কাতারের বুকে অনুষ্ঠেয় ফুটবল বিশ্বকাপের খুব বেশি দেরি নেই। তবে এবারের বিশ্বকাপ মধ্যপ্রাচ্যে হওয়ায় বেশ কিছু কাজে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। বিবাহ-বহির্ভূত যৌন সম্পর্ক, সমকামিতার মতো বিষয় করা কিংবা সেসবে উৎসাহ প্রদানকারী চিহ্ন বহন করা কাতারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এবার ইংলিশ সংবাদ মাধ্যম হুশিয়ার করে দিচ্ছে দেশটির ই-সিগারেট বা ভেপ গ্রহণকারীদেরও। কাতারে যে ই-সিগারেট নিয়ে প্রবেশও নিষিদ্ধ! 

কাতারে ভেপিং বা ই-সিগারেট গ্রহণ নিষিদ্ধ ২০১৪ সাল থেকেই। কাউকে যদি ভেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়, তাহলে কাতারে আপনাকে ১০ হাজার রিয়াল বাংলাদেশি অর্থে যা দাঁড়ায় প্রায় ২ লাখ টাকারও কিছু বেশি। এখানেই শেষ নয়, সঙ্গে হতে পারে ৩ মাসের জেলও। পুরোনো এই আইনটি সম্প্রতি আবারও সামনে এনেছে ইংলিশ সংবাদ মাধ্যম। মাস চারেক পরই যে বিশ্বকাপ, সেখানে থাকবে প্রচুর ভক্তদের আনাগোনা, যাদের অনেকেই হয়তো অভ্যাসবসত ই-সিগারেট নিয়ে গেলেও যেতে পারেন। সে কারণে আগেভাগেই দর্শকদের সতর্ক করে দিচ্ছে ইংলিশ সংবাদ মাধ্যম।

সিগারেটের বিকল্প হিসেবে ইউরোপে ই-সিগারেট বা ভেপিং জনপ্রিয়তা পাচ্ছে দিনে দিনে। মূলত এই ভেপিং করা হয় নিকোটিন ও বিভিন্ন স্বাদ-গন্ধ মিশ্রিত তরল উত্তপ্ত করার মাধ্যমে। তবে এমন কিছু কাতারে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।

২০১৬ সালে কাতারের জনস্বাস্থ্য বিভাগের অসংক্রামক রোগ বিভাগের প্রধান ডা. খুলুদ আল মুতাওয়া বলেন, ‘২০১৪ সালে আইনবিভাগের নির্দেশে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা হয়। আমরা সব সুপার মার্কেট, ফার্মেসি ও অন্যান্য আউটলেটগুলোকে বলে দিয়েছি যেন এসব বিক্রি না করা হয়। আমরা বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দরগুলোর কাস্টমস বিভাগকেও বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছি যেন কাতারে ই-সিগারেট আনার অনুমতি না দেওয়া হয়।’

‘মানুষজন এই দেশে অন্য দেশ থেকেই এগুলো অর্ডার করে আনতে পারবেন না। অন্যরাও এই দেশে ভেপ পাঠাতে পারবে না। যাদের কাছে ই-সিগারেট পাওয়া যাবে, তাদেরই যথাযথ শাস্তির মুখোমুখি করা হবে।’

এমন আইন থাকার কারণে দেশের ভেপ গ্রহণকারীদের কাতার বিশ্বকাপে ই-সিগারেট নিয়ে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যভিত্তিক ভেপ ক্লাব লিমিটেডের পরিচালক ড্যান মার্চেন্ট। তিনি বলেন, ‘আমরা ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় ভেপিংয়ের প্রতি ভিন্ন ভিন্ন আচরণ লক্ষ্য করেছি, কিছু কিছু জায়গায় এটা নিষিদ্ধ। যদি ভেপিং নিষিদ্ধ এমন কোনো দেশে আপনি যান, তাহলে জরিমানা কিংবা তার চেয়ে খারাপ কিছুর ঝুঁকি নেওয়া উচিত নয়। যেসব ফুটবল ভক্তরা কাতার বিশ্বকাপে যাবেন, তাদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। সেখানে শাস্তিটা বেশ কঠিন।’

তবে দেশটিতে প্রথাগত সিগারেট খাওয়ার বৈধতা দেওয়া আছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, দেশটির প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস আছে ১২ শতাংশের, যা যুক্তরাজ্যের সিগারেট খাওয়া জনসংখ্যার চেয়ে বেশ কম, যুক্তরাজ্যে ১৫ শতাংশ মানুষ সিগারেট খেয়ে থাকেন। 

এনইউ