টোকিও অলিম্পিকে অ্যাথলেট মনোনয়ন নিয়ে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন। তাদের আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তিতে প্রথমে ছিল ‘সিলেকশন কমিটি মনোনয়ন দিয়েছে ৪০০ মিটার স্প্রিন্টার জহির রায়হনাকে।’ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব মন্টু জহিরকে মনোনয়নের প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘সিলেকশন কমিটি মনোনয়ন করেছে।’ 

এরপর ওই কমিটির প্রধান ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ফারুকুল ইসলাম বলেন, ‘সিলেকশন কমিটি কাউকে মনোনয়ন দেয়নি। আমার পর্যবেক্ষণ ছিল সর্বশেষ পারফরম্যান্স বিবেচনায় এনে মনোনয়ন দেওয়া।’ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন প্রথম বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার ঘণ্টা দেড়েক পর আরেকটি সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি দেয়। 

সেই বিজ্ঞপ্তিতে সিলেকশন কমিটির মনোনয়নের পরিবর্তে  ‘ফেডারেশন’ মনোনয়ন উল্লেখ করা হয়। সেই বিজ্ঞপ্তির নিচের অংশে ছিল, তিনজন অ্যাথলেটের মধ্যে জহির রায়হানের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে ফেডারেশন তাকে মনোনীত করেছে।’ কিন্তু প্রথম বিজ্ঞপ্তিতে ছিল দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পারফরম্যান্স বিবেচনা করে সিলেকশন কমিটি মনোনয়ন দিয়েছে

আধঘণ্টা পর আবার আরেকটি বিজ্ঞপ্তি দেয় অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন। সেই বিজ্ঞপ্তি ‘শ্যাম রাখি, কুল রাখির মতো।’ সর্বশেষ সংশোধিত বিজ্ঞপ্তিতে প্রথম অংশে বলা হয়েছে, ‘ফেডারেশন মনোনয়ন’ শেষের অংশে আবার রয়েছে ‘সিলেকশন কমিটি সর্বশেষ পারফরম্যান্স বিবেচনা করে একজনকে সিলেকশন করার মতামত দিয়েছে।’  

সর্বশেষ পারফরম্যান্স বিবেচনা করলে জহির রায়হান মনোনীত হতে পারেন না। কারণ জহির সর্বশেষ প্রতিযোগিতা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ গেমসে খেলতে পারেননি। ফলে এক্ষেত্রে ইসমাইল ও শিরিনের এগিয়ে থাকার কথা। ইসমাইল বাংলাদেশ গেমসে দ্রুততম মানব হওয়ার পাশাপাশি সম্প্রতি ইরানেও খেলেছেন। 

দ্রুততম মানবী শিরিন আক্তার আরেক বার অলিম্পিক খেলার জন্য এবারের ঈদেও বাড়ি যাননি। তার স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে। দেশের দ্রুততম মানব ও মানবী উভয়ই প্রচণ্ড হতাশ ফেডারেশনের সিদ্ধান্তে। দ্রুততম মানবী শিরিন আক্তার হতাশ কণ্ঠে বলেন, ‘ফেডারেশন একজনকে মনোনয়ন দিয়েছে। এ নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। তবে আমার নিজের জন্য আক্ষেপ ও অনুশোচনা হচ্ছে। আমি অলিম্পিকের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি। আমার টাইমিং ভালো হচ্ছে দিনকে দিন। আমি অলিম্পিকের জন্য ঈদেও যাইনি।’ 

অলিম্পিকে বাংলাদেশের অ্যাথলেটরা খেলে ওয়াইল্ড কার্ড নিয়ে। শিরিন ২০১৬ রিও অলিম্পিকে খেলেছেন। সেটাকে সান্ত্বনা হিসেবে মানতে চান না এই স্প্রিন্টার, ‘একবার খেলেছি বলে আরেকবার খেলা যাবে না বা কার্ড পাওয়া যাবে না বিষয়টি সে রকম নয়। টাইমিং, ফিটনেস ঠিক থাকলে কয়েকবার অলিম্পিকে খেলায় যেতেই পারে।’ 

তবে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছেন স্প্রিন্টার ইসমাইল। তিনি দেশের দ্রুততম মানব আবার সম্প্রতি ইরানে হামজা কাপ খেলেছেন। নিজেকে অলিম্পিকের জন্য প্রস্তুত করছিলেন। সেখানে জহির রায়হানকে বিবেচনা করে তার স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে। দুঃখে ভরা মন নিয়ে তিনি বলেন, ‘ফেডারেশন সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা। তবে আশায় ছিলাম কারণ বিগত অলিম্পিক গুলোতে ১০০ মিটার থেকেই বিবেচনা করা হতো। টাইমিং, পারফরম্যান্স সব কিছু নিয়ে আশায় ছিলাম।’

এজেড/এমএইচ