পাকিস্তান ক্রিকেট আর চাঞ্চল্যকর ঘটনা যেন একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। কয়েকদিন পরপরই দেশটির ক্রিকেটাররা বিস্ফোরক সব মন্তব্য নিয়ে হাজির হন। কিন্তু এবারের ঘটনা সম্ভবত সব কিছুকে ছাড়িয়ে যাবে! পাকিস্তান ক্রিকেটে বেশ সম্ভাবনাময়ী ওপেনার ছিলেন ইমরান নাজির। তবে মাত্র ৩২ বছর বয়সে তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার থেমে যায়। এ নিয়ে ক্রিকেট ভক্তদের প্রশ্ন থাকলেও, কখনও কথা বলেননি ইমরান। অবশেষে তিনি একটি গুরুতর অভিযোগ নিয়ে হাজির হয়েছেন।

সম্প্রতি দেশটির একটি পডকাস্ট অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন ইমরান নাজির। সেখানে তিনি বলেন, ‌‌‘আমি যখন ক্যারিয়ারের চূড়ান্ত সময়ে অবস্থান করছি, তখন আমাকে বিষপ্রয়োগ করা হয়েছিল। তবে সেটি আমি পরে জানতে পারি। এমআরআই’সহ কয়েকটি পরীক্ষা করে ধরা পড়ে যে, আমার শরীরে মারকারি জাতীয় বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। যা ধীরে ধীরে হাড়ের ক্ষতি করে এবং মানুষকে পক্ষাগাতগ্রস্ত করে ফেলে।’

বিষপ্রয়োগের বিষয়টি জানার পর ভয় পেয়ে যান ইমরান। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রায় ১০ বছর ধরে আমার শরীরে হাড়ের বিভিন্ন সংযোগ স্থলে ক্ষতি হচ্ছিল। ৬-৭ বছর আগে থেকে যা বাড়তে থাকে। সেই সময় আমি দোয়া করছিলাম, দয়া করে আমাকে পুরোদমে বিছানায় শুইয়ে দেবেন না। অবশ্য ভাগ্য ভালো যে আমাকে সেটা পোহাতে হয়নি।’

তার কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সাবেক পাকিস্তানি অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি। পাকিস্তানি মুদ্রায় তিনি ৪০-৫০ লাখ টাকা ব্যয় করেন বলে জানিয়েছেন ইমরান, ‘ চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমার জীবনের সব সঞ্চয় শেষ হয়ে গিয়েছিল। সেই সময় আফ্রিদি আমার পাশে দাঁড়ান। তিনি একদিনের মধ্যে আমার চিকিৎসককে টাকা পাঠান। একইসঙ্গে ডাক্তারকে বলে দেন যে যত খরচই হওয়ার হোক, আমি যেন সুস্থ হয়ে উঠি। আমার জন্য সে ৪০-৫০ লাখ টাকা খরচ করে। যত টাকা প্রয়োজন ছিল চিকিৎসক ততই চেয়েছিলেন, সেজন্য তাদের ধন্যবাদ।’

তবে এমন বিপন্ন হয়েও তাকে বিষপ্রয়োগকারীর ক্ষতি চান না নাজির। কষ্ট সহ্য করার পরও তার মন্তব্য, যে তাকে বিষ দিয়েছে, সে অন্য কোনো হত্যা-ইচ্ছুক ব্যক্তির চেয়ে অন্তত ভালো। সে তাকে হত্যাকারীর হাত থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছে।

১৯৯৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের জার্সিতে খেলেছেন নাজির। ১৪ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি ৮টি টেস্ট এবং ৭৯টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন। টেস্টে ৪২৭ রান এবং ওয়ানডেতে তার রান ১৮৯৫। এছাড়া ২৫টি টি-টোয়েন্টিতে তিনি ৫০০ রান করেন।

এএইচএস