শেষ দিনে বোথাম-ইমরান-সাকিবরা ডাকছেন মিরাজকে
শতকের পর মিরাজ/ছবি: বিসিবি
ছন্দে ছিলেন, হয়েছিলেন দ্বিতীয় ওয়ানডের ম্যাচসেরাও। তবে ম্যাচটা শুরুর আগে মেহেদি হাসান মিরাজ কি ভেবেছিলেন, এতোসব ইতিহাস শেষ দিনে এসে ডাকবে তাকে? সেটাই হচ্ছে আজ। চট্টগ্রাম টেস্টের শেষ দিনে এমন এক কীর্তি তাকে ডাকছে যে কীর্তি আছে কেবল সাকিব আল হাসান, ইয়ান বোথাম আর ইমরান খানদের মতো কিংবদন্তিদের।
সিরিজের শুরুটা গত বুধবার হলেও মিরাজের কাজটা শুরু হয়েছিল পরেরদিন। দিনের দ্বিতীয় ওভারে লিটন দাস বিদায় নেন, ব্যাট হাতে নামেন ২১ বছর বয়সী এ ‘অলরাউন্ডার’। আগের দিন সাদমান ইসলাম, নাজমুল ইসলাম শান্ত, মুশফিকুর রহিমরা উইকেটে থিতু হলেও সংগ্রহটাকে বড় করতে পারেননি। যার উইকেট পতনে মাঠে নেমেছেন, সেই লিটনও পথ ধরেছেন সাদমান, শান্ত, মুশফিকদের। সাকিবের সঙ্গী মিরাজের কাঁধে তাই দায়িত্ব ছিল দলের সংগ্রহটাকে আরও কিছু দূর নিয়ে যাওয়ার।
বিজ্ঞাপন
সে দায়িত্ব সাবেক বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব ১৯ অধিনায়ক তো দারুনভাবে পালন করেছেনই, ইনিংসের একটা বড় সময় টেলএন্ডারদের সঙ্গে নিয়ে ব্যাট করে তুলে নিয়েছেন সিনিয়র ক্যারিয়ারের প্রথম শতকও। চতুর্থ বাংলাদেশি হিসেবে ছুঁয়ে ফেলেন আট নম্বরে নেমে শতকের কীর্তি।
বয়সভিত্তিক পর্যায়ে অলরাউন্ডার পরিচয়ে খেললেও জাতীয় দলে তার ভূমিকাটা ছিল বিশেষজ্ঞ অফ-স্পিনারের। এ ম্যাচেও দলে ছিলেন স্পিনার হিসেবেই। সাকিব পেশির চোট নিয়ে যখন মাঠ ছাড়ছেন, তিনিসহ বাকি দুই স্পিনার তাইজুল ইসলাম আর নাইম হাসানের দায়িত্বটা বেড়ে গিয়েছিল বহুগুণে। সেটা বাকি দুইজনের সঙ্গে পালন করেছেন, দলের প্রয়োজন মিটিয়েছেন ভালোমতোই। তুলে নিয়েছিলেন চার উইকেট, আর একটা হলেই সেঞ্চুরি আর পাঁচ উইকেটের দারুণ ‘ডাবল’ হয়ে যেত তার।
বিজ্ঞাপন
তখন হয়নি, সে সুযোগ দ্বিতীয় ইনিংসে আছে ভালোভাবেই। উইন্ডিজ ইনিংসের তিনটি উইকেটই দখল করেছেন, আর দুটো হলেই হয়ে যাবে পাঁচ উইকেট। সঙ্গে আরও একটা যোগ হলে এমন এক কীর্তি গড়বেন, যেটা এর আগে গড়তে পেরেছেন কেবল বোথাম, ইমরান ও সাকিবরা। সেঞ্চুরি ও দশ উইকেটের কীর্তি।
শুরু করেছিলেন বোথাম, ১৯৮০ সালে ভারতের বিপক্ষে সেঞ্চুরির পর তুলে নিয়েছিলেন ১৩ উইকেট। বছর তিনেক পর ইমরান খান সেই ভারতের বিপক্ষেই পেয়েছিলেন শতক ও ১১ উইকেট। এর প্রায় ২৯ বছর আর ১১৯৮ টি টেস্টের পর আবারও এ কীর্তি দেখে ক্রিকেট, এবার সাকিবের কল্যাণে। ২০১৪ সালে খুলনায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেঞ্চুরির পর দুই ইনিংসে পাঁচটি করে উইকেট তোলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সে কীর্তির চতুর্থ মালিক হওয়ার হাতছানি আজ মিরাজের সামনে।
সে কীর্তি গড়তে পারলে অবশ্য বাংলাদেশের হয়ে একটা রেকর্ডও হয়ে যাবে তার। ২২ টেস্ট খেলা মিরাজ আজ আর তিনটি উইকেট পেলেই শততম টেস্ট উইকেট শিকারের উল্লাসে মাতবেন। বাংলাদেশের হয়ে এর চেয়ে কম সময়ে এ কীর্তি নেই আর কারও। এর আগে দ্রুততম সময়ে ১০০ টেস্ট উইকেট শিকারের কীর্তি ছিল তাইজুলের, ২৫ ম্যাচে।
এনইউ/এটি