টেনিসের জামালী আর নেই
টেনিস বিশ্বে জনপ্রিয় খেলার একটি। বাংলাদেশে টেনিস তেমন আকর্ষণীয় খেলা নয়। এরপরও দেশে টেনিসের বিকাশে ভূমিকা রাখার পেছনে কয়েকজন ব্যক্তির মধ্যে অন্যতম মাসুদ হাসান জামালী। টেনিস ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গতকাল রাতে ৯১ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেছেন।
১৯৭৪ সালে টেনিস ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠা। এরপর থেকেই টেনিসের সঙ্গে সম্পৃক্ততা মাসুদ জামালীর। টেনিস জনপ্রিয় খেলা না হলেও অবকাঠামোগতভাবে অনেক খেলার চেয়ে এগিয়ে। এর পেছনে জামালীকে অবদান দিলেন ফেডারেশনের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ কারেন,‘জামালী ভাইয়ের সময় আশির দশকে আমাদের টেনিস কমপ্লেক্স হয়েছে। বাংলাদেশের টেনিসের উন্নয়ন ও আধুনিকতার পেছনে তার অবদান সর্বাধিক। তিনি টেনিস কোর্টের মানের পেছনে কখনোই আপোস করেননি।’
বিজ্ঞাপন
মাসুদ হাসান জামালীর আরেকটি পরিচয় তিনি দেশের অন্যতম সেরা টেনিস খেলোয়াড় শোভন জামালীর বাবা। শোভন বাংলাদেশের একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে উইম্বল্ডনের বাছাইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। শোভনের টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে তোলার পেছনেও বাবা মাহমুদ জামালীই ছিলেন অগ্রগণ্য,‘ মাহমুদ ভাই অফিস যাওয়ার পথে শোভনকে টেনিস কমপ্লেক্সে নামিয়ে যেতেন। শোভন অনুশীলন করত আবার অফিস শেষে কমপ্লেক্সে আসতেন। শোভন কথা বলতে পারতেন না। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও মাহমুদ ভাই ছেলেকে ভালো খেলোয়াড় হিসেবে তৈরি করেছিলেন’-বলেন কারেন।
বুয়েট থেকে পড়াশোনা করে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পাওয়ার জেনারেশন বোর্ডে পেশাগত জীবন শুরু করেন। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় থেকে খেলাধূলার সঙ্গে সম্পৃক্ত হন মাসুদ জামালী। পরবর্তীতে টেনিস সংগঠক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। ১৯৮৬ সালের ১৫ জানুয়ারি থেকে ১৯৯০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি তিনি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীতে ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬ সাল থেকে ১১ মার্চ ১৯৯৮ পর্যন্ত আরেক দফা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯৮ সালে ফেডারেশনগুলোতে নির্বাচন ব্যবস্থা শুরু হয়। টেনিস ফেডারেশনে নির্বাচনে ছানাউল হক বকুলের সঙ্গে সাধারণ সম্পাদকে হারেন মাসুদ হাসান। এরপর নিজেকে টেনিস থেকে গুটিয়ে নেন।
বিজ্ঞাপন
বেশ কয়েক বছর ক্রীড়াঙ্গন থেকে নিভৃতে জীবনযাপন করছিলেন মাসুদ হাসান। একমাত্র ছেলে শোভন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়ে দুনিয়া ত্যাগ করেন কয়েক বছর আগে। এতে শারীরিক ও মানসিকভাবে আরো ভেঙে পড়েন। অস্ট্রেলিয়ায় প্রবাস জীবনে থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে দেশে অনেকটা শয্যাশায়ী ছিলেন। এক মেয়ে, স্ত্রীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে টেনিস ফেডারেশন শোক প্রকাশ করেছে।
এজেড/