২০০৬ সালের বিশ্বকাপের কথা স্মরণ করলে যে বিষয়টি সবার আগে মনে আসে সেটি হল জিনেদিন জিদান। তিনি একাই ফ্রান্সকে ফাইনাল পর্যন্ত টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন। বেশ সম্ভাবনা ছিল শিরোপা জয়েরও। কিন্তু ইতালির বিপক্ষের ম্যাচটিতে মার্কো মাতারাজ্জি নামে এক ডিফেন্ডারকে তিনি মাথা দিয়ে ঢুস দিয়ে বসেন। ঠিক তখনই ফুটবল থেকে করুণ বিদায়ের পাশাপাশি ফরাসিদের শিরোপা স্বপ্নও শেষ হয়ে যায়।

এরপর এই কিংবদন্তী ফুটবলার যুক্ত হন কোচিংয়ে, সফলতা তাকে সব দলের কাছেই কাঙ্ক্ষিত কোচে পরিণত করে। সেই তালিকায় যোগ দেয় ব্রাজিল জাতীয় দলও। তবে এতদিন পর্যন্ত ব্রাজিলের কোচ হওয়ার বিষয়ে কিছুই জানাননি জিদান। এ বিষয়ে সাবেক সতীর্থের কণ্ঠে জানা গেল জিদানের মতামত।

সাবেক ফরাসি মিডফিল্ডার ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত জিদান রিয়াল মাদ্রিদের কোচের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর কোচিং থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্রামে চলে যান তিনি। তবে ফ্রান্সের কোচ হয়েই জিদান আবার ফিরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দেশটির ফুটবল ফেডারেশন ২০২৬ সাল পর্যন্ত বর্তমান কোচ দিদিয়ের দেশমের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করে। ফলে অনেকদিনের ইচ্ছা অপূর্ণ রেখেই ভিন্ন কোন ক্লাবের হয়েই শুরু করতে হবে জিজুকে। কেননা, ব্রাজিলের কোচিংয়ে জিদানের যুক্ত হওয়ার কোন আগ্রহ’ই নেই।

আরও পড়ুন : ‘ব্রাজিলের কোচ হওয়া নিয়ে যা বললেন অ্যানচেলত্তি’

এ বিষয়ে জিদানের সঙ্গে কথা হয়েছে তার সতীর্থ ও ফ্রান্সের প্রাক্তন ফুটবলার রবার্ত পিরেসের। জিদান তাকে ব্রাজিলের কোচ হওয়ার বিষয়ে অনিচ্ছার কথা জানিয়েছেন। জাতীয় দলের কোচ হলে ফ্রান্সকেই বেছে নিতে চেয়েছিলেন তিনি।

রবার্ত পিরেস জানান, ‘সে ফ্রান্সের কোচ হতে চেয়েছিল। তবে, আমরা জানি যে দিদিয়ের চার বছরের জন্য থেকে যাওয়ায় এটা আর সম্ভব নয়। তাই এখন জিজুকে একটু লক্ষ্য পরিবর্তন করতে হবে। কোনো ক্লাবে যেতে হবে। এটা ঠিক যে খুব বেশি ক্লাব নেই, যারা জিজুকে নিতে পারবে।’

ব্রাজিলের কোচ হওয়ার ক্ষেত্রে ভাষা বড় প্রতিবন্ধক উল্লেখ করে সাবেক এই বিশ্বজয়ী ফরাসি জানান, ‘ব্রাজিলের কোচ হতে হলে আপনাকে খুব ভালো পর্তুগিজ জানতে হবে। এ কারণেই ব্রাজিল তার জন্য সুবিধাজনক জায়গা নয়। তার সঙ্গেও কথা বলে বুঝেছি যে ব্রাজিলের কোচ হওয়ার আগ্রহ তার নেই। এর কারণ ভাষা। সময় ভালো না গেলে চারদিকে কী হচ্ছে, সেটা সে বুঝতে চায়।’

এর আগে, সম্প্রতি ব্রাজিলের কোচ হওয়ার গুঞ্জন উড়িয়ে দেন রিয়াল মাদ্রিদের ইতালিয়ান কোচ কার্লো অ্যানচেলত্তি। তার সঙ্গে রিয়ালের ২০২৪ সাল পর্যন্ত চুক্তি রয়েছে। ব্রাজিলের ফুটবল ফেডারেশন (সিবিএফ) অনেক হেভিওয়েট কোচকেই তাদের তালিকায় রাখার গুঞ্জন রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত দেশি-বিদেশি কারো সঙ্গে চুক্তির কূলকিনারা করতে পারেনি। দেশি কোচ নিয়োগে তাদের দীর্ঘদিনের চর্চা ভেঙে এবারই প্রথম ইউরোপসহ বাইরের দেশের কোচদের দিকে ঝুঁকছে সিবিএফ।

এএইচএস