কোচ ছোটন সংগঠকও
শুক্রবার ছুটির দিনের অলস বিকেলেও ঢাকা মহানগর ফুটবল লিগ কমিটির অফিসে ব্যস্ততা। পাইওনিয়ার লিগে অংশগ্রহণকারী ক্লাবগুলোর প্রতিনিধি এসেছেন অংশগ্রহণ ফি নিতে। বিগত আসরগুলোতে ক্লাবগুলো পেত দশ হাজার করে। এবার সেটা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। বাফুফে সহ-সভাপতি ইমরুল হাসানের উদ্যোগেই মূলত তৃণমূলের এই ক্লাবগুলো কিছুটা বেশি অর্থ পেয়েছে।
অংশগ্রহণ ফি নিতে আসা সবার মধ্যে একজনকে আলাদা করা গেল সহজেই। নারী ফুটবল দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন এসেছিলেন ইলু স্মৃতি সংসদের অংশগ্রহণ ফি নিতে কোচ হিসেবে নয়, সংগঠক হিসেবে।
বিজ্ঞাপন
ছোটন সাবেক ফুটবলার হলেও নারী ফুটবলে কোচিং করিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন ভিন্ন উচ্চতায়। কোচিংয়ের পাশাপাশি সংগঠক হিসেবেও ভূমিকা রাখছেন ফুটবল উন্নয়নে। ইলু স্মৃতি সংসদ দলটি তার পরিবার থেকেই পরিচালিত হয়। গত দুই বছর যাবৎ এই দলটি ছোটনরাই দেখভাল করছেন।
ইলু স্মৃতি সংসদ রাজধানীর বাসাবোর দল। ছোটন বাসাবো-গোড়ান এলাকায় থাকেন অনেক দিন। খেলার পাশাপাশি ফুটবল দল গড়ার নেশা তার ছোটবেলা থেকেই, ‘যখন খেলেছি তখনও অনেক দল গড়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। ফুটবল দল গড়া এবং এর সাথে থাকা ভিন্ন রকম মজা।’
বিজ্ঞাপন
ইলু স্মৃতি সংসদ মূলত ছোটনের স্থানীয় বন্ধু সেলিমের দল ছিল। গত দুই বছর যাবৎ পাইওনিয়ারে ছোটনই পরিচালনা করছেন, ‘আমার বাবার নামে ফরহাদ হোসেন ফুটবল একাডেমি রয়েছে টাঙ্গাইলে। আমরা সেই নামে আবেদন করেছিলাম খেলার জন্য পাইওনিয়ারে। মহানগর ফুটবল লিগ কমিটি ঢাকার বাইরে দল দেবে না। তখন বন্ধু সেলিমকে বলি আমাদের খেলোয়াড়রা এই দলের হয়ে খেলবে। এভাবে ইলু স্মৃতির সঙ্গে আমার পরিবার জড়িয়ে পড়ে’। দল পরিচালনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘বর্তমান সময়ে পাইওনিয়ার দল পরিচালনা করতেও মোটামুটি খরচ হয়। আমরা ভাই, বোনরা মূলত অর্থ দেই। আমার ছোট ভাই এই দলের কোচ। আমার বাবার একাডেমি থেকে অনেক ফুটবলার প্রিমিয়ার লিগেও খেলছে।’ নারী দলের কোচিং নিয়ে ব্যস্ত থাকায় কোচ ছোটন নিজের দলকে কোচিং করানোর সুযোগ পান না।
পাইওনিয়ারে প্রায় প্রতিটি দলের পেছনে এ রকম পরিবার, এলাকার ভালোবাসা ও নেশার অকৃত্রিম সম্পর্কে রয়েছে। যেমন লালবাগের জাহাঙ্গীর ফুটবলের নেশা থেকে দীর্ঘদিন পাইওনিয়ারে দল গড়েই যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ছোটখাটো কাজ করেন আব্দুর রহমান। যার নিজের চলাই দায় সেখানে অনেক যুদ্ধ করে ফুটবলকে ভালোবেসে দল পরিচালনা করছেন।
অংশগ্রহণ ফি প্রদান অনুষ্ঠান হলেও পাইওনিয়ার মানেই বয়স বির্তক। চলমান পাইওনিয়ার লিগেও এর বাইরে নয়। তবে বিগত যে কোনো আসরের চেয়ে এবার বয়স নিয়ে অত্যন্ত সতর্ক এবং কঠোর অবস্থানে ছিল পাইওনিয়ার লিগ কমিটি।
পাইওনিয়ার কমিটির নানা যাচাই-বাছাইয়ের পরেও প্রায়ই শোনা যায় অভিযোগ। এই প্রসঙ্গে পাইওনিয়ার লিগ কমিটির ডেপুটি চেয়ারম্যান মহিদুর রহমান মেরাজ বলেন, ‘এ রকম অভিযোগের পর চার জন খেলোয়াড়কে বিশেষভাবে রাজধানীর অ্যাভাকেয়ার থেকে পরীক্ষা করানো হয়েছে এবং চারজনই বয়সসীমার মধ্যে ছিল’।
অনেক ভেন্যুতে পরিদর্শনকালে সাদা চোখে ১৬ বছরের বেশি ফুটবলার দেখা গেছে। এই প্রসঙ্গে পাইওনিয়ার লিগ কমিটির বক্তব্য, ‘প্রতিটি খেলোয়াড় মেডিকেল রিপোর্টের ভিত্তিতে খেলছে। মেডিকেলের ভাষ্য ৫-১০ শতাংশ রিপোর্টে বিচ্যুতি ঘটতে পারে। এরপরও সুপার লিগে আমরা বিষয়টি আরো গভীরভাবে দেখব।’
এজেড/এইচএমএ