বাফুফের সর্বোচ্চ মেয়াদী পার্টনার বিএসআরএম

খেলা আর এখন শুধু নিছক বিনোদন নয়। অর্থ-বাণিজ্য, প্রযুক্তি সকল কিছুর মিশেল। ফুটবলের মতো জনপ্রিয় খেলা পরিচালনা ব্যয়ও অনেক। বাফুফের পাশে দেশের শীর্ষ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান বিএসআরএম ডেভলপমেন্ট পার্টনার হিসেবে ১০ বছরের জন্য যুক্ত হয়েছে। আজ দুই পক্ষের মধ্যে বাফুফে ভবনে আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়েছে। 

বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বলেন,‘এটা আমাদের জন্য খুবই খুশির সংবাদ। দশ বছর আমরা বিএসআরএমকে ফুটবলের পার্টনার হিসেবে পেয়েছি। বাফুফেতে কখনো এত দীর্ঘমেয়াদী কোনো পার্টনার আগে ছিল না। বিএসআরএম স্থায়ীত্ব, নিরাপত্তা ও শক্তিশালীকরণ নীতিতে বিশ্বাসী। বাফুফের সাথে তাদের এই বৈশিষ্ট্য দারুণভাবে মিলে।’  

বিএসআরএমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিরু হুসেন ফুটবলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার কারণ এবং তাদের লক্ষ্য সম্পর্কে বলেন, ‘ফুটবল নাম্বার ওয়ান খেলা বিশ্বব্যাপী। আমরা নির্মাণ খাতে নাম্বার ওয়ান, চাই ফুটবলও দেশে নাম্বার ওয়ান থাকুক। নারী ও পুরুষ উভয় দলই এখন ভালো পারফরম্যান্স করছে। আমরা চাই ফুটবল বিকেন্দ্রীকরণ। আমরা ফুটবল উন্নয়নের অংশীদার।’ বাফুফে নির্বাহী কমিটি চার বছর মেয়াদের। ইতোমধ্যে এক বছর পার হয়েছে। এই কমিটি আর তিন বছর থাকলেও বাফুফে সভাপতি আশাবাদী দুই পক্ষের চুক্তি চলমান থাকবে, ‘আমরা হয়তো কয়েক বছর পর অনেকেই এখানে থাকব না। কিন্তু ফুটবল, ফেডারেশন ও বিএসআরএম থাকবে।’

দশ বছরের পার্টনারশীপ অনুষ্ঠানে বাফুফে নির্বাহী কমিটির মধ্যে সভাপতি ও এক সহ-সভাপতি ছাড়া কেউ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। চুক্তি স্বাক্ষরের পর সহ-সভাপতি ও মার্কেটিং কমিটির চেয়ারম্যান ফাহাদ করিম মিডিয়ার প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। সভাপতি তাবিথ আউয়ালের সঙ্গে পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানও সম্মেলন কক্ষ ত্যাগ করে। মিডিয়া পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানের কাছে কোনো প্রশ্ন বা জানার সুযোগ পায়নি।

বাফুফে সহ-সভাপতি ফাহাদ করিম বিএসআরএমের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে বলেন,‘আমাদের সঙ্গে তাদের দশ বছরের চুক্তি। পাঁচ বছর পর এটি পর্যালোচনা হবে। প্রথম পাঁচ বছর তারা একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বাফুফেকে প্রদান করবে।’ পুরুষ জাতীয় দলে ইউসিবি, নারী দলে ঢাকা ব্যাংক, ইয়ুথ পর্যায়ে রেডিয়্যান্ট ফার্মাসিটিক্যাল, লিগে ইউনাইটেড হেলথ কেয়ার পৃষ্ঠপোষকতা করছে। বিএসআরএম ফুটবলের সুনির্দিষ্ট কোথায় সহায়তা করবে এই প্রশ্নের উত্তরে ফাহাদ বলেন, ‘আমরা তাদেরকে আগামী বছরের বাফুফের কর্মকান্ডের তালিকা দিয়েছি। সেখান থেকে তারা পছন্দ করবে কোনটা কোনটার সাথে থাকবে আবার আমাদের একটাও প্রাধান্য থাকবে। আগামী সপ্তাহে আলোচনা করে আগামী বছরের বিষয়টি ঠিক হবে।’

বাফুফের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের ব্যাকগ্রাউন্ড দিন তিনেক আগে হলুদ হয়েছিল। ডেভেলপমেন্ট পার্টনার বিএসআরএমের অনুরোধেই এটা করেছে ফেডারেশন। বাফুফের বিভিন্ন টুর্নামেন্ট/প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন স্পন্সরের লোগো থাকে বিএসআরএমের ব্র্যান্ডিং নিয়ে ফাহাদ বলেন, ‘তারা আমাদের ডেভেলপমেন্ট পার্টনার। ফেডারেশনের বোর্ডে বা আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে তাদের লোগো থাকবে। স্পেসিফিক কিছু বিষয়ে অন্যদের সঙ্গে তাদের লোগোও থাকবে। এখানে তাদের শর্ত স্টিল বা নির্মাণ সংক্রান্ত অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করা যাবে না। আমরা এটা অনুসরণ করি যেমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অন্য কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান যুক্ত করি না।’

ফুটবল মূলত ক্লাব নির্ভর খেলা। সারা বছর ক্লাবে থাকেন ফুটবলাররা। ক্লাবগুলো আর্থিক সংকটে ভুগছে। তবে ডেভলপমেন্ট পার্টনার থেকে ক্লাবগুলোর জন্য কোনো সুখবর নেই, ‘ক্লাব এবং একাডেমিগুলো বাফুফের অধীভুক্ত কিন্তু তাদের আলাদা মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা। বিএসআরএম আমাদের আয়োজন ও আমাদেরকে সহায়তা করবে। আমাদের অধীভুক্ত অন্য কিছুতে নয়’-বলেন ফাহাদ। 

এজেড/এফআই