বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো ভারতের বিপক্ষে জয়। তাও ১০ উইকেটের ব্যবধানে। ওয়াসিম আকরাম, শহিদ আফ্রিদিদের পাকিস্তান যা করতে পারেনি বাবর আজমের দল তাই করে দেখিয়েছে। এমন এক জয়ের পর পাকিস্তান ক্রিকেটে নতুন দিনের সূচনা দেখছেন অধিনায়ক বাবর। জানালেন, এটা পাকিস্তানের সবে শুরু। ক্রিকেটবিশ্বকে এখনো অনেক কিছুই দেখানো বাকি তার দলের।

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে বিশ্বসেরার মঞ্চে দলের রেকর্ডটা একটুও আশাজাগানিয়া ছিল না পাকিস্তানের। ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিলিয়ে ১২ ম্যাচ খেলে সবকটিতেই হেরেছে দলটি। সেই পাকিস্তানই চলতি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতকে রীতিমতো ধসিয়ে দিয়ে জিতেছে। এমন জয় দলের মনোবল বাড়িয়ে দিতে যথেষ্ট। বাবরের কথাতেই বোঝা গেল সেটা। বললেন, ‘এটা কেবলই শুরু। এই জয়ের আত্মবিশ্বাসকে পুঁজি করে আমাদের এটা জিততে হবে।’ 

রোববার দুবাই ক্রিকেট স্টেডিয়ামের এই ম্যাচে ভারতকে শুরু থেকেই শাসিয়েছে বাবরের দল। শাহিন শাহ আফ্রিদির করা প্রথম ওভার থেকে শুরু করে বাবর আজমের জয়সূচক রানদুটো পর্যন্ত ভারতের হয়কে কখনো সম্ভবই মনে হতে দেয়নি পাকিস্তান। সে কারণেই এই জয়কে দলগত সাফল্য বললেন পাক অধিনায়ক। বললেন, ‘এটা দলগত জয়। দ্রুত উইকেট নেওয়া আমাদের সাহায্য করেছে। শাহিনের উইকেট তুলে নিয়ে আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছিল। আমাদের স্পিনাররাও দারুণ করেছে আজ। আমরা পরিকল্পনা মাফিক খেলেছি। ফল পেয়েছি মাঠে।’ 

শাহিন হেনেছেন প্রথম আঘাত, ইমাদ ওয়াসিম এসে কিপটে বোলিংয়ে চাপ বাড়িয়েছেন ভারতের ওপর। শুরুর দশ ওভারে হাসান আলি এসে করে গেলেন দারুণ একটা ওভার, যা ভারতকে করে দিল আরেকটু নড়বড়ে। এরপর বাঁহাতি চলে আসায় ম্যাচ আপে এলেন মোহাম্মদ হাফিজ, করলেন দারুণ মিতব্যয়ী বোলিং। পাকিস্তান যা চাইতে পারতো, তার সবকটাই হয়েছে প্রথমার্ধে, এবার ছিল ব্যাটারদের পালা।

বল হাতে পরিকল্পনাটা ভালোভাবেই বাস্তবায়নের পর জবাব দিতে নেমে শুরু থেকেই পাকিস্তানের চোখ ছিল দশ উইকেটের জয়ে। বাবরের কথা, ‘আমাদের ওপেনাররা একটা পার্টনারশিপ গড়তে পেরেছি। উইকেট ক্রমেই ভাল হচ্ছিল। আমরা শেষ পর্যন্ত ব্যাট করতে চেয়েছিলাম। সেটাই করতে পেরেছি।’

এই বিশ্বকাপের আগেই ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপ খেলে এসেছে বাবরের দল। এটাই আত্মবিশ্বাস দিয়েছে দলকে, বিশ্বাস পাকিস্তান অধিনায়কের, ‘আমি এখন শুধু দলের বাকি ক্রিকেটারদের সমর্থন করে যেতে চাই। যারা খুব ভাল প্রস্তুতি নিয়েছে। বিশ্বকাপের আগে তারা বিভিন্ন টুর্নামেন্ট খেলে নিজেদের তৈরি করেছে। সেটাই অনেক আত্মবিশ্বাস দিয়েছে।’

অথচ পাকিস্তানের এই জয়ের আগে লড়াইয়ে ভারতকেই এগিয়ে রাখা হচ্ছিল আলোচনায়। কাগজে-কলমে কোহলির দলকেই যে শক্তিশালী মনে হচ্ছিল বেশ, সঙ্গে ছিল রেকর্ডের চোখরাঙানীও! তবে বাবর জানালেন, সেসবে মোটেও মনোযোগ ছিল না দলের। বললেন, ‘আমরা ভারতের বিরুদ্ধে রেকর্ড নিয়ে একেবারেই ভাবিনি। সে অর্থে কোনো চাপই ছিল না। শুধু বলতে চাই এটা সবে শুরু। এই আত্মবিশ্বাসে ভর করে এগিয়ে যেতে হবে। টুর্নামেন্টের বাকি ম্যাচে যা কাজে লাগাতে হবে।’

এনইউ