এক হাজার গুলি ছুড়ে সেদিন বিজয়োল্লাস করেছিলাম
১৬ ডিসেম্বর ২০২১, ০৮:১২ পিএম

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালেব মৃধা
'নবম সেক্টরের অধীনে আমরা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেই। ৩ ডিসেম্বর বরগুনা মুক্ত হওয়ার পর আমরা পাথরঘাটায় গিয়ে অবস্থান করি। এরমধ্যে শুনতে পারি ১২ ডিসেম্বর হানাদাররা আমার বাবাকে মেরে ফেলে। এরপর আমি বরগুনা এসে বাবার দাফন করে মায়ের সঙ্গে দেখা না করেই আবারও যুদ্ধের প্রস্তুতি নেই।
কথাগুলো বলছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বরগুনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আবদুল মোতালেব মৃধা। দেশ স্বাধীন হওয়ার সেই স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন তিনি।
তিনি আরো বলেন, আমি এবং তৎকালীন নবম সেক্টরের সাব সেক্টর বুকাবুনিয়ার সেকেন্ড ইন কমান্ড আলমগীর সার্কিট হাউজে অবস্থান নেই। ১৬ ডিসেম্বর রেডিওর মাধ্যমে প্রথম জানতে পারি দেশ স্বাধীন হয়েছে। এর মধ্যে তৎকালীন ওসি সাহেব এসেও আমাদের দেশ স্বাধীন হওয়ার খবর দেন। বাবার মৃত্যুতে হৃদয় ভারাক্রান্ত থাকলেও মুক্তির আনন্দে সেদিন ওয়াবদা এলাকায় গিয়ে এক হাজার গুলি ছুড়ে বিজয়োল্লাস করেছিলাম।
মুক্তিযোদ্ধা মোতালেব মৃধাসহ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও বরগুনার ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণের পরে বরগুনার মুক্তিকামীরা রাইফেল, বন্দুক ও লাঠি নিয়ে বরগুনার বিভিন্নস্থানে সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ শুরু করে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রস্তুতির মধ্যে ২৬ এপ্রিল পাকবাহিনী পটুয়াখালী জেলা দখল করে ফেলে। এ যুদ্ধে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও ক্ষয়-ক্ষতি হয়। ভয়ে বরগুনার মুক্তিযোদ্ধারা এলাকা ছেড়ে চলে যান।
এদিকে পাকবাহিনী ১৪ মে বরগুনা এসে বিনা বাধায় বরগুনা শহর দখলের চেষ্টা করে এবং পাথরঘাটায় বিষখালী নদীর তীরে নির্মম গণহত্যা চালায়। তারপর অন্য থানাগুলো দখল করে পটুয়াখালী চলে যায়। ২৬ মে পাকিস্তানি ক্যাপ্টেন শাফায়াতের নেতৃত্বে ৪ জন পাক সেনা বরগুনা আসে এবং ২৯ ও ৩০ মে বরগুনা জেলখানায় ৭৬ জনকে গুলি করে হত্যা করে। তাদেরকে জেলা কারাগারের দক্ষিণ পাশে গণকবর দেয়া হয়।
এদিকে বরগুনার তরুণ মুক্তিযোদ্ধারা আধুনিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য প্রতিবেশী দেশ ভারতে যায়। প্রশিক্ষণ শেষে ফিরে এসে তারা বুকাবুনিয়ার সাব-সেক্টরের অধীনে যুদ্ধে অংশ নেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ছাত্র আবদুস সত্তার খানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের ২১ সদস্যের একটি দল বরগুনাকে মুক্ত করার পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ২ ডিসেম্বর দুপুরের দিকে বেতাগীর বদনীখালী নামক স্থানে অবস্থান নেয়। তারা একজন সহকর্মীকে র্যাকি করার জন্য বরগুনা পাঠায়। তার সংকেত পেয়ে মুক্তিযোদ্ধারা একটি বড় বাচারী নৌকাযোগে বিষখালী নদী দিয়ে বরগুনা রওনা হয়। রাত ৩টার দিকে তারা বরগুনার খাকদোন নদীর তীরে পোটকাখালী নামক স্থানে অবস্থান নেন।
বরগুনাকে মুক্ত করার কৌশল হিসেবে তারা বরগুনা কারাগার, ওয়াপদা কলোনি, জেলা স্কুল, সদর থানা, ওয়ারলেস স্টেশন, এসডিও'র বাসভবনসহ বরগুনা শহরকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করেন। এরপর তারা হেঁটে বরগুনা শহরে এসে যে যার মতো অবস্থান নেন। তারা ফজরের আযানকে অভিযান শুরুর সংকেত হিসেবে ব্যবহার করে। আযান শুরুর সঙ্গে সঙ্গে ৬টি স্থান থেকে একযোগে ফায়ার করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন।
রাজাকার এবং পাকিস্তানপন্থি পুলিশরা তখন নিরাপত্তার জন্য জেলখানায় আশ্রয় নিয়েছিল। কোনো প্রতি উত্তর না পেয়ে মুক্তিযোদ্ধারা দ্বিতীয় দফা ফায়ার করে জেলখানার দিকে অগ্রসর হয়। জেলখানায় অবস্থানরত পুলিশ ও রাজাকারদের আত্মসমর্পণ করিয়ে তারা তৎকালীন এসডিও আনোয়ার হোসেনের বাসায় যান। এরপর ট্রেজারির সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমএএস
টাইমলাইন
-
০১ জানুয়ারি ২০২২, ১৮:৩৬
বাবা তিন ভাইকে বললেন, তৈরি হও, তোমাদের যুদ্ধে যেতে হবে
-
৩০ ডিসেম্বর ২০২১, ১১:০৯
পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে পালিয়ে যুদ্ধে অংশ নেন আজহার
-
২৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪:১৮
নববধূ রেখে রণাঙ্গনে যান মোশারেফ
-
২৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪:৩২
৭ দিন কলাগাছের পাতা খেয়ে ছিলাম
-
২৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪:৩৯
সেদিন সরে না আসলে ব্রাশফায়ারে আমার মৃত্যু হতো
-
২৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১৯:৩২
আমাকে লক্ষ্য করে ৩০ মিনিট গুলি ছোড়ে পাকিস্তানি বাহিনী
-
২৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪:৩৩
বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনে ঘরে বসে থাকতে পারিনি
-
২৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫:০৮
রণাঙ্গনে ৪ সঙ্গী হারিয়ে আজও কাঁদেন সুভাষ চন্দ্র
-
২৩ ডিসেম্বর ২০২১, ০৮:৩৭
একাত্তরের স্মৃতিময় দিনগুলো আজও কাঁদায়
-
২২ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪:৫৬
আশপাশে সবাই শহীদ হলো, বেঁচে রইলাম আমি
-
২২ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩:৪৯
গলিত লাশের পোকায় ছেয়ে গিয়েছিল শরীর
-
২১ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩:৪৭
অসুস্থ মাকে দেখতে গেলে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে আটক হই
-
২১ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:৩৪
সেদিন আমরা বেঁচে গেলেও হত্যা করা হয় শ্রমিকদের
-
২০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭:০০
আড়াই মাইল সাঁতরে জীবন বাঁচাই
-
২০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬:০৫
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মানুষ রোজা পালন করতেন
-
১৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪:৫২
পাকিস্তানি সেনাদের দেখার সঙ্গে সঙ্গেই ফায়ারিং শুরু করি
-
১৮ ডিসেম্বর ২০২১, ২২:০৬
সেদিনের কথা মনে হলে আজও গা শিউরে ওঠে
-
১৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭:০১
তুই যুদ্ধে যা, আমিও আসছি
-
১৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:৪৪
ক্ষুধার জ্বালায় মানুষের বাড়ি থেকে ভাত খুঁজে এনে খেতাম
-
১৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১১:৪৫
টানা ১৯ দিন টর্চার সেলে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলাম
-
১৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩:৪০
মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার জন্য অপেক্ষায় থাকতাম
-
১৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১১:২৫
বরেন্দ্রের ত্রাস ছিল ‘রাজা বাহিনী’
-
১৬ ডিসেম্বর ২০২১, ২০:১২
এক হাজার গুলি ছুড়ে সেদিন বিজয়োল্লাস করেছিলাম
-
১৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬:৪২
গুলিবিদ্ধ হয়ে ধানখেতে অচেতন পড়ে ছিলাম তিন দিন
-
১৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭:১১
শতাধিক বিহারিকে খতম করি, কয়েক হাজার আত্মসমর্পণ করে
-
১৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩:৫৪
মা-বাবাকে না বলেই যুদ্ধে যান বোরহান উদ্দিন
-
১৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬:৪৮
পাকিস্তানি সেনাদের খুঁজে খুঁজে বল্লম দিয়ে খুঁচিয়ে মারি
-
১৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬:৪৩
মাকে মিথ্যা বলে চলে যাই যুদ্ধের প্রশিক্ষণে
-
১২ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬:২৫
গুলি ফুরিয়ে গেলে নারকেলগাছে উঠে বসি
-
১১ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭:২০
শেখ মুজিব আমাদের জড়িয়ে ধরে বললেন ‘আপনাদের সঙ্গে আছি’
-
১১ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬:১০
ক্ষুধার যন্ত্রণায় কেঁদেছি বারবার
-
১১ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:০০
একসঙ্গে ২৮০ পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করি
-
০৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪:৩২
কাঁদছিলেন মা, বাবারও চোখ দিয়ে ঝরছিল পানি
-
০৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩:০৯
পাকিস্তানি বাহিনী আমাদের ঘিরে ফেলে
-
০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫:৫৯
ঢাকা থেকে আট দিন ধরে হেঁটে এসে যুদ্ধে যোগ দিই
-
০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫:৪২
মা-বাবাকে না জানিয়েই রণাঙ্গনে যাত্রা করি
-
০৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭:০৬
আমাকে মুক্তিযুদ্ধে যেতে উৎসাহিত করেন বাবা
-
০৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:৫৯
বাড়ি থেকে পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি
-
০৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫:৩৬
সহযোদ্ধা পাশে লুটিয়ে পড়েন, আমি গুলি চালিয়ে যাচ্ছি
-
০৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:২৭
সামনে পাক বাহিনী, পেছনে রাজাকার, মাঝে আমি একা
-
০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:২২
মায়ের কাছ থেকে ৭০ টাকা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যান রশিদ
-
০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:১৭
সেদিন ২৬ জন শত্রুকে খতম করেছিলাম
-
০২ ডিসেম্বর ২০২১, ০৮:৫৭
অস্ত্র জমা দিয়ে ১৩ টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরি
-
০১ ডিসেম্বর ২০২১, ০৮:১৪
জানাজা শেষ করেই পাকিস্তানি বাহিনীকে ধাওয়া করি