দীর্ঘ দুই বছরের বিরতির পর ভ্রমণ আবার আগের রূপে ফিরে যাচ্ছে। দেশ বিদেশের ভ্রমণ সংক্রান্ত বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দল বেঁধে মানুষ বিদেশ যাওয়ার তোড়জোড় করছে। দেশের ভিতরে হোক বা বাইরে, আগ্রহী পর্যটকদের অভাব নেই জনপ্রিয় গন্তব্যগুলোতে। চলুন দেখে নেওয়া যাক এই জুন মাসে কোন গন্তব্যগুলো ভ্রমণের জন্য সেরা।

বাংলাদেশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কোনো অভাব নেই। সবুজে ঘেরা পাহাড় থেকে শুরু করে দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত; কি নেই আমাদের দেশে। ষড়ঋতুর প্রতিটিই আলাদাভাবে উপভোগ করা যায়। বর্ষাকালের মৃদুমন্দ বৃষ্টির মাঝে উপভোগ করার জন্যও উপযুক্ত জায়গা আছে আমাদের। কারণ এই বর্ষাকালেই পার্বত্য অঞ্চলের ঝর্ণাগুলো জীবন্ত হয়ে ওঠে। তাই দেশের মধ্যে ভ্রমণ করতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন পার্বত্য চট্টগ্রামে। সীতাকুণ্ড থেকে শুরু করে খাগড়াছড়ির রিসাং ঝর্ণা পর্যন্ত বর্ষার আগমনের আনন্দে মুখর থাকে।

শুধু ঝর্ণাই নয়, বেশ ভিন্নধরনের কিছু আকর্ষণ লুকিয়ে আছে এই পাহাড়ে। আছে ৪০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত পাহাড়ে ঘেরা বগালেক। বগালেক থেকে ২-৩ ঘণ্টা ট্র্যাকিং করলেই পৌঁছে যাবেন কেওক্রাডং পাহাড়ের শিখরে। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শিখরগুলোর মাঝে একটি এই কেওক্রাডং। তবে ট্র্যাকিং যদি বেশি দুঃসাহসিক মনে হয়, তবে একটু আরামদায়ক ট্যুরগুলো আপনার জন্য উপযুক্ত। দেখে নিতে পারেন বিশাল কাপ্তাই লেকে ভ্রমণকারী অভিজাত নৌকা- প্রমোদীনি। তাছাড়া পাহাড় কন্যা সাজেক উপত্যকা তো আছেই। আরামের মাঝে অল্প কয়েকদিনের ছুটি কাটানোর জন্য মেঘের মাঝে বাঁশের ঘরে থাকার জুড়ি নেই। তবে এতোগুলো ট্যুরের মধ্যে কোনটা ছেড়ে কোনটায় যাওয়া যায়, এই নিয়ে বিভ্রান্ত হতে হয়। বিভ্রান্তিটা কমাতে যাচাই বাছাই করে ট্যুর পছন্দ করে নিতে পারেন গোযায়ান এর ওয়েবসাইট বা অ্যাপে। কাপ্তাই, সাজেক, রাঙ্গামাটি ইত্যাদি এলাকার বিভিন্ন ট্যুর আছে তাদের প্লাটফর্মে। তাছাড়া প্রতিটি ট্যুরই আপনার প্রয়োজনমতো সাজিয়ে নিতে পারবেন, যেনো ভ্রমণের পথে কোনো ধরনের সীমাবদ্ধতা না থাকে।

এবার আসা যাক বিদেশ ভ্রমণের কথায়। ২ বছর পর বাধাহীনভাবে বিদেশ ভ্রমণের সম্ভাবনা আবার দেখা দিয়েছে। তাই অভ্যন্তরীণ ভ্রমণের পাশাপাশি আকর্ষণ বাড়ছে আন্তর্জাতিক ভ্রমণেরও। বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে নেপাল, থাইল্যান্ড, মালদ্বীপ, ইন্ডিয়া, তুরস্ক ইত্যাদি দেশ এখন সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। একটু হিসাব করলেই দেখা যায়, দেশের ভিতরে ভ্রমণ এবং কাছাকাছি রাষ্ট্রে ভ্রমণের খরচের তারতম্য খুব একটা না।

বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রথমেই দেখে নিতে পারেন পার্শ্ববর্তী দেশ নেপাল। বিশাল হিমালয় পর্বতমালা ও অন্নপূর্ণা রেঞ্জের মহিমায় আচ্ছন্ন দেশ নেপাল। কাঠমান্ডু, নাগার-কোট কিংবা পোখারার মত সৌন্দর্য পৃথিবীর খুব কম জায়গায়ই পাওয়া যায়। চাইলে উপভোগ করতে পারেন দেশটির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অথবা রোমাঞ্চকর অ্যাক্টিভিটিগুলো। এছাড়াও আছে থাইল্যান্ড, যেখানে একইসঙ্গে পাবেন রঙ্গিন শহুরে জীবনের চিত্র এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। ব্যাংককে যেমন আছে মহানাগরিক আবহ, স্ট্রিট ফুড এবং কেনাকাটার সুযোগ, তেমনি ক্রাবি কিংবা ফুকেটে পাবেন স্বচ্ছ নীল সমুদ্র ও সবুজ পাহাড়।

ছবির মত সুন্দর দেশ মালদ্বীপকে অনেকেই ভাবেন অতিরিক্ত বিলাসবহুল। কিন্তু একটু খোঁজ খবর নিলেই দেখতে পাবেন বাজেটের মধ্যেও মালদ্বীপের নীল পানি ও সাদা বালির সৌন্দর্য উপভোগ করা সম্ভব। ১২০০ দ্বীপের সমাগমে তৈরি দেশটিতে আছে বেশ কিছু স্থানীয় হোটেল, যেখানে কম খরচেই ট্যুর দেওয়া সম্ভব। পরিবারের সঙ্গে ভ্রমণ করতে চাইলে তুরস্কের জুড়ি নেই। বসফরাসের নীল পানি, ক্যাপাডোসিয়ার আকাশে উড়ন্ত হট এয়ার বেলুন, হাগিয়া সোফিয়ার ঐতিহ্য- সব মিলিয়ে পূর্ব ও পশ্চিম সংস্কৃতির মিলন-মেলা অদ্ভুত সুন্দর এই দেশটিতে।

বিদেশ ভ্রমণটা লোভনীয় লাগলেও, অনেকের জন্য অসম্ভব প্রায়। ভ্রমণকে সবার হাতের মুঠোয় আনার জন্য গোযায়ান নিয়ে এসেছে সুবিধাজনক আরেকটি সেবা- ০% ই এম আই। এই সেবার অর্থ হল আপনি আগে ভ্রমণ করুন, টাকার চিন্তা পরে করলেও হবে। ৬ মাস পর্যন্ত কোনোরকম বাড়তি ফি ছাড়াই নিতে পারবেন তাদের এই সেবাটি। তবে ৬ মাসের বেশি সময়ে টাকা পরিশোধ করার ক্ষেত্রেও গোযায়ান এ পেয়ে যাবেন খুবই স্বল্প পরিমাণের ইন্টারেস্টের হার। তাদের এই সুবিধাটি ব্যবহার করে ১২ মাস পর্যন্ত সময় নিয়ে পরিশোধ করতে পারবেন ট্যুরের টাকা। আভ্যন্তরীণ হোক বা আন্তর্জাতিক- সবধরনের ট্যুর, ফ্লাইট এবং হোটেলের জন্য ব্যবহার করতে পারেন এই সেবাটি।

দীর্ঘ অপেক্ষার পরে আবার চলে এসেছে ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত সময়। স্বপ্ন যদি থাকে ভ্রমণের, তবে তার পথে কিছুই বাধা হওয়া উচিত না। পাহাড় হোক বা সমুদ্র, দেশের ভিতরে বা বাইরে, দুঃসাহসিক অভিযান হোক বা আরামদায়ক অভিজ্ঞতা- ভ্রমণ চলুক বাধাহীন।