দেশের ক্রীড়াঙ্গনে ব্যর্থতার ভিড়ে সাফল্য আছে হাতেগোনা। আর সেসবের গর্বিত অংশীদার এ দেশের নারী ক্রীড়াবিদরা। রক্ষণশীল সমাজের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে এসে নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে ক্রীড়াঙ্গনে একের পর এক সাফল্যের ইতিহাস রচনা করে চলেছেন নারীরা। অদম্য মেয়েদের সাফল্যে স্বগর্বে উড়ছে লাল-সবুজের পতাকা, সমৃদ্ধ হচ্ছে ক্রীড়াঙ্গনের ইতিহাস।

দেশের ক্রিকেটে প্রথম আন্তর্জাতিক সাফল্য আসে নারী ক্রিকেট দলের হাত ধরে। ২০১৮ সালে শক্তিশালী ভারতকে হারিয়ে সালমা-জাহানারারা এশিয়া কাপের শিরোপা জিতে নেয়। গেল বছরে যখন বিশ্বকাপের হতাশায় দেশের ক্রিকেট ভক্তদের মন খারাপ। তখনও ঘরে-বাইরে বাংলাদেশকে ভাল কিছু দেওয়ার চেষ্টা করে গেছেন নিগার সুলতানা জ্যোতিরা। নাহিদা আক্তার পেয়েছেন আইসিসির মাসসেরার শ্রেষ্ঠত্ব।

সব হারানোর সেই সময়ে বাংলাদেশ নারী দলের সেই সাফল্যই টাইগার ক্রিকেটকে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রেরণা দিয়েছে। আজ বিশ্ব নারী দিবস। আর এই দিবস নিয়ে ঢাকা পোস্টের প্রতিবেদক সাকিব শাওনের সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশ নারী দলের তারকা ক্রিকেটার নাহিদা আক্তার। 

ঢাকা পোস্ট : নারী দিবস আজ। দিনটিকে কিভাবে দেখছেন?

নাহিদা আক্তার : আসলে দিনটা আমাদের জন্য তো খুবই স্পেশাল। শুধু ক্রীড়াঙ্গনে না সবদিক থেকেই আমরা এখন এগিয়ে। রাজনীতি বলেন স্পোর্টস বলেন বা পড়াশোনার কথা বলেন সবদিক থেকেই এখন এগিয়ে থাকছে মেয়েরা। আমাদের স্পোর্টসের দিক থেকে প্রতিটা ইভেন্টে কিন্তু মেয়েরা ভালো করছে। সেই হিসেবে গর্বের যে আমরা খুবই ভালো করছি। 

ঢাকা পোস্ট : একটা সময় অনেক প্রতিবন্ধকতা পার করে আজকের এই পর্যায়ে এসেছেন আপনারা। এখনো সেরকম প্রতিবন্ধকতা আছে বলে মনে করেন কি? 

নাহিদা আক্তার : অবশ্যই। দেখেন মেয়েদের তো সবসময় সব জায়গায় যাওয়া যায় না। ছেলেদের ক্ষেত্রে সবকিছু ওপেন চলাফেরা করতে পারে। মেয়েরা একটু পিছিয়ে, এখনো সমাজের অনেক গ্রাম অঞ্চলে দেখবেন মেয়েরা চাইলে সবজায়গায় যেতে পারে না। চাইলে সবকিছু করতে পারে না, সে দিক থেকে বলব ডে বাই ডে খেলাধুলোর দিকে উন্নতি হয়েছে। আগে মেয়েদের খুঁজতে হতো এখন খেলতে আসছে। পরিবার থেকে সাপোর্ট করছে আগের থেকে বেটার দিকে এসেছে।  

ঢাকা পোস্ট : সামাজিক বা পারিবারিক বাধা আগের থেকে কমেছে কি না...

নাহিদা আক্তার : অবশ্যই অনেক কমেছে। আমাদের পরিবার থেকে সবাই সাপোর্ট করছে খেলার জন্য। খেলাধুলার সাথে থাকলে কিন্তু অনেক খারাপ কাজ থেকে আমরা দূরে থাকতে পারি। সেদিক থেকে বলব সমাজ ভালো চোখে দেখছে, পুরোপুরি বলব না যে দেখছে। আগের দিক থেকে ভালো। মেয়েরা এখন লাকি, যে কারণে খেলাধুলায় এগিয়ে আসছে। 

ঢাকা পোস্ট : নতুন যেসব নারী খেলোয়াড়রা আসছে বা আসতে চায় তাদের প্রতি আপনার বার্তা কি থাকবে...

নাহিদা আক্তার : আমার একটাই বার্তা যদি ইচ্ছা থাকে যদি মনের মধ্যে ইচ্ছা থাকে আমি খেলাধুলা করতে চাই তাহলে ইচ্ছাকেই প্রাধান্য দেওয়া উচিত। ইচ্ছা বা চেষ্টা থাকলে সব সম্ভব। এখানে ছেলে মেয়ে বলে কিছু নেই, আমার কাছে ম্যাটার করে ইচ্ছাটা কতটুকু। আমি বলব নতুন যারা আসতে চাই তারা যেন তাদের ইচ্ছাকে বলে পরিবারের কাছে যে আমি খেলতে চাই, এগোতে চাই। বর্তমানে নারীরা কিন্তু অনেক ভালো সাফল্য আনছে। বিগত কয়েক বছরে ক্রিকেট, ফুটবল, সুইমিং সুটিং বলেন সব ইভেন্টে আমরা এখন ভালো করছি।

ঢাকা পোস্ট : আপনিও এখন তারকা ক্রিকেটার। আপনার আইডল কে?
  
নাহিদা আক্তার : অবশ্যই আমার আইডল আমার মা। কেননা ছোট থেকে যখন বড় হয়েছি আমি আমার মাকে দেখেছি সে অনেক স্ট্রাগল করেছে কষ্ট করেছে। ওখান থেকে আমার জেদ বলেন আগ্রহ বলেন যে না আমি চেষ্টা করব, চেষ্টা করলে সবকিছ করা সম্ভব। তো ওদিক থেকে বলব যে মা আমার আইডল।

এসএইচ/এফআই