দক্ষিণ এশিয়ার সেরা ফুটবলারদের একজন আলী আশফাক। এক যুগের বেশি সময় মালদ্বীপের ফরোয়ার্ড লাইনের ত্রাতা। ৮৩ ম্যাচে গোল করেছেন ৫০ টির বেশি। সেই আলী আশফাক মালদ্বীপ ঘরোয়া লিগে বাংলাদেশি ফুটবলারদের চেয়ে কম পারিশ্রমিক পান। 

সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের হেড কোচ ছিলেন মালদ্বীপের মোহাম্মদ নিজাম। সাইফ স্পোর্টিংয়ে তার অধীনেই খেলেছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভুইয়া। আলী আশফাকও তার কোচিংয়ে খেলেছেন। ফলে  দুই দেশের ফুটবলারদের পারিশ্রমিকের বিষয়টি তার ভালোই জানা। সেই তুলনামূলক বিশ্লেষণ করতে গিয়ে নিজাম বলেন, ‘মালদ্বীপের ফুটবলারদের মধ্যে আলী আশফাক সর্বোচ্চ দামি ফুটবলার। সর্বোচ্চ দামি ফুটবলার হলেও বাংলাদেশের তুলনায় পারিশ্রমিক কম।’

নিজাম ও মালদ্বীপ ফুটবলের সাথে সম্পৃক্ত অনেকের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে আলী আশফাক ক্লাব থেকে ৭০-৮০ হাজার ডলারের মতো পারিশ্রমিক পান এক মৌসুমে। সেই হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা ফুটবলার হলেও বাংলাদেশের জামাল ভূঁইয়া, ইমন বাবুদের চেয়ে পারিশ্রমিকে পিছিয়ে আশফাক। 

গুণমান বিবেচনায় আশফাকের পারিশ্রমিক কম মনে করেন নিজাম, ‘আশফাক অসাধারণ মেধাসম্পন্ন খেলোয়াড়। মালদ্বীপের ফুটবল তো বটেই সারা দেশের ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় সে। বাংলাদেশের ফুটবলাররা বাংলাদেশে অনেক পারিশ্রমিক পায়।’

শুধু আশফাক নয়, আলী ফাসির, আকরামের মতো খেলোয়াড়রাও কম পারিশ্রমিক পান মালে লিগে। তাদের চেয়ে গুণেমানে পিছিয়ে থাকলেও বাংলাদেশের ফুটবলাররা ঘরোয়া লিগে প্রায় কোটি টাকার কাছাকাছি অর্থ পান। শোনা যাচ্ছে, এবার আবাহনী থেকে সোহেল রানা বসুন্ধরা কিংসে যাচ্ছেন ৯০ লাখ টাকায়। যা আশফাক, আলী ফাসিরদের চেয়ে ২০-৩০ লাখ টাকা বেশি। আলী আশফাকরা ক্লাব ও জাতীয় দলকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্য আনলেও সেখানে ব্যতিক্রম সোহেল-জামালরা। 

আলী আশফাককে দক্ষিণ এশিয়ার মেসি বলা হয়। সেই তিনি তার ক্লাব ক্যারিয়ার মালদ্বীপেই কাটিয়েছেন। যিনি এশিয়ার শীর্ষ এমনকি ইউরোপিয়ান লিগে খেলার যোগ্যতা রাখেন। আশফাকের একটি ভুল সিদ্ধান্ত এর জন্য দায়ী বলে মনে করেন নিজাম, ‘তার বয়স যখন ২০ এর কম। পর্তুগালের বেনফিকায় আমন্ত্রণ পেয়েছিল। দেশ ছেড়ে সে যেতে চায়নি তখন। পাশাপাশি মালদ্বীপের ফুটবল সংশ্লিষ্টরাও সঠিক নির্দেশনা দিতে পারেনি। সেই সময় পর্তুগালে গেলে তার ক্যারিয়ার ভিন্ন মাত্রা পেত।’ 

মালদ্বীপ লিগে বাংলাদেশের মতোই এশিয়ান সহ চার জন বিদেশি কোটা। বিদেশি ফুটবলারের পারিশ্রমিক মালদ্বীপে আলী আশফাকের কাছাকাছিই হয়। বাংলাদেশে অবশ্য ভিন্ন চিত্র। জামাল-সোহেলদের চেয়ে অনেক বিদেশি ফুটবলার বেশি অর্থ পান। মূলত বিদেশিদের পারফরম্যান্সে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা নির্ধারণ হয় এজন্য ক্লাবগুলো বিদেশি ফুটবলারদের পারিশ্রমিক বেশি দেয়। 

ফুটবলারদের মতো বাংলাদেশে কোচদের পারিশ্রমিকও মালদ্বীপের চেয়ে বেশি। মালদ্বীপের ক্লাব রেডিয়েন্টের কোচ ছিলেন অস্কার ব্রুজন। রেডিয়েন্টের তুলনায় বসুন্ধরায় অনেক অর্থ পাচ্ছেন তিনি। টিসি স্পোর্টসের হেড কোচ নিজাম কয়েক মাস কাজ করেছেন সাইফ স্পোর্টিংয়ে। তিনিও ভালো পারিশ্রমিক পেয়েছেন বলে জানালেন, ‘বাংলাদেশে কোচদের পারিশ্রমিক বেশ ভালোই। আমি সাইফে ভালো ও সম্মানজনক অর্থে কাজ করেছি। মালদ্বীপেও সম্মানী বাড়ছে। তবে বাংলাদেশের চেয়ে একটু কম।’  

এজেড/এটি