মেসির ভারত সফরে চরম অব্যবস্থাপনা, আয়োজক শতদ্রু আটক
তিন দিনের সফরে ভারতে এসেছেন বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসি। সফরের প্রথম দিনেই কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামে চরম অব্যবস্থাপনায় মেসি, রদ্রিগো ডি পল ও লুইস সুয়ারেজদের ঠিকমতো দেখাই পাননি গ্যালারিভর্তি দর্শকরা। ক্ষুব্ধ হয়ে তারা স্টেডিয়ামের আসন ভাঙচুর, আগুন দেওয়ার চেষ্টাসহ মাঠে ঢুকে পড়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। তাদের ক্ষোভের মুখে অনুষ্ঠানের আয়োজক শতদ্রু দত্তকে আটক করেছে কলকাতা পুলিশ।
কলকাতা পুলিশের অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল জায়েদ শামিম জানিয়েছেন, ‘এফআইআর দায়ের করা হচ্ছে, এক্ষেত্রে কোন ধারা দেওয়া হবে তা আমরা বিবেচনা করছি। বিশৃঙ্খলার ঘটনা সল্ট লেকে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছি এবং এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় কারা দায়ী তা চিহ্নিত করতে কাজ চলছে। এতে জড়িত প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। প্রধান উদ্যোক্তাকে আটক করা হয়েছে ইতোমধ্যে।’
বিজ্ঞাপন
সমর্থকদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার যৌক্তিকতাও দেখছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা, ‘ভক্তরা খুবই বাজে আচরণের শিকার হয়েছেন। এখানে কোথায় কী দুর্বলতা ছিল এবং তাতে কারা দায়ী তা খুঁজে বের করতে হবে। পুরো ঘটনাটিই ভালোভাবে তদন্ত করা হবে।’
— ANI (@ANI) December 13, 2025
এই মুহূর্তে কলকাতার সল্টলেক ও আশপাশের এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিজিপি রাজিব কুমার, ‘কলকাতার পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। ইতোমধ্যে দর্শকদের টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে তাদের লিখিত প্রতিশ্রুতি চেয়েছে পুলিশ। শতদ্রু দত্তকে বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী পুরো ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন। আয়োজক কমিটির চূড়ান্ত অব্যবস্থাপনার উদাহরণ এটি। আমাদের প্রত্যাশা ভুক্তভোগী দর্শকদের অর্থ ফেরত দেওয়া হবে এবং ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের সংযত থাকার অনুরোধ করছি।’
বিজ্ঞাপন
প্রসঙ্গত, মেসিকে ভালোভাবে দেখার জন্য সল্টলেক বা যুব ভারতী স্টেডিয়ামে অপেক্ষায় ছিলেন হাজারও ভক্ত-সমর্থক। সেখানে একটি প্রীতি ম্যাচ আয়োজন করা হয়েছিল। সফরের প্রথম দিন ঠিক সকাল সাড়ে ১১টায় যুবভারতীর মাঠে ঢোকে মেসির গাড়ি। তবে গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু মানুষ তাকে ঘিরে জটলা তৈরি করেন। মেসি স্টেডিয়ামে পৌঁছাতেই অন্তত ৭০-৮০ জন মানুষের ভিড় ঘিরে ধরে তাকে, যাদের মধ্যে অধিকাংশ মূলত মন্ত্রী, কর্তারা। ভালোভাবে হাঁটতেও পারছিলেন না আটবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী! ক্যামেরা ও মোবাইল হাতে তার সঙ্গে ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তারা।
এ ছাড়া নিরাপত্তারক্ষীদের বেষ্টনী তো ছিলই। গ্যালারি থেকে তাকে দেখা যাচ্ছিল না। চড়া দামে টিকিট কেটে মেসিকে দেখতে যাওয়া ফুটবলপ্রেমীদের শেষ ভরসা ছিল স্টেডিয়ামের তিনটি জায়ান্ট স্ক্রিন। কিন্তু তাও দেখা যায়নি। মোহনবাগান এবং ডায়মন্ড হারবারের প্রাক্তন ফুটবলারদের সঙ্গে মেসি পরিচিত হওয়ার সময়ও প্রচণ্ড ভিড় ছিল তাকে ঘিরে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং প্রধান আয়োজক শতদ্রু দত্তকে মাইক্রোফোনে ঘোষণা করতে হয়। তাতেও স্বাভাবিক হয়নি পরিস্থিতি। পরবর্তীতে ১১.৫২ মিনিটে মাঠ ছেড়ে যান মেসি। এরপরই শুরু হয় বিক্ষুব্ধ পরিস্থিতি।
এএইচএস