আমার মতো ফুটবলপ্রেমীদের জন্য এখন দারুণ এক সময়। কোপা আমেরিকা ও ইউরো এক সঙ্গে চলছে। বিশ্ব ফুটবলের দুই মহাদেশীয় টুর্নামেন্ট একসাথে চলায় অবশ্য ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে চলছে দুই টুর্নামেন্টের মধ্যে তুলনামুলক বিশ্লেষণ।

আমি তো বলবো-দুই মহাদেশের ফুটবলের ধরন ও সংস্কৃতিতে স্বতন্ত্রতা ও বৈচিত্র্যতা রয়েছে। লাতিন আমেরিকানরা সহজাতভাবে বল ধরে খেলতে পছন্দ করে। ছোট পাসে নিজেদের স্কিল দেখানোর প্রবণতা তাদের সহজাত। 

অন্যদিকে ইউরোপের ফুটবল অনেক গতিশীল। এখানে গতি ও শক্তিকে প্রাধান্য দেয়া হয়। আরেকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ইউরোপীয়ান লিগগুলো অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপুর্ণ যে কারণে র‌্যাঙ্কিংয়ে অনেক পার্থক্য থাকলেও শেষ মিনিট পর্যন্ত লড়াই করার মানসিকতা তাদের মজ্জাগত। 

কোপায় দেখতে পাচ্ছি- অনেক দলের র‌্যাঙ্কিং ইউরোপের অনেক দলের চেয়ে কম। ৩০ এর মধ্যে র‌্যাঙ্কিংয়ে থেকেও তারা আর্জেন্টিনা ব্রাজিলকে সেভাবে ফাইট দিতে পারছে না। আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের চেয়ে তারা অনেক পিছিয়ে। 

মাঠ ও রেফারিং ফুটবলের অন্যতম এই দুই উপাদানে ইউরো কোপার চেয়ে অনেক পিছিয়ে। নেইমার ও মেসি বিশ্বমানের ফুটবলার। তাদেরকে অনেক ফাউলের শিকার হতে হচ্ছে। এর অর্ধেক পরিমাণ ফাউলের শিকার হয়ে তারা ফ্রি কিক বা তাদের পক্ষে সিদ্ধান্ত পান ইউরোপের লিগে। 

মাঠের সমালোচনা তো স্বাগতিক ব্রাজিলের কোচ তিতেই করেছেন। মাঠ মসৃণ ও গতিশীল না হলে ভালো ফুটবল সম্ভব নয়। ইউরোর প্রতিটি মাঠ একটির চেয়ে আরেকটি ভালো। কোচ হিসেবে আমাদের কোচদের দিকেও নজর থাকে। লাতিন আমেরিকার কোচদের তুলনায় ইউরোর ডাগআউটে হাইপ্রোফাইল কোচরা থাকেন। ইউরোতে খেলা দেখার পাশাপাশি কোচিংটাও উপভোগ্য। 

সময়ের বিবর্তনে ইউরো এখন কিছুটা কোপার চেয়ে এগিয়ে থাকলেও ফুটবল ইতিহাসে কোপার অবদান অনেক। বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন টুর্নামেন্ট কোপা। দুটি টুর্নামেন্টই তাদের স্বকীয়তা বজায় রেখে ফুটবলপ্রেমীদের আনন্দের উপলক্ষ আনে চার বছর পর পর। আমরা অধীর হয়ে থাকি কোপা আর ইউরোর জন্য। 

* সাবেক জাতীয় ফুটবলার ও কোচ, বর্তমানে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেডের কোচ।