‘স্বাস্থ্যসচিবের চামড়া তুলে নেব আমরা’ স্লোগানে উত্তাল কটিয়াদী

স্বাস্থ্যসচিবের বাড়িতে হামলার ঘটনায় করা মামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পৌনে একটার দিকে মিছিলটি কটিয়াদী সরকারি কলেজের সামনে থেকে শুরু হয়ে পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় শেষ হয়।
এ সময় স্বাস্থ্যসচিব আবদুল মান্নানের বিরুদ্ধে স্লোগানে উত্তাল ছিল কটিয়াদী পৌর শহর। মিছিল থেকে স্লোগান দেওয়া হয় ‘স্বাস্থ্য সচিবের চামড়া তুলে নিব আমরা, মান্নানের চামড়া তুলে নেব আমরা।’
বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তরা অভিযোগ করে বলেন, স্বাস্থ্যসচিব নিজের বাড়ির পাশে নিজের বউয়ের নামে সরকারি জমি ও মাজারের জমি দখল করে সরকারি ক্লিনিক স্থাপন করতে চায়।
কিন্তু স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ এলাকাবাসী কেউ জানেন না। শনিবার দুপুরে তারই প্রতিবাদ করেছে এলাকাবাসী। পরে এ ঘটনায় ২০-২৫ জনকে আসামি করে কটিয়াদী মডেল থানায় একটি মামলা হয়েছে। এ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে ও মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। কটিয়াদীতে তারা স্বাস্থ্যসচিবকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।
বিক্ষোভ মিছিলে কটিয়াদী উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে শনিবার রাতে কটিয়াদী মডেল থানায় অজ্ঞাত ২০-২৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। এ মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এদিকে, হামলা ঘটনায় কটিয়াদী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমএ জলিলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ।
উল্লেখ্য, শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নানের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার চান্দপুর গ্রামে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়।
মো. আবদুল মান্নান বাড়িতে অবস্থান করছেন এ খবরে শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দফায় দফায় তার বাড়িতে হামলা ও বাড়ি ত্যাগের আল্টিমেটাম দেয় সশস্ত্র কয়েকশ হামলাকারী। তাদের এই তাণ্ডবের মুখে সচিব মো. আবদুল মান্নান তখন নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
এ সময় তার প্রটোকলে থাকা কটিয়াদী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আশরাফুল আলম ব্যাপক মারপিটের শিকার হন। হামলাকারীরা তাকে মারতে মারতে পুকুরে ফেলে দেয় এবং পরে সেখান থেকে উঠিয়ে গাড়িতে তুলে দেয়।
সে সময় ঘটনাস্থলে থাকা কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান আত্মরক্ষার্থে কোনো রকমে গাড়িতে ওঠে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে কিশোরগঞ্জ শহরে চলে যান। এছাড়া এ হামলায় নির্মাণাধীন কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বরত প্রকৌশলীসহ অন্তত ১২ জন আহত হন।
স্বাস্থ্যসচিবের বাড়িতে হামলা ঘটনায় শনিবার রাতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী বাদী হয়ে কটিয়াদী মডেল থানায় দুটি মামলা করেন। এ মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এসকে রাসেল/এসপি