দেশ ছাড়ার আগেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে খেলার স্বপ্ন দেখিয়েছিল বাংলাদেশ। যদিও ওমানে বাছাই পর্বের বৈতরণী পার হতেই মাথার ঘাম পায়ে পড়েছে! মূল পর্বে জায়গা করে নিলেও টানা দুই ম্যাচে হেরে কোণঠাসা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। শ্রীলঙ্কার পর দল হেরেছে ইংল্যান্ডের কাছে। শুক্রবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ পরীক্ষা। এই ম্যাচের আগে নুরুল হাসান সোহান ফের উড়ালেন স্বপ্নের ফানুস। 

দলের এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান ভাল জানেন হারলেই গাণিতিকভাবেও সেমিতে খেলার সম্ভাবনা। এ কারণেই শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে স্থানীয় সময় দুপুর দুইটায় (বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টা) শুরু হওয়া এই ম্যাচে জয়ে চোখ বাংলাদেশের।

সেমি-ফাইনালে ওঠার পথ অনেক কঠিন। দুই হারে দলের পয়েন্ট শূন্য! গ্রুপে ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়ার পরই  বাংলাদেশ, এ অবস্থায় দলের ক্রিকেটাররা কতোটা আশাবাদী? ম্যাচের আগের দিন বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে সোহান বলছিলেন, ‘দেখুন, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্লোজ ম্যাচে হেরেছি। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে পরের ম্যাচটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ওটার ওপরই মনোযোগ দিচ্ছি। প্রতিটি ম্যাচে খেলতে নামার আগে যেভাবে জয়ের জন্য নিজেদের শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করি, কালও এই চেষ্টাই করব।’

তাহলে এখনো সেমি ফাইনালে খেলার স্বপ্ন বেঁচে আছে বাংলাদেশের? জাতীয় দলের এই উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান জানিয়ে রাখলেন, স্বপ্ন মরেনি, ‘অবশ্যই। আমাদের টিকে থাকতে হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ। সবার মনোযোগ এই ম্যাচ নিয়েই। ইনশাআল্লাহ্‌ কাল যদি ভালোভাবে শুরু এবং শেষ করতে পারি তাহলে হয়ত পরের ম্যাচগুলো সহজ হয়ে যাবে এবং পুরো দল চাঙ্গা হয়ে যাবে। দুই ম্যাচ হেরে অবশ্যই আমরা টুর্নামেন্টে ব্যাকফুটে আছি। বাংলাদেশে থাকতে অনেকেই বলেছি আমাদের আশা সেমিফাইনাল খেলা। কাল জিতলে সেমিতে খেলার আশা টিকে থাকবে।’

দল যেমন চাপে সোহান নিজেও নেই ফর্মে। শেষ চার ম্যাচে তার ব্যাট থেকে এসেছে যথাক্রমে ১৬, ০ ৩, ২! কেন এমন হচ্ছে? বিশ্বকাপে নিজের এই ব্যর্থতার প্রসঙ্গ উঠতেই বৃহস্পতিবার সোহান ভবিষ্যতে চোখ রাখলেন, ‘যেহেতু আমরা মিডল বা লোয়ার মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করি, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে দলের জন্য যতটুকু করা দরকার সেটা করার চেষ্টা করব। হয়ত গত ২-১ ম্যাচে ব্যাটিংয়ে ভালো কিছু করতে পারিনি। ইনশাআল্লাহ্‌ পরের ম্যাচে সুযোগ আসলে চেষ্টা করব নিজের শতভাগ দেওয়ার।’ 

এক ম্যাচ বিরতিতে ফের শারজাহর মাঠে বাংলাদেশ। যেখানে সাফল্য পেয়েছিলেন ব্যাটসম্যানরা। তবে জেতা হয়নি। সেই ম্যাচ থেকে শিক্ষা নিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বাংলাদেশ। নুরুল সোহান সোহান অবশ্য, সতর্ক থেকে ব্যাট করলেন। বলছিলেন, ‘একেকটা ম্যাচের সিচুয়েশন একেক রকম থাকে। যে জিনিসটা হয়তো শ্রীলঙ্কা ম্যাচে এক রকম ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচে আরেকরকম থাকবে। আমাদের যেটা গুরুত্বপূর্ণ হলো যে, বোলিং যদি শুরু করি আমরা ফাস্ট সিক্স ওভার পাওয়ার প্লে’টা ম্যাচের ম্যাচ কোনদিকে যাচ্ছে বা উইকেট কেমন আচরণ করছে সেটা বলে দেবে। জিনিসটা ব্যাটিং এর ক্ষেত্রেও একই। প্রথম ছয় ওভার খেললে বুঝতে পারব যে এই উইকেটে কত রান হচ্ছে বা আমাদের ব্যাটিং প্ল্যানটা কীভাবে করতে হবে।’

ওয়েস্ট ইন্ডিজ পরীক্ষার আগে বৃহস্পতিবার দিনটা বিশ্রামে কেটেছে বাংলাদেশের। আগের দিন ১৪০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে খেলতে হয়েছে। ফিরে এসে একদিন বিরতি। মাঠের পরিশ্রমের চেয়ে বিশ্রামে থাকলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা। অনুশীলন না করলেও উইন্ডিজের বিপক্ষে ফিল্ডিং নিয়ে ভাবনা আছে সোহানদের। বলছিলেন, ‘ক্যাচ মিস যে কারোই হতে পারে বাট আমার কাছে মনে হয় আমরা টিম ওয়াইজ খুব ভালো মতোই ক্যাচিং প্র্যাক্টিস করতেসি। হয়তো মাঠে ব্যপারটা ভালো মতো হচ্ছে না। আমার কাছে মনে হচ্ছে ক্যাচ মিস যেকোনো কারণেই হতে পারে। সামনে যে ম্যাচগুলো আছে সেখানে যেন সুযোগগুলো শতভাগ কাজে লাগাতে পারি।’ 

এটা্ই শেষ কথা, সুযোগগুলো ঠিকঠাক কাজে লাগাতে হবে। কারণ এবার পা পিছলে গেলে, বিশ্বকাপ থেকে বিদায়টাও নিশ্চিত হয়ে যাবে। সবচেয়ে বড় কথা সমালোচনার যে পাহাড় চূড়া চারপাশে সব ভেঙে দিতে একটা জয় বড্ড বেশি প্রয়োজন!

এটি/এনইউ