বাংলাদেশ ক্রিকেটে আলোচনার সিংহভাগ জুড়ে থাকেন সাকিব আল হাসান। ক্রিকেট কিংবা মাঠের বাইরে, সবখানেই আলাদা দৃষ্টি সাকিবের উপর। গতকাল (শুক্রবার) ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচে যে কাণ্ড ঘটালেন সাকিব, সেটির রেষ সহসা কাটার নয়। এ নিয়ে তোলপাড় গোটা ক্রীড়াঙ্গন।

সাকিব কেন এমন কাণ্ড করে বসলেন? সে ম্যাচের ফিল্ড আম্পায়ার মাহফুজুর রহমান লিটু কাছ থেকে দেখে যা বুঝেছেন জানালেন সেটিই, ‘আমার কাছে যেটা মনে হয় সাকিব জানতেন না ম্যাচ যে ৫ ওভারেই ডিসাইড হয়ে গেছে। ৬ষ্ঠ ওভারে যে ঘটনাটা হল তাতে আমার মনে হয় সে এটা জানতো না। একটা জিনিস কি, বৃষ্টি ছাড়া যদি আমি উইকেট কাভার করতে যাই তাহলে তো আবাহনী আমাকে উল্টো চাপ দিবে সিম্পল হিসাব।’

সঙ্গে যোগ করেন লিটু, ‘বৃষ্টির জন্যইতো আমি কাভারটা আনিয়েছি, গ্রাউন্ডসম্যানদের ডাকছি। বৃষ্টি না পড়া অবস্থায় আমি উইকেট কাভার করতে গেলে তো উল্টো আবাহনী আমাকে চার্জ করার কথা। তাই না? বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলে, উইকেট ভিজে গেলে কি আমি কাভার করবো? নিশ্চয়ই না। ঠিক আইনে যা আছে সেভাবেই আমরা করেছি। ও আসলে কেন এটা করলো আমারও বোধগম্য হয় না।’

বৃষ্টি আইনে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের দ্বিতীয় ইনিংসের ৫ ওভার খেলা হলেই ম্যাচে ফল বের হয়। এটি অবশ্য না জানার কথা নয় সাকিবের। বাংলাদেশের সবথেকে বেশি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা তারই। বিশ্বজুড়ে ফ্র‍্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের ফেরিওয়ালা বনে যাওয়া সাকিবের এই তথ্যটি না জানার কথা নয় নিশ্চয়?

লিটুর ব্যাখ্যা, ‘তাতো অবশ্যই। তার তো জানার কথা। তার তো জানার কথা ৫ ওভারে তারা ২২ রানে এগিয়ে আছে। সে কিভাবে এটা করলো আমি এখনো আসলে বুঝতে পারছিনা।’

মূলত ঘটনার সূত্রপাত আবাহনীর রান তাড়ার পঞ্চম ওভারে। মুশফিকুর রহিমকে করা সাকিবের বলটা লেগেছিল তার পায়ে। দুই হাত তুলে আবেদন করেন সাকিব। আম্পায়ার ইমরান পারভেজ নাকচ করলেন ওই আবেদন। কয়েক সেকেন্ড না যেতেই সাকিব যেন হারিয়ে ফেললেন নিজেকে। স্টাম্পে লাথি মেরে ভেঙে ফেললেন। এরপর ক্ষিপ্ত হয়ে কথা বললেন আম্পায়ার ইমরান পারভেজের সঙ্গে। পরে ওই ঘটনা থামল সেখানেই। সাকিব এরপর চলে গেলেন ফিল্ডিং করতে। 

তবে ঘটনা কিন্তু সেখানেই থামেনি। আরও বড় ঘটনাটি ঘটে ম্যাচের ষষ্ঠ ওভারে। পঞ্চম বলের পর বৃষ্টি নামলে আম্পায়ার লিটু সিদ্ধান্ত নেন খেলা বন্ধ করার। তবে তার এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হন সাকিব। এক পর্যায়ে লিটুর সঙ্গে তর্ক করতে করতে স্টাম্প তুলে আছাড় মারেন তিনি। ড্রেসিংরুমে ফেরার সময় তর্কে জড়ান আবাহনী কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের সঙ্গে। পরে অবশ্য ক্ষমাপ্রার্থনা করে সাকিব।

লিটু মনে করেন প্রথম ঘটনার রেষ ছিল পরবর্তী ঘটনাগুলো, ‘খেলা কিন্তু স্মুথলি চলতেছিল। এলবিডব্লিউর আবেদন হওয়ার পর সে হয়তো মেজাজ ধরে রাখতে পারেনি। পরে দ্বিতীয় ঘটনাটাও ঘটালো।’

টিআইএস