সাংবাদিকদের লেখনী হচ্ছে সমাজ বদলের নীরব আন্দোলন

সমাজের সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার দলিত ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সাংবাদিকরাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন বলে মন্তব্য করেছেন রংপুরের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. জাকির হোসেন।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমের চোখে দেশ ও জাতির বাস্তব প্রতিচ্ছবি উঠে আসে। আমাদের সমাজ বদলানোর হাতিয়ার সাংবাদিকরা। তাদের কলম-ক্যামেরা, লেখনী শুধু উন্নয়ন, সমস্যা ও সম্ভাবনার খবর দেয় না, সচেতনতারও বার্তা দেয়। মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকারবঞ্চিতদের জন্য সাংবাদিকদের ভূমিকা বরাবরই প্রশংসনীয়।
সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রংপুরে আরডিআরএস বাংলাদেশ ভবনের বেগম রোকেয়া মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে দলিত ও আদিবাসীদের পরিস্থিতি ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে রংপুরের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. জাকির হোসেন এসব কথা বলেন। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠন হেকস্ এপার ও ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেড এ কর্মশালার আয়োজন করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাকির হোসেন বলেন, আমরা যা জানি না, গণমাধ্যম তাই জানাচ্ছে। এখন সঙ্গে যোগ হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। তবে গণমাধ্যমকর্মীদের ভূমিকাই গুরুত্বপূর্ণ। দলিত ও আদিবাসীদের জীবনমান উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরাসহ তাদের অধিকার, সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণেও সাংবাদিকরাই পাওয়ারফুল ভূমিকা রাখতে পারবে। কারণ লেখনী হচ্ছে সমাজ বদলের নীরব আন্দোলনের মাধ্যম।

কর্মশালায় দলিত ও আদিবাসীদের জীবনমান উন্নয়ন ও তাদের সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যমকর্মীদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন দেশবরেণ্য সাংবাদিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বরা। মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন এ সম্প্রদায়কে শিক্ষিত ও দক্ষ জনগোষ্ঠীতে রূপান্তরিত করতে পারলে দেশের উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হবে বলে দাবি তাদের।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও গাজী টিভির প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, বাংলা ইনসাইডারের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ বোরহান কবীর, রংপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুব রহমান, সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংগঠন হেকস্ এপারের সাইবুন নেছা রুবি, ইসরাত জাহান বিজু প্রমুখ।
এছাড়া বক্তব্য দেন কর্মশালার সমন্বয়ক ও দৈনিক দাবানলের নির্বাহী সম্পাদক সুশান্ত ভৌমিক, এনএনএমসির অ্যাডভোকেসি অফিসার পাপন কুমার সরকার, হেকস্ এপারের সিফাত ইমরানুর রউফ, রাকিবুজ্জামান প্রমুখ ।
বক্তারা পেশার কারণে বৈষম্যের শিকার পরিচ্ছন্নতা কর্মী, ঝাড়ুদার, নাপিত, শব্দকর ছাড়াও বহুমাত্রিক বৈষম্যের শিকার মানুষ ও শোষিত-বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কল্যাণে সাংবাদিকদের লেখনীর মাধ্যমে সত্য ও বাস্তবতা তুলে ধরার আহ্বান জানান।
দুই দিনের এ কর্মশালায় বিভিন্ন গবেষণাভিত্তিক তথ্য উপস্থাপনের পাশাপাশি দলিত ও আদিবাসীদের জীবনমান উন্নয়নে গণমাধ্যমকর্মীদের ইস্যুভিত্তিক দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে রংপুর, দিনাজপুর ও লালমনিরহাট জেলার সাংবাদিক, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, সংস্কৃতিকর্মী ও সংগঠকরা অংশ নেন।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর