ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বিশ্বকাপ জেতা দল ব্রাজিল। শিরোপার দিক থেকে ব্রাজিলের ধারে কাছে না থাকলেও আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক দল। সর্বকালের সেরার সংক্ষিপ্ত তালিকায় আসে যাদের নাম, সেই ডিয়েগো ম্যারাডোনা আর লিওনেল মেসিরা যে গায়ে চড়িয়েছেন আর্জেন্টিনার আকাশী সাদা জার্সিটাই! সেই ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনারই কি না বিশ্বকাপ জেতার মুরোদ নেই, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্যই করে বসেছেন কিলিয়ান এমবাপে!

নিজের প্রথম বিশ্বকাপেই পেয়েছেন শিরোপার স্বাদ। এবারও শিরোপার জন্য ফেভারিটই ধরা হচ্ছে এমবাপের ফ্রান্সকে। সেই এমবাপে সম্প্রতি জানিয়েছেন, ব্রাজিল আর্জেন্টিনা শিরোপা জেতার মতো খেলে না!

দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চল থেকে সবশেষ বিশ্বকাপটা জিতেছিল ব্রাজিল। এরপর সেই অঞ্চল  থেকে কেবল একবারই ফাইনাল খেলেছে কোনো দল, ২০১৪ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের মাটিতে সেবার ফাইনালে হেরেছিল মেসির আর্জেন্টিনা। এর আগের দুই আর পরের এক বিশ্বকাপে ফাইনাল হয়েছে দুই ইউরোপীয় দলের মধ্যে। সে কারণেই ইউরোপীয় ফুটবলকে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ফুটবলের চেয়ে শ্রেয়তর মনে হয়েছে এমবাপের। 

ব্রাজিলিয়ান সংবাদ মাধ্যম টিএনটি ব্রাজিলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল বিশ্বকাপ জেতার মতো উঁচু মানের ফুটবল খেলে না। ইউরোপের ফুটবলের মতো উন্নত কোনো ঘরানার ফুটবল নেই। বিগত বিশ্বকাপগুলো দেখলেই আপনি বুঝবেন।’

এমবাপের কথাকে শক্ত একটা ভিত্তি দিচ্ছে ইউরোপীয় দলগুলোর বিপক্ষে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার পারফর্ম্যান্স। ২০০৬ থেকে ২০১৮ বিশ্বকাপ পর্যন্ত ইউরোপীয় দলগুলোর বিপক্ষেই শিরোপ-স্বপ্ন শেষ হয়েছিল তাদের। ২০০৬ সালে শিরোপাধারী ব্রাজিল হারে ফ্রান্সের কাছে, পরেরবার নেদারল্যান্ডস, ২০১৪ সালে নিজেদের মাটিতে জার্মানির বিপক্ষে সেই কুখ্যাত ৭-১ ব্যবধানে হার, এরপর গেলবারও বেলজিয়ামের কাছে নকআউট পর্বে হেরে বিদায় নেয় ব্রাজিল। আর আর্জেন্টিনা ২০০৬, ২০১০, ২০১৪ সালে হারে জার্মানির কাছে, আর গেলবার এমবাপের ফ্রান্সের কাছে হেরে শিরোপা-স্বপ্ন শেষ হয় মেসির আর্জেন্টিনার।

তবে নিজেদের ইউরোপীয় ফুটবলকে শ্রেয়তর মনে করার আরও কারণ আছে এমবাপের কাছে। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ইউরোপীয় অঞ্চলের ফরম্যাটে একটু পা হড়কালেই ফুটবলের বিশ্বআসরে খেলা নিয়ে জাগে সংশয়। এবার যেমনটা হয়েছিল পর্তুগালের ক্ষেত্রে, ইতালির তো বিদায়ঘণ্টাই বেজে গেছে আগেভাগে। বাছাইপর্বের এমন ফরম্যাটের কারণে দলগুলোর স্নায়ুর পরীক্ষাও হয় ভালোভাবে। 

সঙ্গে যোগ করুন উয়েফা নেশন্স লিগকেও। যেখানে ইউরোপের শীর্ষ দলগুলো নিয়মিতই একে অপরের মুখোমুখি হয়। সে কারণেই এমবাপের মনে হচ্ছে বিশ্বকাপের জন্য পুরোপুরি তৈরি হয়েই যাবে ইউরোপীয় দলগুলো। 

এমবাপের কথা, ‘উয়েফা নেশন্স লিগটা এর একটা উদাহরণ বলতে পারেন। আমরা তাই বিশ্বকাপের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হয়েই যাব।’ 

এনইউ/এটি