তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে যেন ভিন্ন এক বাংলাদেশ দলকে দেখা গেল। অন্য দুই ফরম্যাট তুলনায় ৫০ ওভারের সংস্করণে টাইগাররা কেন দাপুটে, তার প্রমাণ আরও একবার দিয়েছে লাল-সবুজের বোলিং বিভাগ। বৃষ্টির কারণে ৪১ ওভারে নেমে আসে ম্যাচে ক্যারিবীয়দের থামিয়েছে মাত্র ১৪৯ রানে। বোলাররা তাদের কাজটা জুতসইভাবে করেছে। এবারের উইন্ডিজ সফরে প্রথম জয় পেতে ব্যাটসম্যানদের করতে হবে ১৫০ রান।

টেস্টের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরে রীতিমত কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ দল। কিন্তু এবার ফরম্যাটটা যে ওয়ানডে, যে ফরম্যাটে ক্রিকেট বিশ্বে নিজেদের জায়গা প্রতিষ্ঠিত করেছে টাইগাররা। সে ফরম্যাটে ফিরেই দাপট তামিম ইকবালের দলের। তবে ক্যারিবীয়দের এই অল্প রানে বেধে রাখতে অধিনায়কের ভূমিকা প্রশংসনীয়। আগ্রাসী মনোভাবে বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্তে বোলিং আর ফিল্ডিং পরিবর্তন করেছেন বেশ কৌশলে।

বাঁহাতি স্পিনার সাকিব আল হাসান না থাকায় যে শূন্যতা তৈরি হবে বলে ভাবা হচ্ছিল, বল হাতে তার পুরোটা পুষিয়ে দিয়েছেন ওয়ানডে অভিষেক ক্যাপ পাওয়া নাসুম আহমেদ। উইকেটের দেখা না পেলেও নিজের কোটার ৮ ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়েছেন তিনি, যেখানে ৩ মেডেনসহ ডট বল দিয়েছেন ৪০টি। বল হাতে বাজিমাত করেছেন পেসার শরিফুল ইসলাম। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৩৪ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। এছাড়া মেহেদী হাসান মিরাজ ৩৬ রান দিয়ে পান ৩ উইকেট।

টস জিতে ফিল্ডিং করতে নেমে প্রথম পাওয়ার প্লের ৮ ওভারে দুর্দান্ত বোলিং করে বাংলাদেশ। মাত্র ২৬ রান দেয় তারা। স্পিনার নাসুম ছিলেন ধ্রুপদী। আঁটসাঁট বোলিংয়ে রানের চাকা থামিয়ে রাখেন। পাওয়ার প্লেতে ৪৮ বলের মধ্যে ৩৯ বলই ডট দেয় বাংলাদেশ। যেখানে একমাত্র সাফল্য ওপেনার শাই হোপের উইকেট। ইনিংসের দ্বিতীয় মুস্তাফিজুর রহমানের বলে ইনফর্ম ব্যাটসম্যান হোপ বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন। ডানহাতি ব্যাটসম্যান খুলতে পারেননি রানের খাতা।

দ্বিতীয় পাওয়ার প্লের শুরুতে আরেক ইনফর্ম ওপেনার কাইল মায়ার্সকে ফেরান মিরাজ। অফ স্পিনারের তার অ্যাঙ্গেল ডেলিভারী পিচ করে হাল্কা বাক খেয়ে স্টাম্পে আঘাত করে। ২৭ বলে ১০ রান করে ফেরেন মায়ার্স। ৩২ রানে ২ উইকেট হারানোর পর খানিক প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন শামার ব্রুকস ও ব্র‍্যান্ডন কিং। লাভ হয়নি তাতে। ইনিংসের ২১তম ওভারে জোড়া আঘাতে দুইজনকে ফেরান শরিফুল। কিং ৮ রান করেন, ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৩ রান আসে ব্রুকসের ব্যাট থেকে।

সুবিধা করতে পারেননি অধিনায়ক নিকোলাস পুরান আর রভম্যান পাওয়েল। দুইজনকেই ফেরান কিরাজ। পুরান করেন ১৮ রান, পাওয়েল লেগবিফোরের ফাঁদে পড়েন ৯ রান করেন এরপর ৩ রানে থাকা আকিল হোসাইন রান আউটে কাটা পড়লে একশর কোটা ছোঁয়ার আগেই ৭ উইকেট হারিয়ে বসে স্বাগতিক শিবির।

পরেও রোমারিও শেইফার্ডের ১৫ রানের সঙ্গে শেষ উইকেট সিলস আর ফিলিপের ৩৯ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটিতে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রানের সংগ্রহ পায় ক্যারিবীয়রা। যেখানে ফিলিপ ২১ আর সিলস ১৬ রান করেন। ফলে জয়ের জন্য বাংলাদেশ দলের প্রয়োজন ১৫০ রান। বাংলাদেশ দল অবশ্য আরো আগেই আটকাতে পারতো প্রতিপক্ষকে। একাধিক ক্যাচ ছেড়েছেন সফরকারী ফিল্ডাররা।

টিআইএস/ওএফ