করোনাকালীন সময়ে বিদেশ যাত্রায় নানা আনুষ্ঠানিকতা ও বিপত্তি। ঢাকা থেকে অনেক দেশে সরাসরি ফ্লাইট নেই। সরাসরি থাকলেও আবার প্রতিদিন নেই। এ রকম জটিলতায় বসুন্ধরা কিংস কিছু দিন আগে মালেতে গিয়েছিল কাতারের দোহা ঘুরে। জামাল ভূঁইয়ারা অবশ্য ঢাকা থেকে সরাসরি মালে এসেছেন। এই প্রতিবেদকও জামালদের সঙ্গে একই ফ্লাইটে মালেতে পৌঁছেছেন একদিন আগেই। 

করোনাকালীন সময়ে বিমানবন্দরে নানা আনুষ্ঠানিকতা। ফুটবল দল সুনির্দিষ্ট সময়ে ঢাকা বিমানবন্দরে পৌঁছান। অন্য সবার সঙ্গেই বোর্ডিং পাস সংগ্রহ করেন জামলারা। বরাবরের মতো টিম অ্যাটেনডেন্ট মহসিন ব্যাগ, অনুশীলন সামগ্রী বোর্ডিং ব্যবস্থাপনায় ব্যস্ত ছিলেন। বাংলাদেশের ৩৪ সদস্যের কন্টিনজেন্টের বোর্ডিংয়ে বেশি সময় লাগেনি। 

ফ্লাইট স্বল্পতা থাকায় ইমিগ্রেশনে তেমন ভিড় ছিল না। খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই সবার ইমিগ্রেশন শেষ হয়। ফ্লাইট এক ঘন্টা বিলম্ব। ফলে আরো এক ঘণ্টা অলস সময়। এই এক ঘণ্টা কোচ অস্কার তার কোচিং প্যানেল নিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন। খেলোয়াড়রা দুই তিন গ্রুপে খুনসুঁটি করছিলেন।

খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফরা মিলে খাওয়ার আবদার করলেন ম্যানেজার রুপুর কাছে। রুপু যেন আবদারের অপেক্ষায় ছিলেন। সোহেলরা বলা মাত্রই মিলল অনুমতি, ‘যার যা মন চায় খাও’। যে যার পছন্দ মতো ফাস্ট ফুড নিয়েছেন।

অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ও তারিক কাজী অবশ্য নিজেরা আলাদা করে সময় কাটিয়েছেন। দুই তিন জন সিনিয়র ফুটবলারও স্ত্রী, সন্তানদের সঙ্গে কথা বলে এই এক ঘণ্টা কাটিয়েছেন। দুপুর বেলায় ফ্লাইট। এক ঘন্টা বিলম্ব। খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফরা মিলে খাওয়ার আবদার করলেন ম্যানেজার রুপুর কাছে। রুপু যেন আবদারের অপেক্ষায় ছিলেন। সোহেলরা বলা মাত্রই মিলল অনুমতি, ‘যার যা মন চায় খাও’। যে যার পছন্দ মতো ফাস্ট ফুড নিয়েছেন।

বিমানে উঠার কিছুক্ষণ আগে কয়েকজন ভক্তের আবদার মেটান জামাল ভূঁইয়া। তার সঙ্গে ছবি, সেলফি তুলেছেন। অন্যদের মধ্যে শুধু তারিক কাজীর সঙ্গে ছবি তুলতে দেখা গেছে। করোনার জন্য বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়রা নিজেদের একটু দূরত্ব বজায় রেখেই চলছিলেন।

কোচ অস্কার ব্রুজন ও ম্যানেজার সত্যজিৎ দাশ রুপু ছাড়া সবাই ইকোনোমি ক্লাসে ছিলেন। ইকোনোমি ক্লাসের প্রথম ছয়-সাত সারি বাংলাদেশ দলের জন্য বরাদ্দ ছিল। ফিনল্যান্ড প্রবাসী তারিক কাজী বিমানে উঠার পর থেকেই ট্যাবে ব্যস্ত ছিলেন। নেলসন ম্যান্ডেলার উপর নির্মিত ছবি দেখছিলেন। তারিক বলছিলেন, ‘তিন থেকে চার ঘন্টার ফ্লাইট থাকলে আমি মুভি দেখেই সময় কাটাই। অনেক সেরা সেরা মুভি আমার বিমানে বসে দেখা। ভালো মুভিগুলো বিমানে দেখার চেষ্টা করি।’ 

তারিক যখন মুভিতে বুঁদ হয়ে আছেন এর পেছনে জামাল ঘুমাচ্ছিলেন। কে কীভাবে ঘুমায় সেটা আবার দু’একজন ছবি তুলে সতীর্থদের পাঠাচ্ছিলেন। খানিকটা ঘুম, কিছুটা খুনসুঁটি করতে করতে বিমান পৌঁছায় মালের ভেলেনা বন্দরে।

খুব স্বল্প সময় বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষ। বাংলাদেশের লিয়াজো অফিসার আলী ম্যানেজার রুপু ও মিডিয়া ম্যানেজার হাসানের সঙ্গে আলাপ করে খেলোয়াড়দের রুম বণ্টন করছিলেন। এবার গ্রুপ ছবির পালা। ম্যানেজার রুপুর ঘোষণা, ‘সবার আগে সাংবাদিকের ছবি তুলতে হবে।’ জামালরাও সমস্বরে বললেন, ‘হ্যাঁ আগে একমাত্র সাংবাদিকের ছবি।’

ফ্লাইটে দলের সঙ্গে যাওয়া একমাত্র সাংবাদিক হওয়ায় এই প্রতিবেদকই ৩৪ জন কন্টিনজেন্টকে ফ্রেমবন্দি করেন। দ্রুত হোটেলে বাবলে যেতে হবে এজন্য তাড়া। জামালদের খেলা কাভার করতে আসা। আগামী দুই সপ্তাহ তাদের কাভার করলেও কাছাকাছি যাওয়া যাবে না।

তাই দলের অনেকে জড়িয়ে ধরে দোয়া ও শুভ কামনা চাইলেন। টিম বাস ছুঁটল হোটেল জেন্টসের উদ্দেশে। মালেস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের গাড়িতে এই প্রতিবেদক টিম বাসের পিছু পিছু খানিকক্ষণ টিম হোটেলে থেকে নিজ হোটেলে।

এজেড/এটি/এমএইচ