বিপিএলে শুভ সূচনা হলো ঢাকা ক্যাপিটালসের। রাজশাহী ওয়ারিয়র্সকে হারাল তারা। তবুও খেলোয়াড়দের হৃদয় ভারাক্রান্ত। চোখেমুখে বিষাদের ছায়া, প্রিয়জনকে হারানোর বেদনা স্পষ্ট। আজ (শনিবার) দুই দলের ম্যাচ শুরুর আগেই বিয়োগান্তক ঘটনা ঘটে গেছে। দল যখন মাঠে নামার আগে ওয়ার্ম-আপ করছিল, তাদের নির্দেশনা দিচ্ছিলেন ঢাকা ক্যাপিটালসের সহকারী কোচ মাহবুব আলী জাকি। হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক জানান, মাঠ থেকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়ার সময়ই মৃত্যু হয়েছে দেশবরেণ্য কোচের। মাঠের মানুষ, মাঠেই মৃত্যু, মাঠ থেকে তাকে অশ্রুসজল বিদায় দিলেন সহকর্মী ও শিষ্যরা।

৫ উইকেটে রাজশাহীকে হারানোর পর এই জয় জাকিকে উৎসর্গ করেছে ঢাকা। কোচের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন তাদের অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন। পরে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামেই জাকির প্রথম নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে উপস্থিত ছিলেন বিসিবি সভাপতিসহ বাকি উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ছিলেন জাকির সহকর্মী, প্রিয় ক্রিকেটাররা। জানাজায় শরিক হয়েছিলেন ক্রীড়া সাংবাদিকরাও। 

জাকিকে শেষবার দেখতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন পেসার শরিফুল ইসলাম। কান্না ধরে রাখতে পারেননি মুশফিকুর রহিমও। কোচ তালহা জুবায়ের, হান্নান সরকার, খালেদ মাহমুদ সুজন, রাজিন সালেহরা বেদনাবিধুর নয়নে তাকিয়ে ছিলেন জাকিরের মরদেহের দিকে। ঢাকা অধিনায়ক মিঠুন অবশ্য অনেক কষ্টে নিজের আবেগকে সংবরণ করেছেন। 

বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল তার বক্তব্যে কোচ জাকির জন্য প্রাণ খুলে দোয়া করতে বলেছেন। অনেকের প্রিয় জাকি সশরীরে না থাকলেও থাকবেন শিষ্যদের মনের মাঝে। মাঠের মানুষ জাকি বিদায় নিলেন মাঠ থেকেই।

২০০৮ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের হাই-পারফরম্যান্স কোচ হিসেবে যোগ দেন জাকি। ২০১৬ সালে তাসকিন আহমেদের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠেছিল, তখন তার অ্যাকশন ঠিক করার পেছনে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। তিনি মাশরাফি বিন মুর্তজা ও তাসকিনসহ জাতীয় দলের অনেক পেসারের মেন্টর হিসেবে কাজ করেছেন।

২০২০ সালে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৯ দল যখন বিশ্বকাপ জয় করে, তিনি সেই দলের কোচিং প্যানেলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এবং পেস বোলিং কোচ ছিলেন। দীর্ঘ ক্রিকেট অধ্যায়ের বিয়োগান্তক শেষটা হলো ক্রিকেটের পুণ্যভূমি সিলেটে।

এসএইচ/এফএইচএম