লোকমান হোসেন ভূঁইয়া

দেশের ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ডিরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভূঁইয়া ক্যাসিনো কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে কারাগারে ছিলেন। এখন অবশ্য জামিনে রয়েছেন তিনি। জামিনে থাকলেও জনসমক্ষে বা বিশেষত ক্রীড়াঙ্গনে আসেননি। আজ শনিবার মোহামেডান ক্লাবের নির্বাচন চলছে। নির্বাচনের আগে ছিল বার্ষিক সাধারণ সভা। সভায় লোকমান হোসেন ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন না। পরে অবশ্য ভোট গ্রহণের সময় উপস্থিত ছিলেন তিনি।

মোহামেডান ক্লাবের মতো ঐতিহ্যবাহী ক্লাবে ক্যাসিনো হওয়ায় কলঙ্কের কালি লেগেছে। বার্ষিক সাধারণ সভায় অবশ্য এটি নিয়ে খুব বেশি আলোচনা হয়নি। ক্লাবের দু'জন স্থায়ী সদস্য (জয়নাল আবেদীন ফারুক ও ফজলুর রহমান বাবুল)  ক্লাবে ক্যাসিনো কাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন করেন। বার্ষিক সাধারণ সভায় সভাপতিত্ব করা ইনডিপেনডেন্ট চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এমএ আমিনউদ্দিন এই প্রশ্নের উত্তর দেন। 

হাইকোর্ট থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য আমিনউদ্দিনকে সভাপতি করা হয়। তার মূল দায়িত্ব ছিল নির্বাচন সম্পন্ন করা। সফলভাবে এজিএম শেষ করার পর অনেকটাই নির্ভার আমিনউদ্দিন, ‘কোর্ট আমাকে সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছে। তবে আমি আগে থেকেই মোহামেডানের সমর্থক। অতীতের গ্লানি, ব্যর্থতা ভুলে ক্লাব সামনে গৌরব পুনরুদ্ধার করবে, এজিএমে সদস্যরা এতে একমত প্রকাশ ও সহায়তা করার অঙ্গীকার করেন।’ 

মোহামেডান ক্লাবে ক্যাসিনো কাণ্ডের পর অসুস্থ শরীরে হাল ধরেছিলেন প্রয়াত বাদল রায়। বাদল রায়ের স্থলে এবার তার মেয়ে মোহামেডানে স্থায়ী সদস্য হয়েছেন। বার্ষিক সাধারণ সভায় উপস্থিত হয়ে গঙ্গোত্রী রায় বৃষ্টির মন খারাপই হয়েছে। দুঃসময়ে অবদান রাখা বাদলের নাম এজিএমে কোনো রিপোর্টে ও কারও বক্তব্যে উল্লেখ না হওয়ায় মন খারাপ করে বাড়ি ফিরেছেন বৃষ্টি। 

আট বছরের বেশি সময় বার্ষিক সাধারণ সভা না হওয়ায় এ সভাতেই অডিট রিপোর্ট ওঠে। আট বছরে মোহামেডান ক্লাবের আয় ৫৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২৭ লাখ টাকা ক্লাবের বর্তমান তহবিলে রয়েছে। বাকি অর্থ ব্যয়। মোহামেডানের হিসাবের স্বচ্ছতা, ক্যাসিনো কাণ্ড নিয়ে এজিএমে যেমন ঝড় ওঠার কথা ছিল এর তেমন কিছুই হয়নি। 

মোহামেডান ক্লাব দীর্ঘদিন ফুটবল লিগে চ্যাম্পিয়ন হতে পারে না। ক্রিকেট লিগেও শিরোপা নেই বেশ কয়েক বছর। বড় দুই ডিসিপ্লিনে শিরোপা পুনরুদ্ধার করাই নতুন পরিচালনা পর্ষদের মূল চ্যালেঞ্জ মনে করছেন সদ্য বিদায়ী পরিচালক খন্দকার জামিল, ‘ফুটবলে এখন আমরা টেবিলে চারের দিকে আছি। সামনের বছর ভালো দল গড়লে অবশ্যই চ্যাম্পিয়ন ফাইট দেওয়া সম্ভব।’ 

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাবেক সেনা প্রধান জেনারেল (অব.) আবদুল মুবীন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। নবনির্বাচিত সভাপতি এজিএমে উপস্থিত থাকলেও মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেননি। 

নির্বাচনে পরিচালক ১৬ পদের বিপরীতে ২০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১৬ জনের একটি প্যানেল হয়েছে। এই প্যানেলের বাইরে স্বতন্ত্র বা আলাদা প্যানেল থেকে নির্বাচন করছেন কামরুন নাহার ডানা, মোস্তাকুর রহমান, জামাল রানা। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩৩৭। প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবিএম রিয়াজুল কবির কাউছার।

এজেড/এটি/টিআইএস/এমএমজে