বিচিত্র চরিত্রের জন্য বেশ সুখ্যাতি আছে আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজের। মানসিক দৃঢ়তা নিয়েও বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন ইউরোপীয় সংবাদ মাধ্যমে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে আবারও তার ছাপ রাখলেন অ্যাস্টন ভিলা গোলরক্ষক। জানালেন, প্রতিপক্ষ দর্শকরা তাকে অপমান করলে বেশ মজাই পান তিনি।

কোপা আমেরিকার ঠিক আগে আর্জেন্টাইন দলে এসেছিলেন মার্টিনেজ। এর আগের গল্পটা অবশ্য বেশ চড়াই উতরাইয়ের। আর্সেনালে ব্রাত্য হয়ে পড়েছিলেন একটা সময়, ফুটবলই ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছিলেন। এরপর গোলরক্ষক বার্ন্ড লেনোর চোটে আর্সেনালকে গোলমুখে নির্ভরতা দিয়েছেন। পরের মৌসুমে পাড়ি জমান অ্যাস্টন ভিলায়। সেখানের পারফর্ম্যান্সে আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্ক্যালোনির চোখে পড়েন। তাতেই মিলে জাতীয় দলের ডাক।

লিওনেল মেসির দলে এসেই বনে গিয়েছিলেন দলের অন্যতম এক ভরসার নাম। পারফর্ম্যান্স তো আছেই, তার মানসিক দৃঢ়তাও নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে এক্ষেত্রে। 

সম্প্রতি অ্যামাজন প্রাইম স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেটা প্রকাশ পেল আরও একবার। তিনি বললেন এমন কিছু যা বিস্ময়ের জন্ম দিলো রীতিমতো। ঘরের মাঠ আর প্রতিপক্ষের মাঠের মধ্যে তিনি নাকি প্রতিপক্ষের মাঠেই খেলতে পছন্দ করেন। তার কারণটাও জানালেন সেই সাক্ষাৎকারে। বললেন, ‘আমি প্রতিপক্ষের মাঠে খেলতে পছন্দ করি। কারণ, মানুষ যখন আমাকে অপমান করে, তখন বিষয়টা বেশ ভালো লাগে আমার। আমি বেশ মজা পাই এতে।’

বিশ্বের বাঘা বাঘা খেলোয়াড়দেরও প্রতিপক্ষের মাঠে গিয়ে খেলতে পা কাঁপে। প্রতিপক্ষ সমর্থকরাই এতে নিয়ামক হিসেবে কাজ করেন। এইতো দুই দিন আগে লিওনেল মেসির পিএসজি গিয়ে হেরে এসেছে রিয়াল মাদ্রিদের মাঠ থেকে। কোচ কার্লো অ্যানচেলত্তি তো এই জয়ের কৃতিত্বের সিংহভাগ দিয়ে বসলেন সান্তিয়াগো বের্নাবিউতে উপস্থিত রিয়াল মাদ্রিদ দর্শকদের। জানান, ঘরের মাঠের দর্শকরাই তার দলকে জয়ের মনোবল যুগিয়েছে, পিএসজিকে মানসিকভাবে টলিয়ে দিয়ে। আর মার্টিনেজ বলছেন, প্রতিপক্ষ মাঠের বিরূপ পরিস্থিতিটাই নাকি ভালো লাগে তার!

এর প্রমাণ অবশ্য মাঠেও দিয়েছেন তিনি। এই কয়েক মাস আগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে তাদেরই মাঠে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ খেলতে গিয়েছিল তার দল অ্যাস্টন ভিলা। সেই ম্যাচে পেনাল্টি গিয়েছিল স্বাগতিকদের পক্ষে। সেই পেনাল্টি নিতে আসা ব্রুনো ফের্নান্দেজকে রীতিমতো উত্যক্ত করে বসেছিলেন স্পট কিকের আগে। এরপর ফের্নান্দেজ সেই শটটা নেন লক্ষ্যের অনেক বাইরে দিয়ে।

ব্রুনোর পেনাল্টি মিসের পর দুয়ো শুনেছিলেন মার্টিনেজ। এর আগে পরেও শুনেছেন বহুবার। তবে তিনি তার জবাব দিয়েছিলেন গ্যালারির সামনে গিয়ে নেচেকুঁদে। 

অ্যামাজনকে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারে সেই বিষয়টাও উঠে এসেছে। মার্টিনেজ বলেছেন, ‘আমি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে সেই ম্যাচে নেচেছিলাম। কারণ আমি পুরোটা ম্যাচেই ইউনাইটেডের সমর্থকদের আমাকে অপমান করতে শুনেছিলাম। শেষ দিকে তারা একটা পেনাল্টি মিস করেছে। এরপর আমি বলেছিলাম, আমি সবকিছু মনে রাখি, তারা আমাকে অপমান করছিল।’

এনইউ