খুব ছোট্ট শহর মালে। পায়ে হেঁটে এক ঘন্টারও কম সময়ে মালে শহর ঘুরে আসা যায়। মাগু মালে থেকে রানবা বিশ মিনিটের হাঁটা দূরত্বের পথ। এই বিশ মিনিটে আসা-যাওয়ার পথে চোখে পড়েছে অনেক কিছুই যা মালেকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর রাজধানী থেকে খানিকটা আলাদা করে রাখে। 

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর রাজধানীর শহরে অন্যতম অনুসঙ্গ ট্রাফিক জ্যাম, ধুলোবালি। মালে এ থেকে একদম ব্যতিক্রম। প্রতিটি সড়ক একদম পিচ ঢালা সুন্দর। নোংরা তো দূরের কথা ধুলোবালিও নেই সে অর্থে।

পরিচ্ছন্নতাও শহরটির অন্যতম এক বৈশিষ্ট্য/ঢাকাপোস্ট

ঢাকাকে বলা হয় রিকশার শহর। সেই অর্থে মালেকে বলতে হবে স্কুটির শহর। মালে শহরে প্রাপ্ত বয়স্ক প্রায় সবাই স্কুটি ব্যবহার করেন। প্রতিটি অলিতে গলিতে স্কুটি সারিবদ্ধভাবে রাখা।

স্বাভাবিক গতিতে সবাই সবার কাজে ছুটছে/ঢাকাপোস্ট

বড় রাস্তার মোড়গুলোতে আলাদা জায়গা রয়েছে স্কুটি রাখার জন্য। অনবরত স্কুটি চললেও কোনো শব্দ ও বায়ুদূষণ নেই। স্বাভাবিক গতিতে সবাই সবার কাজে ছুটছে।

যেখানে দু’চোখ যায়, স্কুটির রাজত্ব সেখানেই/ঢাকাপোস্ট

সমুদ্র তীরবর্তী শহর হওয়ায় মালেতে গরমের তীব্রতা বেশি। আবহাওয়ার জন্য পোষাকে পুরুষরা টি-শার্টই বেশি পড়েন।

কয়েকটি সড়ক এবং অলিতে গলিতে ঘুরে চোখে পড়েনি কোনো ট্রাফিক পুলিশ। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী না থাকলেও নাগরিক ও স্কুটি চালকরা আইন মেনেই চলছেন। মালে শহরে চলা যানবহনের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশই স্কুটি। ব্যক্তিগত গাড়ি ও ট্র্যাক্সি খুব কম।

রাস্তা পারাপারকারীরা জেব্রা ক্রসিং ব্যবহার করছেন। জেব্রার কাছাকাছি এসে স্কুটি, ট্যাক্সিগুলো গতি কমিয়ে দিচ্ছে। এ যেন পারস্পরিক দারুণ বোঝাপড়া।

অল্প দর্শনে মালেতে সচেতনতা বিশেষভাবে চোখে পড়েছে। শহরের প্রায় সবাইকে দেখা গেল মাস্ক পরিহিত। স্কুলগামী বাচ্চা থেকে বৃদ্ধ সবাই সঠিক নিয়মে মাস্ক পড়েছেন। শুধু রাস্তায় নয়, দোকানপাট, অফিস আদালত সর্বত্রই মাস্কের দারুণ ব্যবহার। যেটা বাংলাদেশে তেমন দেখা যায় না। কয়েক মাস আগে নেপালের কাঠমান্ডু সফরেও ঢাকার চিত্রই দেখা গিয়েছিল। মালে সেখানে একেবারে ব্যতিক্রম। 

 

করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও মালেতে আছে মাস্কের যথেষ্ট ব্যবহার/ঢাকাপোস্ট

করোনায় বিপর্যস্ত বিশ্ব। এই মহামারি রোগে ভয়াবহভাবে আক্রান্ত দক্ষিণ এশিয়াও। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর তুলনায় মালদ্বীপে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা অনেকটাই কম।

উভয় সংখ্যা কম হওয়ার পেছনে সচেতনতাই অন্যতম কারণ মনে করেন মালদ্বীপের নাগরিক মরিয়ম আক্তার, ‘করোনা থেকে বাঁচতে হলে মাস্কের বিকল্প নেই। ১৬ বছরের ঊর্ধ্বে প্রায় সবার দুই ডোজ ভ্যাকসিন নেয়া হয়েছে। ১২ বছরের ঊর্ধ্বে এক ডোজ দেওয়া হয়েছে।’ 

মালেতে প্রবাসীর সংখ্যা অনেক। প্রবাসীদের মধ্যে বাংলাদেশি সর্বোচ্চ। মালে শহরকে সুরক্ষিত রাখতে প্রবাসীদেরও ভ্যাকসিন দিয়েছে মালে সরকার। মালেতে কাজ করা বাংলাদেশিদের মধ্যে অধিকাংশ ডাবল ডোজ পেয়েছেন ইতোমধ্যে।

এজেড/এটি