ থেকে ১৮ পয়েন্ট সংগ্রহ করে প্রলে-অফ নিশ্চিত করেছে লখনৌ। সমান ম্যাচ থেকে ১২ পয়েন্ট সংগ্রহ করে আইপিএলের এবারের আসর থেকে ছিটকে গেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স।

টিআইএস