দুঃস্বপ্নের বিশ্বকাপের শুরুটা হয়েছিল প্রথম পর্বের প্রথম ম্যাচেই হার দিয়ে। তবে বাংলাদেশ পরের ম্যাচেই ওমানকে হারিয়ে লড়াইয়ে ফেরে। সেই জয়ের পর বেফাঁস কথাও বলেছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। প্রথম ম্যাচে হারের পর যে সমালোচনা হচ্ছিল তার জবাবে বলেছিলেন, ‘আমরা রক্ত মাংসের মানুষ’। এবার বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচটা খেলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সরল স্বীকারোক্তি, ‘সম্ভবত আমি আবেগি হয়ে এমন উত্তর দিয়েছি।’

এভাবে সবকিছু মেনে নেওয়া ছাড়াও উপায় নেই। মাঠের বাইরের নানা ঘটনাকে গুরুত্ব দিয়ে মাথাটাও ঠিক রাখতে পারেননি জাতীয় দলের সিনিয়র ক্রিকেটাররা। বেফাঁস মন্তব্য করেছিলেন অনেকেই। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূলপর্বে টানা ৫ ম্যাচ হেরে রিয়াদ এখন অনুশোচনায় ভুগছেন। আগের সেই মন্তব্যটাও বেশ পোড়াচ্ছে তাকে।

বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৮ উইকেটে হারের পর মাহমুদউল্লাহ দুবাইয়ের প্রেস কনফারেন্স রুমে সরাসরিই বলে ফেললেন, ‘সমালোচনা সবসময়ই হবে, আমি কখনোই বলিনি যে সমালোচনা হবে না। সমালোচনা হবে এবং এটা আমাদের মেনে নিতে হবে। কারণ দেশ ও দলের জন্য পারফর্ম করা আমাদের দায়িত্ব। যখন আপনি করবেন না (পারফর্ম) তখন আপনাকে সমালোচিত হতে হবে। সবকিছুরই একটা নির্দিষ্ট পয়েন্ট থাকে। অনেক কিছু অনেক সময় বুঝি, আবার হয়তো ইগনোরও করি। ওমানের ওই সংবাদ সম্মেলনে যা বলেছিলাম সেটা আমি আবেগি হয়ে বলেছিলাম।’

অবশ্য দলও অনেক দিন ধরে ক্রিকেটে। বিশেষ করে জৈব সুরক্ষা বলয়ের কারণে চাপে। এই ব্যাপারটাও বেশ ভোগাচ্ছে। টানা ৫ হারের যন্ত্রণা নিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক বললেন, ‘সম্ভবত আমরা বিগত ৪-৫ মাস ধরে অবিরাম ক্রিকেট খেলছি। পরিবার থেকে দূরে আছি, জৈব সুরক্ষা বলয়ের কথা এখন আপনারাও জানেন যে জৈব ‍সুরক্ষা বলয়ের একটা ধকল আছে। অনুশীলনের কিছু ইস্যু নিয়ে কথা হলো। একজন ক্রিকেটার কিন্তু বুঝবে তার বিরতি দরকার নাকি অনুশীলন প্রয়োজন। শরীর এবং মনেরও একটা ব্যাপার থাকে। আমি এগুলো কোনো অজুহাতের জন্য বলছি না। তবে এই জিনিসগুলো আমাদেরও বোঝা প্রয়োজন। কারণ এটা খুবই সহজ বিষয় না।’

অজুহাত না দাঁড় করালেও ক্লান্তি প্রসঙ্গে রিয়াদ বলছিলেন, ‘আমার মনে আছে যখন আমি প্রিমিয়ার লিগ খেললাম টানা ২৬ দিন। তার দুদিন পর আমরা জিম্বাবুয়ে গেলাম, খেললাম। জিম্বাবুয়ে থেকে এসে জৈব সুরক্ষা বলয়ে প্রবেশ করে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে খেললাম। এর এক সপ্তাহ পর আবারও জৈব সুরক্ষা বলয়ে প্রবেশ করে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে খেললাম। সম্ভবত ইংল্যান্ডের সঙ্গে সিরিজটা হলে এ বিরতিটাও পেতাম না। আমি খেলোয়াড়দের পক্ষ থেকে বলছি যে এটা ওদের জন্য অনেক সময় কঠিন অনেক বিষয় মানিয়ে নেয়া। আমার মনে হয় যে জৈব সুরক্ষা বলয়ের কারণে কিন্তু অনেক খেলোয়াড় স্ট্রাগল করে।’

এই মাসেই ফের পাকিস্তানের সঙ্গে লড়াই। সেখানে এখন চোখ রিয়াদের। দেশের মাঠের সিরিজ নিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘সামনে পাকিস্তান সিরিজ আছে, উই নিড টু সি লট অফ থিংক, কীভাবে আমরা কোন কোন জায়গায় ইম্প্রুভ করতে হবে, ইম্প্রুভমেন্টের অবশ্যই জায়গা আছে, মানে আমি আগেই বললাম অনেক কিছুর উত্তর আমার কাছে কম্পলিকেটেড লাগছে, আমি এটা বাদ দিতে চাই।’

এটাই শেষ কথা। যেভাবেই হোক উন্নতি করতে হবে। এগিয়ে নিতে হবে দেশের ক্রিকেটকে। বিশ্বকাপের ভুল থেকে দল শিক্ষা নিলেই হয়!

এটি/এনইউ