টেক জায়ান্টগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি বিল পাস হয়েছে। ছবি : বিবিসি।

যুক্তরাষ্ট্রের টেক জায়ান্টগুলোর ক্ষমতার লাগাম টানার জন্য হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভে ৫টি বিল পাস করা হয়েছে। শনিবার (১২ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ খবর জানা গেছে।

বিবিসি জানায়, ৫টি বিল উত্থাপন করেন হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভের ডেমোক্রেটিক সদস্য প্রমিলা জয়পাল। বিলটি পাস হওয়ায় এবার সিনেটে যাবে এবং তারপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সই করবেন। তার অনুমোদনের মাধ্যমেই বিলটি আইনে পরিণত হবে।

বিবিসি আরও জানায়, অ্যামাজন, গুগল, অ্যাপল ও ফেসবুকের মতো টেক জায়ান্টগুলোর বিরুদ্ধে ১৬ মাস তদন্তের পর এ বিলগুলো পাস করা হয়েছে। তদন্তে দেখা যায়, টেক জায়ান্টগুলো একে অপরের প্রতি প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব রাখছে এবং দীর্ঘ দিন ধরে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রী নেইল ব্র্যাডলি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট কয়েকটি টেক জায়ান্টের ক্ষমতার লাগাম টানতেই বিলটি পাস করা হয়েছে। তাদের ব্যবসায়িক নীতিমালা যথার্থ নয়। তাদের প্রতিযোগিতার লাগাম টেনে ধরতেই ৫টি বিল পাস করা হয়েছে।’

বিলগুলোতে কী বলা হয়েছে?

বিলের কো-স্পন্সর ড্যাভিড সিসিলিন টুইটারে লেখেন, ‘টেক জায়ান্টগুলোর একচেটিয়া মনোভাব দূর করতে বিলটি সহায়ক হবে এবং আমাদের অনলাইনভিত্তিক অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে।’

হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভের ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান সদস্যদের সমর্থনে পাস হওয়া বিলগুলো হলো-

১. দ্য অ্যামেরিকান চয়েস অ্যান্ড ইনোভেশন অনলাইন অ্যাক্ট- যে প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারে নিজেদের একচেটিয়া কতৃত্ব ধরে রাখতে চায়, বিলটি আইনে পরিণত হলে তাদের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ করা হবে।

২. দ্য প্ল্যাটফর্ম কমপিটিশন অ্যান্ড অপরচুনিটি অ্যাক্ট অব ২০২১- যারা নিজের প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে তাদের প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়, বিলটি তাদের ওপর কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হবে।

৩. দ্য এন্ডিং প্ল্যাটফর্ম মনোপলি অ্যাক্ট- এ বিলে বাজারে টেক জায়ান্টগুলোর একচেটিয়া আধিপত্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

৪. দ্য অগমেন্টিং কমপ্যাটিবিলিটি অ্যান্ড কমপিটিশন বাই এনাবলিং সার্ভিস সুইচিং, (অ্যাক্সেস) অ্যাক্ট অব ২০২১- বিলটির মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের তথ্য নেওয়াকে প্রতিযোগীদের জন্য সহজ করে দেওয়া হয়।

৫. মার্জার ফাইলিং ফি মডার্নাইজেশন অ্যাক্ট অব ২০২১- এই বিল যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ও ফেডারেল ট্রেড কমিশন টেক জায়ান্টগুলোর একচেটিয়া মনোভাব দূর করতে সহায়ক হবে।

পরামর্শক সংস্থা পাবলিক সিটিজেনের প্রেসিডেন্ট রবার্ট ওয়েইজম্যান বলেন, ‘বাজারে টেক জায়ান্টগুলোর একমূখী অবস্থানের কারণে ব্যবহারকারী, কর্মী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিলগুলো আইনে পরিণত হলে তাদের কুক্ষিগত ক্ষমতা সীমিত হয়ে আসবে।’

অ্যান্টি-ট্রাস্ট ও অ্যান্টি-কমপিটিটিভ ব্যবহার কেমন হবে?

বিল উত্থাপনকারী প্রমিলা জয়পাল বলেন, ‘অ্যামাজন, ফেসবুক, গুগল ও অ্যাপলসহ আরও যেসব টেক জায়ান্ট নিজেদের একচেটিয়া অবস্থান ধরে রাখতে চায়, তাদের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ করার কাজে এই বিল সহায়তা করবে।’

একই সঙ্গে বিবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অ্যান্টি-ট্রাস্ট সাব কমিটি ১৬ মাস তদন্তের পর সম্প্রতি টেক জায়ান্টগুলোকে অভিযুক্ত করে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। মূলত এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতেই ৫টি বিল পাস করা হয়েছে।

সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স ও সিএনএন।

এইচএকে/টিএম/এএ