মানসিক প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কালীগঞ্জ পৌর মেয়রের ব্যতিক্রমী পিকনিক

সমাজের কাছে তারা অবহেলিত। অনেকে নিজ পরিবারের কাছেও অবহেলার পাত্র। বিনোদন তো দূরের কথা, ঠিকমতো তিনবেলা খাবার জোটে না তাদের। এমনি বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ডাবুল, দেলোয়ার, বিল্লাল আর হামজাসহ প্রায় অর্ধশত মানসিক প্রতিবন্ধীদের নিয়ে ব্যতিক্রমী বার্ষিক বনভোজনের আয়োজন করেছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ।
শনিবার (৪ মার্চ) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তিনি প্রতিবন্ধীদের ঝিনাইদহ ড্রিম ভ্যালি পিকনিক স্পটে নিয়ে বার্ষিক বনভোজন-২০২৩ উদযাপন করেন।
জানা যায়, কালীগঞ্জের ৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ৫০ জনের বেশি মানসিক প্রতিবন্ধীদের নিয়ে দিনভর নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে পালন করা হয় বনভোজন। তাদের নিয়ে আনন্দ উল্লাস ও দুপুরের খাবারের পর চড়ানো হয় রাইডসে। এরপর দিন শেষে ওই মানসিক প্রতিবন্ধীদের নতুন লুঙ্গি ও কম্বল উপহার দেন পৌর মেয়র।
ডাবুল মিয়া নামে একজন বলেন, এটা আমাদের জন্য অনেক সম্মানের। আমরা ভীষণ খুশি।
প্রতিবন্ধী বিল্লাল হেসেন বলেন, এক বেলা ঠিকমতো খেতেই পাইনে সেখানে আবার পিকনিক। আমরা খুব খুশি এমন আয়োজন পেয়ে।
পৌর মেয়র আশরাফ বলেন, প্রতিবন্ধীরাও রক্তে মাংসের মানুষ। তাদেরও শখ-আল্লাদ আছে। কিন্তু আমরা অনেকেই তাদের বিনোদন চাহিদা থেকে বঞ্চিত রাখি।
তিনি জানান, একদিন তিনি দেখেছিলেন একটি বাস থেকে দুইজন প্রতিবন্ধীকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এই করুণ দৃশ্যটি দেখে মনে দাগ কেটেছিল তার। তখনই মনে মনে পণ করেছিলেন সমাজের অবহেলিত মানসিক প্রতিবন্ধীদের নিয়ে একদিন বার্ষিক বনভোজনে যাবেন। তার সেই শখ পূরণ করতেই আজ তিনি দুইটি বাসে করে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে বনভোজনের আয়োজন করেছেন।
তিনি আরো জানান, তাদের খাবারের তালিকায় ছিল সকালের নাস্তা ও দুপুরের খাবার মেন্যুতে ছিল ভাত, সবজি, মাংস, দই, ড্রিংক্সসহ মিনারেল পানির ব্যবস্থা। খাবার শেষে তাদের ট্রেন রাইডসে চড়ানো হয়।
প্রতিবন্ধীদের ম্যানেজমেন্টের জন্য স্থানীয় এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারের পিএ আব্দুর রউফ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শিবলী নোমানী ও তার বন্ধুবান্ধব উপস্থিত ছিলেন। আগামী বছরে আবারো তাদের নিয়ে নতুন কোনো স্থানে বনভোজন করবেন বলে জানান পৌর মেয়র আশরাফ।
আব্দুল্লাহ আল মামুন/আরকে