দলের বাকিরা ছুটিতে হোটেলে, সাকিব চলে এলেন মাঠে
আন্তর্জাতিক সিরিজের সূচি থাকলেই ব্যস্ত হয়ে যায় মিরপুর। চারদিকে উৎসবের আমেজ। মাঠকর্মীদের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি থেকে স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের রং-তুলির কাজ, সম্প্রচারের দায়িত্বে থাকা টেলিভিশন ক্রুদের ক্যামেরাগুলো তৈরি কিনা দেখে নেওয়া, সবই চোখে পড়তে বাধ্য। মূল সিরিজের আগে বাংলাদেশ দলের অনুশীলন কাভার করতে আসা সাংবাদিকদেরও বেশ ব্যস্ত সময় কাটে।
২৩ মে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচের আগে আজ (শুক্রবার) অন্যান্য কর্মব্যস্ততা থাকলেও স্বাগতিক দলের অনুশীলন ছিল না। বলা যায় ছুটির দিন। জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকা দলের সদস্যরা এদিন হোটেলেই কাটিয়েছেন। তবে জুমার নামাজের পর শের-ই-বাংলার মূল মাঠে এসে হাজির সাকিব আল হাসান। সঙ্গে হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো ও সতীর্থ মুশফিকুর রহিম। বাকিরা যখন ছুটির আমেজে, তখন নিজেকে প্রস্তুত করতে ছুটি বাতিল করেই অনুশীলনে এসেছেন সাকিব।
বিজ্ঞাপন
এক বছরের নিষেধাজ্ঞার পর চলতি বছরের শুরুতে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপান সাকিব। ফিরেই বাজিমাত। ওয়েস্ট ইন্ডিকের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে খেলতে নেমে ইনজুরিতে পড়ার আগে ওয়ানডে সিরিজে দুর্দান্ত পারফর্ম করে সিরিজ সেরার পুরস্কার নিজের করে নেন এই বাঁহাতি অলরাউন্ডার।
এরপর আবার বিরতি পড়ে পারিবারিক কারণে ছুটিতে যাওয়ায়। এরপর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ ইতহাসে নিজের সর্বোচ্চ ৩ কোটি ২০ লাখ রুপিতে দল পান, নাম লেখান কলকাতা নাইট রাইডার্সে।
বিজ্ঞাপন
আইপিএলে অবশ্য সুবিধা করতে পারেননি। টুর্নামেন্ট মাঝপথে স্থগিত হওয়ার আগে টানা তিন ম্যাচ খেলে ব্যাট হাতে ৩৮ রান ও বল হাতে ৩ উইকেট নেন। যা একেবারেই সাকিবসুলভ নয়। আইপিএল খেলে ভারত থেকে ১২ দিনের রুম কোয়ারেন্টাইন, তাতে সুযোগ মেলেনি অনুশীলনের। মুক্ত হয় মাঠে ফিরলেও বৃষ্টির বাগড়ায় লঙ্কা সিরিজের প্রস্তুতি সারতে পারছিলেন না।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) প্রস্তুতি ম্যাচে ব্যাট হাতে দারুণ শুরু করেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ২০ বলে ২৮ রান করে আউট হন। শেখ মেহেদী হাসানের বলে বোল্ড হন দৃষ্টিকটুভাবে। সাকিব ব্যক্তিগতভাবে ২০২৩ বিশ্বকাপকে পাখির চোখ করেছেন, বড় একটি শিরোপার আক্ষেপ দীর্ঘদিনের। এজন্য ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠা জরুরি। যেমনটি দেখিয়েছিলেন ২০১৯ বিশ্বকাপে ৮ ম্যাচে ৬০৬ রান করে।
সাকিবের ব্যাটে রান মানে পুরো দলেরই স্বস্তি, সেটি ভালো করেই জানা আছে তার। এজন্য শুক্রবার ঐচ্ছিক অনুশীলনের দিন সতীর্থরা যেখানে হোটেলে নিজেদের মতো করে সময় কাটাচ্ছেন, সেখানে মুশফিককে নিয়ে মিরপুরে হাজির সাকিব। সঙ্গে এনেছেন ১৫ জনের স্কোয়াডের বাইরে থাকা তাইজুল ইসলামকে।
শুক্রবার মিরপুরে এসে শুরুতেই ইনডোরে যান সাকিব, সেখানে নেট বোলারদের খেলে নিজেকে প্রস্তুত করেন। এদিন সাকিবকে বল করেন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিশ্বকাপজয়ী বোলার তানজিদ হাসান সাকিব ও হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের বোলার মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ।
পাশে দাঁড়িয়ে সাকিবের ভুলগুলো ধরিয়ে দিচ্ছিলেন হেড কোচ ডমিঙ্গো। প্রতি বলের পরই কিছু না কিছু দূর থেকে দেখিয়ে দিচ্ছিলেন তিনি। কখনো সাকিব নিজে এসে ডমিঙ্গোকে শ্যাডো ব্যাটিং করে দেখাচ্ছিলেন। ধীরে ধীরে যথেষ্ট সাবলীল ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে শটস খেলতে থাকেন তিনি। খেলেছেন একের পর এক ড্রাইভ। বাউন্স বলেও দেখা গেছে হাত পাকিয়ে নিতে।
পরে ইনডোর থেকে মূল মাঠে আসেন সাকিব। তাইজুলকে সঙ্গে নিয়ে করে যান ফিল্ডিং-ক্যাচিং অনুশীলন। এখানেও দেখা যায় ডমিঙ্গো-সাকিবের আলাপ। পরে প্রায় দেড় ঘণ্টার অনুশীলন শেষে দুপুর ৩ টার টায় হোটেলের উদ্দেশে রওয়ানা দেন সাকিব।
টিআইএস