এখন কাজী সালাউদ্দিনকে সবাই চেনেন ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি হিসেবেই। ফেডারেশনের সভাপতির চেয়ে সালাউদ্দিনের বড় পরিচয় তিনি বাংলাদেশ ফুটবলের অন্যতম সেরা তারকা। কাজী সালাউদ্দিন '৭২ সাল থেকে ঢাকা আবাহনীর হয়ে খেলেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন ক্রীড়াপ্রেমী। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে এই স্ট্রাইকারের বেশ কয়েকবার দেখা সাক্ষাৎ হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ কামাল ছিলেন তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। 

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন বাফুফে অনেকটা ঘটা করেই আলোচনা অনুষ্ঠান করে। বুধবারও বাফুফে প্রাঙ্গনে শেখ মুজিবের জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা হয়। শেখ মুজিব বিশ্ব অঙ্গনে কতটা সমাদৃত ও জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন এর একটি ঘটনা বললেন সালাউদ্দিন, ‘১৯৭৩-৭৪ সালের দিকে আমি জার্মানির হামবুর্গ থেকে কোপেনহেগেন যাচ্ছিলাম ট্রেনে। ট্রেন যখন জার্মানি বর্ডার ক্রস করল। ইমিগ্রেশন অফিসার উঠে যাত্রীদের পাসপোর্ট চেক করছিল। আমার বাংলাদেশের পাসপোর্ট দেখে ইমিগ্রেশন অফিসার অনেক প্রশ্ন করছিল, ‘বাংলাদেশ! কোথায়, কখন?’ 

কাজী সালাউদ্দিন খানিকটা চিন্তিত হয়ে পড়েন। ইমিগ্রেশন অফিসার নাকি আবার তাকে ট্রেন থেকে না নামিয়ে দেয়। সালাউদ্দিনের বিপরীত পাশে বসা ছিলেন ডাচ এক ভদ্রলোক। তিনি বলছিলেন, ‘আপনি কি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের দেশ থেকে এসেছেন।’ এটি শোনার পরই ইমিগ্রেশন অফিসার বলে উঠেন, হ্যাঁ হ্যাঁ আমি তাকে চিনি। এরপর আর সালাউদ্দিনকে কোনো প্রশ্ন করা হয়নি। 

সালাউদ্দিন যেন ৪৭ বছর আগেই ফিরে গেলেন, ‘সত্যি এই ঘটনা বলতে গিয়ে মনে হচ্ছে আমি যেন ৭৩ এর সেই মুহূর্তে চলে গিয়েছি। নিজেকে তখন খুবই গর্বিত লাগছিল যে বঙ্গবন্ধুর এত জনপ্রিয়তা। আমি তার সাথে কয়েকবার সাক্ষাতের সৌভাগ্য পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুর পুরো পরিবারটাই ক্রীড়া পরিবার। ক্রীড়া তাদের পরিবারের রক্তে।’

কাজী সালাউদ্দিনকে বাংলাদেশের সেরা ক্রীড়াবিদদের অন্যতম বলা হয়। বাফুফের পাশাপাশি সাফ, এএফসি, ফিফাতেও পদচারণা রয়েছে সালাউদ্দিনের। এ সবকিছুর জন্য বঙ্গবন্ধুকে কৃতিত্ব দিলেন বাফুফে সভাপতি, ‘এসবের কোনো কিছুই হতো না। যদি বঙ্গবন্ধু নেতৃত্ব না দিয়ে দেশ স্বাধীন না করতেন।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজে ফুটবল খেলতেন। ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সমর্থক ছিলেন। কিন্তু সেই ক্লাব আজ অনেক দুদর্শার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ ব্যক্তি হয়ে বঙ্গবন্ধুর ক্লাবের জন্য কিছু করা যায় কি না এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন হলে সালাউদ্দিন উত্তর না দিয়ে বলেন, ‘উদযাপনের দিনে এই বিষয়ে আলোচনা না করাই ভালো।’ 

মুজিববর্ষে বাংলাদেশ ফুটবল দল নেপালে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট খেলতে যাচ্ছে। সেখান থেকে ভালো ফল আসলে মুজিববর্ষের জন্য দারুণ উপহার হবে বলে মনে করেন কাজী সালাউদ্দিন। বাফুফে ভবনে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষ্যে কেক কাটার সময় বাফুফে কর্মকর্তারা ছাড়াও নারী ফুটবলাররা উপস্থিত ছিলেন। 

এজেড/এটি/এমএইচ