একান্ত সাক্ষাৎকারে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কল্যাণ চৌবে
আবাহনী এখনো আমার মন জুড়ে আছে
ফিফার নিষেধাজ্ঞায় ভারতের ফুটবল টালমাটাল ছিল। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনে নির্বাচনের পর এখন কিছুটা স্বস্তির হাওয়া বইছে। গত পরশু নির্বাচনে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক ফুটবলার ও রাজনীতিবিদ কল্যাণ চৌবে। যিনি সভাপতি পদে হারিয়েছেন তারই এক সময়ের সতীর্থ এবং ভারতের সাবেক অধিনায়ক বাইচুং ভুটিয়াকে।
সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার ২৪ ঘন্টা পরও দেশ-বিদেশ থেকে শুভেচ্ছার জোয়ারে ভাসছেন তিনি। অনেক ব্যস্ততার মধ্যেও ঢাকা পোস্টের জ্যেষ্ঠ ক্রীড়া প্রতিবেদক আরাফাত জোবায়েরকে গতকাল মুঠোফোনে সাক্ষাৎকারে ভারতের এবং বাংলাদেশর ফুটবল নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
ঢাকাপোস্ট: আপনাকে অভিনন্দন। বেশ সংকটপূর্ণ সময় আপনি দায়িত্ব গ্রহণ করলেন।
কল্যাণ চৌবে: ধন্যবাদ। সংকট ছিল, এখন অবশ্য নেই। আমি ভারতের ফুটবলকে সামনে এগিয়ে নেয়ার কাজ করব।
ঢাকাপোস্ট: সামনে এগিয়ে নেয়ার পরিকল্পনাটি যদি একটু বলতেন...
কল্যাণ: কিছু দিন পরেই আমাদের ফিফা অ-১৭ নারী বিশ্বকাপ রয়েছে। সেটি সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করাই এখন প্রধান দায়িত্ব। এরপর আমরা একটি রোডম্যাপ প্রকাশ করব।
বিজ্ঞাপন
ঢাকাপোস্ট: রোডম্যাপ কবে নাগাদ প্রকাশ করবেন?
কল্যাণ: ১০০ দিনের মধ্যে আমরা একটি পরিকল্পনা দেব। যার মাধ্যমে ভারতের ফুটবলের আগামী দিনের পরিকল্পনা থাকবে। অবশ্যই সেই পরিকল্পনায় গ্রাসরুট বা তৃণমূলের দিকেই বেশি নজর থাকবে।
ঢাকাপোস্ট: ভারতের অন্যতম প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ফুটবল আপনি কেমন অনুসরণ করেন?
কল্যাণ: আমার মনে এখনো বাংলাদেশের আবাহনীর নাম গেথে আছে। ১৯৯৭ বা ৯৮’র দিকে আমি আবাহনীর হয়ে ফেডারেশন কাপ খেলেছিলাম। খুব অল্প সময় আবাহনীতে ছিলাম। তবে ভালোই লেগেছিল বাংলাদেশের সময়গুলো।
ঢাকাপোস্ট: আবাহনীর আরেক ফুটবলার মোনেম মুন্না তো আপনাদের কলকাতায় খুবই জনপ্রিয় ছিলেন।
কল্যাণ: হ্যাঁ, তার সম্পর্কে আমি জানি। সে অত্যন্ত ভালো এবং জনপ্রিয় ফুটবলার ছিলেন। সাফ গেমস ও ফুটবলে অনেকবারই বাংলাদেশের ফুটবলারদের আমি দেখেছি। বাংলাদেশের অনেক ফুটবলারের সঙ্গেই আমার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। খেলা ছাড়ার পর অবশ্য যোগাযোগটা কমে গেছে।
ঢাকাপোস্ট: ভারতের ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি হয়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে বিশেষভাবে কিছু করার পরিকল্পনা রয়েছে কি?
কল্যাণ: সেটা তো করাই যায়। আপনার মাধ্যমে আমি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সবাইকে আমার শুভেচ্ছা জানাই। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমি যে কোনো বিষয় আলোচনা করতে রাজি রয়েছি। যৌথভাবে কিছু করা গেলেও সেটাও দারুণ হয়।
ঢাকাপোস্ট: আগে দুই বাংলার দুই সেরা ও জনপ্রিয় ক্লাব আবাহনী, মোহামেডান, ইস্ট বেঙ্গল এবং মোহনবাগান নিয়ে গঙ্গা-পদ্মা কাপ হয়েছিল। মাঝে অনেকবার এর উদ্যোগ নেয়া হলেও ফলপ্রসূ হয়নি। আপনি আবার চেষ্টা করবেন নাকি?
কল্যাণ: দুই বাংলাতেই ফুটবল অনেক জনপ্রিয়। বাস্তবতার বিচারে সম্ভব হলে এ রকম উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে।
ঢাকাপোস্ট: আপনি নিজেও ইস্ট বেঙ্গল, মোহনবাগানে খেলেছেন। ভারতের ফুটবলে এই দুই ক্লাবের অবদান অসামান্য। আপনি পশ্চিমবঙ্গের সন্তান হয়ে কলকাতার ফুটবলে বিশেষ নজর দেবেন নাকি?
কল্যাণ: ইতোমধ্যে আমার সঙ্গে আজ (গতকাল) পশ্চিম বাংলার ফুটবলের কর্মকর্তারা দেখা করে গেছেন। তাদের সঙ্গে এই সব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
ঢাকাপোস্ট: উপমহাদেশের অনেক ক্রীড়াবিদ পরবর্তীতে রাজনীতিতে জড়িয়েছেন। আপনিও এখন সক্রিয় রাজনীতিবিদ (বিজেপি)। ফুটবলের বিশ্ব নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা ফেডারেশনগুলো রাজনীতি এবং সরকারের প্রভাবমুক্ত রাখতে চায়...
কল্যাণ: ভারতের ফুটবল ফেডারেশন ফিফার নীতিমালা মেনেই চলবে। এখানে কোনো আপোষ নেই।
এজেড/এটি