মামুন-সবুজদের রসায়নে অনন্য মেরিনার্স
এক ঘণ্টার হকি ম্যাচ শেষ হয় দুই ঘণ্টারও বেশি সময়ে। রাত আটটার পর মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে ফ্লাডলাইটের আলো ধীরে ধীরে কমছিল। অন্ধকার হয়ে আসলেও মেরিনার্সের উল্লাস কমছিল না কোনোভাবেই। মাঠ ও মাঠের বাইরেও নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে মেরিনার্স সফল হওয়ায় তাদের খুশির জোয়ার বইছিল। ক্লাবটির সাধারণ সম্পাদক হাসানউল্লাহ খান রানা কোচ মামুনুর রশীদকে জড়িয়ে ধরে কান্না করলেন। আরামবাগের মহল্লা ভিত্তিক ক্লাবে কর্মকর্তাদের আবেগ-ভালোবাসারই বহিঃপ্রকাশ।
মোহামেডান-আবাহনীর চেয়ে কম বাজেটের দল ছিল মেরিনার্স। স্বল্প বাজেটের দল হলেও দুই ঐতিহ্যবাহী দুই দলকে পেছনে ফেলে মৌসুমের দুই আসরেই চ্যাম্পিয়ন মেরিনার্স। মাঠের বাইরে কোচিং স্টাফদের পরিকল্পনা এবং খেলোয়াড়দের টিম ওয়ার্কই এর সফলতার চাবিকাঠি।
বিজ্ঞাপন
সোহানুর রহমান সবুজ ক্লাব কাপে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন। সেই ফর্ম ধরে রেখেছেন লিগেও। ৩৩ গোল করে এই প্রতিযোগিতায় তিনি সেরা। মেরিনার্সের সাফল্যের পেছনে তার অবদান অনেক। আবাহনীর বিরুদ্ধে হারা ম্যাচে তিনি করেছিলেন হ্যাটট্রিক আজ মোহামেডানকে হারানো ম্যাচ করলেন দুই গোল। দল চ্যাম্পিয়ন হলেও গোলের ক্ষুধা মেটেনি তার, ‘ইচ্ছে ছিল আজ চারটি গোল করার। দুই গোল করলেও দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় ভালো লাগছে।’
সবুজের এই পারফরম্যান্সের পেছনে অবদান কোচ মামুনুর রশিদের। রক্ষণ থেকে তাকে অ্যাটাকিং মিডফিল্ড পজিশনে খেলিয়েছেন দেশের শীর্ষ কোচ। দেশের হকি শীর্ষ পর্যায়ে মামুনের এটি নিয়ে ছয়টি ট্রফি। একই মৌসুমে দুই ট্রফি জিতে অনেক তৃপ্ত এই কোচ, ‘আমার ক্যারিয়ারে অবশ্যই দারুণ এক সময়। হকিতে সাম্প্রতিক সময়ে এমন কতৃত্ব কারো নেই। আমি অবদান দেব আমার খেলোয়াড়দের তারা মাঠে অনেক পরিশ্রম করেছে।’
বিজ্ঞাপন
সবুজ একদিকে যেমন গোল করেছেন অন্য দিকে বিপ্লব অসংখ্য গোল সেভ করেছেন। টুর্নামেন্টে সফল হওয়ার পেছনে দলীয় সমন্বয়কে বিশেষভাবে দেখছেন মামুন, ‘আমার দলে সবাই সবার জায়গা থেকে দারুণ খেলেছে। এর ফলে আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছি।’
আগের ম্যাচে আবাহনীর বিপক্ষে শেষ মিনিটে দুই গোল হজম করে হেরেছিল মেরিনার্স। লিগ চ্যাম্পিয়ন হতে হলে আজ ড্রয়ের বিকল্প ছিল না। আবাহনী ম্যাচের পর খেলোয়াড়দের মানসিকভাবে উদ্দ্বীপ্ত করতেই বেশি সময় কাটিয়েছেন মামুন, ‘আবাহনী ম্যাচের হারটি দুঃখজনক ছিল। খেলোয়াড়দের উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করেছি। তারা সেটা কাটিয়ে উঠতে পেরে মাঠে স্বাভাবিক খেলা খেলেছে।’
মেরিনার্সের অধিনায়ক মামুনুর রহমান চয়ন দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে পেরে খুশি, ‘ক্লাবের খেলোয়াড়, কোচ, কর্মকর্তা সবাই এক লক্ষ্যে কাজ করেছি। এজন্য সফল হতে পেরেছি। সবার পরিশ্রম কাজ এসেছে।’
এজেড/এমএইচ