‘দুর্বল’ ভারতকে হারিয়ে সিরিজে সমতা শ্রীলঙ্কার
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ২০ ওভারে ১৩২/৫ (রুতুরাজ ২১, ধাওয়ান ৪০, পাড়িক্কল ২৯, ভুবনেশ্বর ১৩*; চামিরা ২৩-১, আকিলা ২৯-২, হাসারাঙ্গা ৩০-১, শানাকা ১৪-১)।
শ্রীলঙ্কা: ১৯.৪ ওভারে ১৩৩/৬ (আভিশকা ১১, মিনোদ ৩৬, ধনাঞ্জয়া ৪০*, হাসারাঙ্গা ১৫, চামিকা ১২*; ভুবনেশ্বর ২১-১, সাকারিয়া ৩৪-১, বরুণ ১৮-১, চাহার ২৭-১, কুলদ্বীপ ৩০-২)।
ফল: শ্রীলঙ্কা ৪ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ এ সমতা।
ম্যাচসেরা: ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা।
করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ক্রুনাল পান্ডিয়া। তার সঙ্গে ঘনিষ্ট সংস্পর্শ পেয়ে আরও চারজন ছিলেন কোয়ারেন্টাইনে। ফলে দ্বিতীয় টি টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নামা নিয়েই ছিল শঙ্কা। ধোঁয়াশা কাটিয়ে যখন মাঠে নামার সিদ্ধান্ত এল, তখন দ্বিতীয় সারির ভারতের দল নামানোই নিয়েই পড়ে গিয়েছিল টানাটানি। অবশেষে সব সমস্যা একপাশে রেখে লড়াইয়ে নামে দুই দল। সেই দুর্বল ভারতকে হারিয়েই টি-টোয়েন্টি সিরিজে সমতা ফিরিয়েছে স্বাগতিক লঙ্কানরা।
করোনা সংক্রমণ আর সংক্রমিত পান্ডিয়ার সংস্পর্শে আসার কারণে আট ক্রিকেটারকে পাওয়া সম্ভব ছিল না অধিনায়ক শিখর ধাওয়ানের। ফলে সফরকারীরা বুধবার সন্ধ্যায় খেলতে নামে মাত্র ৫ ব্যাটসম্যান নিয়ে। বোলার ভুবনেশ্বর কুমার আর নবদ্বীপ সাইনিকে যে কারণে দেখা গেল যথাক্রমে ছয় আর সাত নম্বরে ব্যাট করতে।
বিজ্ঞাপন
ভারতের পাঁচ ব্যাটসম্যানের তিনজনেরই অভিষেক হয়েছিল কাল। তাদের কাজটা আরও কঠিন করে দিয়েছিল প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামের মন্থর উইকেট।
তবু শুরুর পাওয়ার প্লেতে দলটি তুলে ফেলে ৪৫ রান। এরপরই হলো ছন্দপতন। অভিষিক্ত রুতুরাজ গায়কোয়াড় দাসুন শানাকার বাউন্সারে সহজ ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে।
ধাওয়ানও থিতু হয়ে হারিয়েছেন উইকেট। ৪২ বলে ৪০ রান করা তাকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। রুতুরাজের ফেরার পর দেবদূত পাড়িক্কল আশা দেখাচ্ছিলেন ভারতকে। এক ছক্কা আর এক চারে ২৩ বলে ২৯ করা তিনিও শিকার হন ওয়ানিন্দু হাসরাঙ্গার। এরপর সাঞ্জু স্যামসনও হতাশ করেন ভারতকে, আইপিএলে আলো ছড়িয়ে অভিষিক্ত নিতীশ রানাও পথ ধরেন সাঞ্জুর। ফলে উইকেট হাতে থাকলেও ১৩২ রানের বেশি তুলতে পারেনি ভারত।
বিজ্ঞাপন
মামুলি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমেও লঙ্কানরা ধুঁকছিল বেশ। তৃতীয় ওভারে আভিশকা ফার্নান্দোকে হারানো দলটা ছয় ওভারে তুলতে পারে ৩৬ রান। বাউন্ডারি আসছিল না, রানের গতিও তাই ছিল মন্থর। সাদিরা সামারাবিক্রমা যেন মনোযোগ হারালেন তাকেই, লঙ্কান এই ব্যাটসম্যানকে বোল্ড করে ফেরান বরুণ চক্রবর্তী। এরপর সেই মনোযোগের অভাবেই যেন, উইকেট ছেড়ে তেড়েফুঁড়ে বেরিয়ে এসে কুলদিপ যাদবকে বাউন্ডারি হাঁকাতে চেয়েছিলেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা। কিন্তু কাজ হয়নি তাতে। উল্টো স্টাম্পড হন তিনি, লঙ্কানরা পড়ে আরও বিপদেই।
অপর প্রান্তে সতীর্থদের আসাযাওয়ার মিছিল দেখতে দেখতেই মিনোদ ভানুকা লড়ছিলেন একা। কুলদ্বীপ যাদবকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে সীমানায় ধরা পড়ার আগে তিনি করেন ৩৬।
বল হাতে সফল ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা এরপর ত্রাতা হয়ে আসেন দলের। হাসরাঙ্গা ১১ বলে ১৫ করে তাকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন কিছুটা, তবে তার ফেরার পর রমেশ মেন্ডিসকেও দ্রুতই হারায় লঙ্কানরা। তাতেই উজ্জ্বল হয় ভারতের জেতার আশা।
তবে ত্রাতা ধনাঞ্জয়া ছিলেন, লঙ্কানরা পা হড়কায়নি তাতে ভর করেই। শেষমেশ সমীকরণ গিয়ে দাঁড়ায় ১২ বলে ২০-এ। অপর পাশে থাকা চামিকা তখনই ভুবনেশ্বরকে ছক্কা হাঁকিয়ে বসেন। সমীকরণটা সহজ হয়ে যায় তাতেই, সে ওভারে আসে ১২ রান। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৮ রান। সেটা অনায়াসেই তুলে নেন ধনাঞ্জয়া আর চামিকা। ফলে লঙ্কানরা জেতে ৪ উইকেটে, আর সিরিজে ফেরে ১-১ সমতা। আজ বৃহস্পতিবার সিরিজের অলিখিত ফাইনালে সেই একই স্টেডিয়ামে লড়াইয়ে নামবে দুই দল।
এনইউ