আবুধাবি, নাম শুনেই সহজে চেনা যায়! উন্নয়নের রোল মডেল বনে যাওয়া সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী এটি। দুবাইয়ের পর দেশটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মানুষের বসবাস এখানে। দুবাইয়ের মতো সুউচ্চ বিল্ডিং আর রকমারি কাঠামো না থাকলেও রাজধানী হওয়ায় শহরটি দেশটির রাজনৈতিক কেন্দ্র, শিল্পের কেন্দ্র, অন্যতম প্রধান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং বাণিজ্যিক কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। এবার দেশটির আর দুটি শহরের মতো এই শহরের বসতে চলেছে ক্রিকেটের মহাযজ্ঞ, বিশ্বকাপ।

১৯৭১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। ১৯৯০ এর দশকের শুরুতে আবুধাবি দেশটি স্থায়ী রাজধানীতে পরিণত হয়। আবুধাবি অর্থ ‘গ্যাজেলের পিতা।’ সেখানে গ্যাজেল জাতীয় হরিণের প্রাচুর্য এবং ‘শাখবুত বিন দিয়াব আল নাহিয়ানের’ সম্পর্কে প্রচলিত একটি লোককথার ওপর ভিত্তি করে আবুধাবির নামকরণ করা হয়।

প্রায় ১৫ লাখ মানুষের বসবাস আবুধাবিতে। শহরটিতে সুপ্রিম অয়েল কাউন্সিল অবস্থিত এবং এটি আবুধাবির আমিরি পরিবারের বসবাসের স্থান। আবুধাবির রাষ্ট্রপ্রধান এই পরিবারেরই সদস্য। আবুধাবি পারস্য উপসাগরের একটি ছোট ত্রিভুজাকৃতি দ্বীপে অবস্থিত, যা মাকতা এবং মুসাফাহ সেতুর মাধ্যমে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত। দুবাই, শারজাহর সঙ্গে এবার এই আবুধাবিতে বসবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মহাযজ্ঞ, বিশ্বকাপ।

বিশ্বকাপের ভেন্যু আবুধাবিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম তিনটি। শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়াম, শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়াম-১ এবং শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়াম-২। এই তিন মাঠের মধ্যে টেস্ট খেলুড়ে মাঠ একটিই, সেটি শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়াম। এই মাঠেই হবে এবারের বিশ্বকাপের সর্বমোট ১৩টি ম্যাচ।

বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডের দুটি ম্যাচ ছাড়াও সুপার টুয়েলভের ১০টি এবং টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে আবুধাবিতে। যেখানে এই ভেন্যুর প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে আয়ারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডস। ম্যাচটি মাঠে গড়াবে আগামী ১৮ অক্টোবর।

প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ ডলার খরচে এই স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয় ২০০৪ সালে। সে বছরই স্কটল্যান্ড এবং কেনিয়ার মধ্যকার প্রথম-শ্রেণির ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজনের মধ্যে দিয়ে পথচলা শুরু হয় আবুধাবির আবু জায়েদ স্টেডিয়ামের। ২০১০ সালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটের যাত্রা শুরু করে স্টেডিয়ামটি। 

একই বছর অভিষেক হয় টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেরও। কালের পরিক্রমায় বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ আয়োজনের রেকর্ড শেখ আবু জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামেরই। এখন পর্যন্ত এই ফরম্যাটের ৪৮টি ম্যাচ এই আবুধাবির ২০ হাজার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন স্টেডিয়ামে হয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে আসন্ন বিশ্বকাপে এই ভেন্যুতে খুব বেশি বড় স্কোরের দেখা পাওয়া যাবে না। যদিও ভেন্যুর সর্বোচ্চ সংগ্রহ ২২৫ রান। তবে ৮৭ রানে গুটিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা আছে। এখানে প্রথম ইনিংসের গড় রান ১৪০ এর মতো। দ্বিতীয় ইনিংসে সেটি ১৩০ এর নিচে।

টিআইএস/এমএইচ