ছবি : সংগৃহীত

প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ স্থানীয় ক্রিকেটারদের মেলে ধরার সবচেয়ে বড় জায়গা। সেজন্যই নিয়মিত অনুশীলন করে চলেছেন খেলোয়াড়রা। তবে ময়মনসিংহে লিগ না হওয়া ও বারবার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার তারা। তাই এবার লিগ আয়োজনের দাবিতে খেলার মাঠ ছেড়ে সবাই আন্দোলনে নেমেছেন রাজপথে।

মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে ‘ক্রিকেট বাঁচাও, ময়মনসিংহের ক্রিকেট বাঁচাও’ ‘মুজিববর্ষে ময়মনসিংহে ক্রিকেট লিগ নেই কেন?’ এমন স্লোগান নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন ময়মনসিংহের ক্রিকেটাররা। পালন করেছে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি।

সার্কিট হাউস মাঠ থেকে খেলোয়াড় ও ক্রীড়ামোদিরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থান শেষে সিটি করপোরেশনে এসে অবস্থান নেয় বিক্ষোভকারীরা। পরে সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটুর সাথে সাক্ষাৎ করলে তিনি শিগগিরই আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা স্থান ত্যাগ করে।

এসময় গণমাধ্যমকর্মীদের মেয়র টিটু বলেন, 'ক্রিকেটের চারন ভূমি ময়মনসিংহ। ক্রিকেট ঐতিহ্য থেকেই আমরা বলতে চাই ভবিষ্যতেও এটি অব্যাহত রাখতে হলে মাঠ পর্যায়ের যারা নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড় আছে তাদেরকে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা
দিতে হবে। আমি এই মাত্রই তাদের সমস্যাটি শুনেছি। ময়মনসিংহের যারা ক্রীড়াসংশ্লিষ্ট আছেন তাদের সাথে আলোচনা করে এ সমস্যা যেন নিরসন করা যায় সেই চেষ্টা করব।'

মুজিব বর্ষে প্রিমিয়ার লিগে ১২টি দল গঠন হবার কথা ছিল। কিন্তু ক্লাবগুলোর দলীয় কোন্দলের কারণে লিগ এখন অনেকটাই অনিশ্চিত।

ক্ষোভ প্রকাশ করে সামিউল আলম নামের এক স্থানীয় ক্রিকেটার বলেন, ‘আমরা সারাবছর অনুশীলন করি একটি লিগ খেলার জন্য। প্রতিবারই লিগ অজানা ‘অজুহাতে’ অনুষ্ঠিত হয় না। এবারও ব্যাতিক্রম নয়। তাই লিগের দাবিতে আমারা খেলার মাঠ ছেড়ে আন্দোলনের মাঠে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত সোমবার ক্লাবগুলোর পরিচালক এবং জেলা প্রশাসকের মধ্যে মত বিনিময় হয়। সেখানে হঠাৎ করেই ক্লাব কর্তৃপক্ষ লিগ শুরু করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।’

ক্লাব কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে হতাশা ব্যক্ত করেছেন জাতীয় দলের ক্রিকেট তারকা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও। তিনি বলেন, ‘সারাবছর অনুশীলন করে যদি লিগ না খেলা যায় তাহলে খেলোয়াড়দের মাঠে আসার কী দরকার? ক্রিকেটকে নিয়ে আমাদের ময়মনসিংহের যে ঐতিহ্য তা এখন নেই। নতুন প্রজন্ম আমাদেরকে প্রশ্ন করলে উত্তর দেবারও কিছু থাকবেনা।’

সমস্যা যাই হোক, ক্লাব কর্তৃপক্ষ এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থার দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসক যদি একসাথে বসে তাহলে সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করেন এই তারকা অলরাউন্ডার।

ক্লাব কর্তৃপক্ষদের উদ্দেশ্য করে মোসাদ্দেক আরও বলেন, ‘প্রতিবারই ক্লাবগুলোর কর্ণধাররা বলে দেয় লিগ খেলতে চাই না। কেনো খেলতে চায় না, তার কোনো ব্যাখ্যাও দেয় না। তাহলে এতগুলো ক্লাবের কী প্রয়োজন? ক্রিকেট বিকাশে লিগের বিকল্প কিছু নেই।’

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান বলেন, ‘সরকারি পর্যায়ে লিগ পরিচালনার জন্য কোনো অনুদানের ব্যবস্থা নেই। তবে বেসরকারি পর্যায়ে কীভাবে লিগ পরিচালনার জন্য অর্থের যোগান দেয়া যায় সে বিষয়টি চিন্তা করা হচ্ছে। সেইসাথে ক্লাব কর্তৃপক্ষের সাথে আবারও আলোচনায় বসে লিগ আয়োজনের চেষ্টা করা হবে।’

তবে এ নিয়ে একাধিক ক্লাব কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলেও সংবাদকর্মীদের সাথে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

এমএইচ