এক লাখ টাকা বাঁচাতে পারে ক্যান্সার আক্রান্ত কিশোর রবিউলকে

পাবনার সুজানগরের হতদরিদ্র পরিবারের কিশোর রবিউল (১৪)। যে বয়সে তার খেলাধুলা-পড়ালেখায় ব্যস্ত থাকার কথা সেখানে তার শরীরে বাসা বেধেছে মরণঘাতি ক্যান্সার। টাকার অভাবে তার কেমোথেরাপি বন্ধের পথে। মাত্র এক লাখ টাকায় ভালো হয়ে উঠতে পারে রবিউল।
রবিউল সুজানগর উপজেলার ভাঁয়না ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর আব্দুর রশিদ শেখ ও চায়না খাতুনের ছেলে।
গোপালপুর আজগর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামিল হোসেন জানান, রবিউল তার বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। অনেকদিন স্কুলে না আসায় বাড়িতে গিয়ে জানতে পারি সে অসুস্থ। প্রায় ৮ মাস আগে রবিউল হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শে সিরাজগঞ্জ খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে যান বাবা আব্দুর রশিদ। পরে রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি ও বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করানোর পর রবিউলের শরীরে দুরারোগ্য ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়ে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছে, রবিউল ক্যান্সারের প্রাথমিক স্টেজে আছে যা চিকিৎসা করলে নিরাময়যোগ্য। হতদরিদ্র দিনমজুর বাবা ৮ মাস ধরে ছেলের চিকিৎসার খরচ যোগান দিতে সর্বস্বান্ত। এখন চিকিৎসার ব্যয় বহন করা তাদের দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে।
সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সেলিম মোরশেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, রবিউলকে কয়েক বছর মেয়াদি চিকিৎসা নিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে কেমোথেরাপি, হিমোগ্লোবিন ও দামি ইনজেকশন।
রবিউলের বাবা আব্দুর রশিদ শেখ বলেন, অন্যের বাড়িতে কাজ করে প্রতিদিন ৩৫০-৪০০ টাকা রোজগার করি। সেই টাকা দিয়ে পরিবারের ৫ সদস্যের মুখে আহার তুলে দেওয়াসহ সংসারের অন্যান্য খরচ করে কোনমতে জীবন চলে।
তিনি আরও বলেন, নিজের বসতভিটাটুকু ছাড়া আর কিছু নেই। এরই মধ্যে ছেলের শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ে। এ জন্য এনজিও থেকে ৩০ হাজার টাকা, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প থেকে ২০ হাজার টাকা এবং স্থানীয় একটি এনজিও থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণ নিই। পাশাপাশি এলাকার মানুষ হাট-বাজার থেকে কিছু টাকা সংগ্রহ করে দিয়েছে। সেই টাকা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু করি ছেলের।
প্রতি মাসে দুইবার ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ টাকা ছেলের চিকিৎসার পেছনে ব্যয় হয়েছে। প্রতি মাসে দুটি করে সর্বমোট ১০টি কেমোথেরাপি দিতে বলেছে চিকিৎসক। এর মধ্যে ৮টি কেমোথেরাপি দিয়েছি। প্রতিটি কেমোথেরাপি দিতে ২০ হাজার করে টাকা লাগছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছে, সব মিলে আরও এক লাখ টাকা লাগবে।
রবিউলের মা কান্নাজনিত কণ্ঠে ঢাকা পোস্টকে বলেন, সমাজের কিছু বিত্তবান মানুষ একটু সহযোগিতার হাত বাড়ালেই আমার রবিউল ইনশাল্লাহ সুস্থ হয়ে উঠবে। আবার সে স্কুলে যেতে পারবে। কেউ সহযোগিতার হাত না বাড়ালে প্রয়োজনে আমার নিজের কিডনি বিক্রি করে ছেলের চিকিৎসা করাতে হবে। শিশু রবিউলের প্রাণ রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীসহ সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিদের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন তার পরিবারের সদস্যরাসহ স্থানীয় এলাকাবাসী।
কেউ রবিউলের চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা করতে চাইলে ০১৭১৭৭০৩২২৫ নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন অথবা ০১৭৭৬৬১৮৮৩১ (বিকাশ) করতে পারবেন।
রাকিব হাসনাত/এসপি