জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১৩১ রানের স্বল্প পুঁজির লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের ইনিংস থেমেছে ১২৯ রানে। ফলে ১ রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো বাবর আজমদের।

ব্যাট করতে নেমে আজ শুরুতেই অধিনায়ক বাবর আজমকে হারিয়ে হোঁচট খায় পাকিস্তান। এরপর দলীয় ২৩ রানে বিদায় নেন ফর্মে থাকা মোহাম্মদ রেজওয়ানও। রান তোলার গতিও তখন অনেক কম। ৫ ওভারে তারা কেবল ২৩ রান তুলেছে।

খানিকবাদেই ইফতিখারকে হারিয়ে আরও বিপদে পড়ে পাকিস্তান। অবশ্য এক প্রান্তে দেখে শুনে খেলছিলেন শান মাসুদ।  

দ্রুত তিন উইকেট যাওয়ার পর ইনিংস মেরামতের কাজ শুরু করেন শাদাব খান ও মাসুদ। দলকে জয়ের বন্দরে ভেড়াতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন এই দুই ব্যাটার। তবে বড় আঘাত আসে ১৩তম ওভারে সিকান্দার রাজা বোলিংয়ে আসার পর। এক ওভারে এই অলরাউন্ডার ফেরান শাদাব খান ও হায়দার আলীকে। 

তখন থেকে ম্যাচের গতিপথ পুরোপুরি বদলাতে থাকে। বেড়ে যায় জিম্বাবুয়ের জয়ের সম্ভাবনা, আর পাকিস্তানের হারের।

ব্যক্তিগত ৪৪ রানে সিকান্দার রাজার বলে কাটা পড়েন শান মাসুদ। পাকিস্তান হারায় ৬ষ্ঠ উইকেট। 

ম্যাচ তখনো দুলছিল পেন্ডুলামের মতো। পাকিস্তানের হয়ে এরপর চেষ্টা চালাতে থাকেন মোহাম্মদ নেওয়াজ এবং মোহাম্মদ ওয়াসিম। তবে ব্যাটে-বলে ভালো সংযোগ ঘটাতে পারছিলেন না কেউই। ফলে লো স্কোরিং এই ম্যাচেও বলের চেয়ে আস্কিং রানরেট বেড়ে যায় পাকিস্তানের।

শেষ দুই ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন হয় ২২ রান।

১৯তম ওভারে নাগারাভার লো-ফুলটস বলে ডিপ ফাইন লেগ দিয়ে ৬ মেরে পাকিস্তানকে ম্যাচে রাখেন নেওয়াজ। ওই ওভারে আসে মোট ১১ রান।

শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে ১১ রানের।

উত্তেজনার পারদ বেড়ে যায় দুই ‍শিবিরেই। শেষ হাসি হাসবে কে? এ অবস্থায় শেষ ওভারের প্রথম বলে নেওয়াজ নেন ৩ রান। পরের বলেই ওয়াসিমের চার। ২ বলে চলে আসে ৭ রান। ম্যাচ কি পাকিস্তান জিতে যাবে?

সমীকরণ দাঁড়ায় ৪ বলে ৪ রানের। তৃতীয় বলে সিঙ্গেল নেন ওয়াসিম।

৩ বলে দরকার তিন রান। ৪র্থ বলে কোনো রান নিতে পারেননি নেওয়াজ। সমীকরণ হয়ে যায় ২ বলে ৩।

৫ম বলে মিড অফে ক্যাচ তুলে দিয়ে আউট হয়ে যান নেওয়াজ। জিম্বাবুয়ে পেয়ে যায় গুরুত্বপূর্ণ আরও ১টি ডট। তখন উইকেটের চেয়ে ডট বল বেশি দরকার জিম্বাবুয়ের!

ম্যাচ গড়ায় শেষ বলে। পাকিস্তানের দরকার ৩ রান। ব্যাট হাতে বোলার শাহীন আফ্রিদি!

স্ট্রেইট ড্রাইভে বাউন্ডারি হাঁকাতে চাইলেন, টাইমিং হয়নি ঠিকমতো। বল ছিল ফিল্ডারের নাগালে। দৌড়ে ২ রান নেওয়ার চেষ্টা করলেও নিতে পারেন ১ রান। আরেক রান হয়নি, রান আউট হয়ে যান আফ্রিদি। 

১ রানে জিতে গেল জিম্বাবুয়ে।

এর আগে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন।

তাদের ব্যাটিংও অবশ্য প্রত্যাশামতো হয়নি।

দুই ওপেনার ক্রিজে থিতু হওয়ার পরও ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হন। ওয়েসলি মাধেবেরে ১৭ রানে এবং ক্রেইগ আরভিন ফিরে যান ১৯ রান করে। পরবর্তী সময়ে মিল্টন শুম্বা, সিকান্দার রাজা, রেজিস চাকাভা কেউই দুই অংকের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি।

শন উইলিয়ামস এক প্রান্ত আগলে রেখে লড়াই চালিয়ে যান। তিনি ফেরেন ৩১ রান করে।

শেষ দিকে ব্রাড ইভান্সের ১৫ বলে ১৯ রান আর রায়ান বার্ল-এর ১০ রানে ভর করে জিম্বাবুয়ে সংগ্রহ করে ৮ উইকেটে ১৩০ রান।

ম্যাচ শেষে অবশ্য এই রানই যথেষ্ট হয়ে গেছে জয়ের জন্য।

ম্যাচসেরা হয়েছেন জিম্বাবুয়ে অলরাউন্ডার সিকান্দার রাজা।

এসএইচ/এসএম