‘কী হলে কী হতো’ এমন আফসোসটা পুরো বছরেই ছিল বার্সেলোনার। সে আফসোসটা সঙ্গী হলো শেষ দিনেও। তবে বছরের শেষ ম্যাচে টেবিলের শীর্ষ দুইয়ে থাকা সেভিয়ার বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্রয়ে পাওয়া এই আফসোসটা দলকে দিচ্ছে নতুন দিনের দিশাও।

শেষ কিছু দিনে বার্সেলোনা পয়েন্ট হারিয়েছে টেবিলের মাঝে থাকা সেল্টা ভিগো, অসাসুনা, নিচের দিকে থাকা আলাভেসের বিপক্ষে। টেবিলের শীর্ষ দলগুলোর বিপক্ষে যেন পরাজয়ই ছিল নিয়তি। এখন পর্যন্ত নিজেদের ওপরে থাকা দলগুলোর ভেতর কেবল এক রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষেই কেবল জিততে পেরেছে দলটি। 

বাকি চার দলের বিপক্ষেই হেরেছে কাতালানরা, যার মধ্যে একটি ছিল রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে হারও। চলতি মৌসুমের এমন পরিসংখ্যান সেভিয়া ম্যাচের আগে বার্সাকে হার এড়ানোর চ্যালেঞ্জই জানাচ্ছিল, টেবিলে যে আন্দালুসিয়ানদের অবস্থান ছিল দুইয়ে! সেই ম্যাচই বার্সা শেষ করেছে ড্রয়ের ‘আফসোস’ নিয়ে।

প্রতিপক্ষের মাঠ র‍্যামন সানচেজ পিজুয়ানে বার্সেলোনা বরাবরের মতোই শুরুটা করেছিল বেশ। শুরুর ১৫ মিনিটে ছোট-বড় মিলিয়ে কম করে হলেও তিনটি গোলের সুযোগ এসেছিল দলটির সামনে, তবে দু’বার নিজেদের ভুলে, আর একবার প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক ইয়াশিন বনোর কৃতিত্বে গোল পাওয়া হয়নি দলটির।

তবে সেভিয়া ম্যাচে ফেরে এরপরই। ২২ মিনিটে রাফা মিরের কল্যাণে একবার বলও বার্সার জালে জড়িয়েছিল স্বাগতিকরা, কিন্তু অফসাইডের খড়্গে গোল আর পাওয়া হয়নি দলটির। প্রথম গোলের জন্য অবশ্য এরপর খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি দলটির। ৩৩ মিনিটে সাবেক বার্সা মিডফিল্ডার ইভান রাকিটিচের কর্নার থেকে গোলটি করেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড আলেহান্দ্রো পাপু গোমেজ।

বার্সাও জবাব দিতে দেরি করেনি খুব একটা। বিরতির এক মিনিট আগে কর্নার থেকে গোলটি করেন রোনাল্ড আরাউহো। ফলে ১-১ সমতা নিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল। ফিরে এসে দ্বিতীয়ার্ধে সেভিয়া ডিফেন্ডার জুলস কুন্দে করে বসলেন এমন এক কাজ তাতে সরাসরি লাল কার্ড দেখতে হয় তাকে। জর্দি আলবার কথায় রেগে গিয়ে তার মুখে বল ছুঁড়ে মারেন তিনি। তাতেই সেভিয়া পরিণত হয় দশ জনের দলে। 

দশ জনের সেভিয়ার ওপর এরপর দারুণ সব আক্রমণের পসরা সাজিয়ে বসেছিল বার্সা। তবে তার একটাও জড়ায়নি জালে। প্রতিপক্ষ বিপদসীমায় বাড়ানো এজাজুলি আবদের ক্রসে করা গাভির হেডার বেরিয়ে যায় ক্রসবারের একটু বাইরে দিয়ে। শেষ মুহূর্তে উসমান দেম্বেলের শট প্রতিহত হয় বারপোস্টে। তাতে টেবিলের শীর্ষ দুইয়ে থাকা সেভিয়ার বিপক্ষে বার্সেলোনা ম্যাচটা শেষ করে ড্রয়ের আফসোস নিয়েই।

তবে ম্যাচের পারফর্ম্যান্স আর ফলাফল দলটিকে দিচ্ছে সুড়ঙ্গ শেষে আলোর আশাও। ম্যাচে জাভির দল সুযোগ সৃষ্টি করেছে বেশ। ফিনিশিংয়ে সমস্যা কাটাতে পারলে গোলও আসবে, এমন আশ্বাসও পাচ্ছেন কোচ। আর টেবিলের শীর্ষ ছয় দলের চারটির বিপক্ষেই যখন হারের কবলে পড়েছে দল, তখন তালিকার দুইয়ে থাকা সেভিয়ার বিপক্ষে দাপট দেখিয়ে ড্র আদায় করাটা অবশ্যই দলে বেশ ইতিবাচকতা নিয়েই আসবে।

এই ড্রয়ের ফলে সেভিয়ার সঙ্গে রিয়ালের পয়েন্ট ব্যবধান ৫-ই থাকল। আগের দিন কাদিজের সঙ্গে ড্র করেছিল রিয়াল, ১৮ ম্যাচ শেষে ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে ছিল তালিকার শীর্ষে। দুইয়ে থাকা সেভিয়ার সংগ্রহ সমান ম্যাচে ৩৮ পয়েন্ট। আর বার্সা ১৮ ম্যাচ শেষে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে রইলো তালিকার সপ্তম অবস্থানে। নতুন বছরের প্রথম ম্যাচে দলটি খেলবে মায়োর্কার বিপক্ষে। প্রতিপক্ষের মাঠে জাভির দলের ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে ৩ জানুয়ারি। 

এনইউ