জিদান খেলেছেন ফ্রান্সে, ছেলে যে কারণে আলজেরিয়ায়
ফ্রান্সের কিংবদন্তি জিনেদিন জিদান। ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপ জেতার পর ২০০৬ সালেও ট্রফি জয়ের খুব কাছে ছিলেন। কিন্তু মেজাজ হারিয়ে কপাল পোড়ে তার। ফাইনালে টাইব্রেকারে ইতালির কাছে হেরে যায় ফ্রান্স। ফরাসি লিজেন্ডের পথে হেঁটে ফুটবলে ক্যারিয়ার গড়েছেন তার ছেলে লুকা জিদান। বাবা মাঝমাঠে খেললেও মাঠে তিনি খেলেন গোলপোস্টের নিচে। পজিশনে ভিন্নতার মতো বাবা-ছেলের জাতীয় দলের জার্সিও আলাদা। ফ্রান্সের ফুটবল গ্রেট ফ্রান্সের হয়ে খেললেও লুকা খেলেন আলজেরিয়ায়। যদিও ফ্রান্সের যুব দলে খেলেছেন তিনি।
আলজেরিয়ার হয়ে চলমান আফ্রিকান নেশনস কাপে খেলছেন লুকা। ফ্রান্সে জন্মগ্রহণ করলেও আফ্রিকান দেশটির হয়ে কেন খেলেন কারণ জানালেন লুকা। কেন নিজের নাগরিকত্ব পরিবর্তন করে আলজেরিয়াকে প্রতিনিধিত্ব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন? মূলত তার দাদা আলজেরিয়ান, সেই সূত্র ধরে নাগরিকত্ব পরিবর্তন করে তাকে খেলার অনুমতি দেয় ফিফা। এই প্রসঙ্গে ২৭ বছর বয়সী কিপার বলেছেন, ‘আমি যখনই আলজেরিয়ার কথা ভাবি, তখনই আমার দাদার কথা মনে পড়ে। ছোটবেলা থেকেই আমাদের পরিবারে এই আলজেরীয় সংস্কৃতি বিদ্যমান ছিল। জাতীয় দলের হয়ে খেলার আগে আমি তার সাথে কথা বলেছিলাম এবং তিনি এই পদক্ষেপে অত্যন্ত খুশি হয়েছিলেন। প্রতিবার যখন আমি আন্তর্জাতিক দলে ডাক পাই, তিনি আমাকে ফোন করে বলেন যে আমি একটি দুর্দান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং তিনি আমাকে নিয়ে গর্বিত।’
বিজ্ঞাপন
সুদানের বিপক্ষে ৩-০ গোলের দাপুটে জয় দিয়ে আলজেরিয়া তাদের নেশনস কাপে অভিযান শুরু করে। এই ম্যাচে লুকাকে গোলপোস্টের নিচে খুব একটা পরীক্ষার মুখে পড়তে হয়নি। বুরকিনা ফাসোও তাকে ভেদ করে জালে বল রাখতে পারেনি। ১৯৯৬ সালে মোহাম্মদ হানিশেদের পর আলজেরিয়ার প্রথম গোলকিপার হিসেবে টুর্নামেন্টের প্রথম দুটি ম্যাচে ক্লিনশিটের কীর্তি গড়েছেন লুকা। গত অক্টোবরে উগান্ডার বিপক্ষে আলজেরিয়ার হয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষিক্ত এই কিপার বলেছিলেন, তার গোলরক্ষক হওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ ছিল বাবার সাথে ক্রমাগত তুলনা যেন না হয়।
শুধু দাদা নয়, বাবাও লুকার এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন। সুদানের বিপক্ষে ম্যাচে ছেলের খেলা দেখার জন্য জিদান গ্যালারিতে ছিলেন। লুকা বলেন, ‘তিনি আমাকে সমর্থন করেছেন। তিনি আমাকে বলেছিলেন, ‘সতর্ক থেকো, এটি তোমার নিজের পছন্দ। আমি তোমাকে পরামর্শ দিতে পারি, কিন্তু দিনশেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তোমারই হবে’। কোচ এবং ফেডারেশন সভাপতি যখন আমার সাথে যোগাযোগ করেন, তখন থেকেই আমার কাছে এটি পরিষ্কার ছিল যে আমি গিয়ে আমার দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে চাই। এরপর স্বভাবতই আমি আমার পরিবারের সাথে কথা বলি এবং তারা সবাই আমার জন্য খুশি ছিলেন।’
বিজ্ঞাপন
এফএইচএম/