কাদের জন্য ৪৮তম বিশেষ বিসিএস? জানুন বিস্তারিত সব তথ্য

স্বাস্থ্য ক্যাডারে বিপুল সংখ্যক শূন্য পদ পূরণের জন্য ৪৮তম বিসিএস (বিশেষ) পরীক্ষা বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (বিপিএসসি)। এই পরীক্ষার মাধ্যমে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারে মোট ৩০০০টি শূন্য পদ পূরণ করা হবে। এর মধ্যে ২৭০০ সহকারী সার্জন এবং ৩০০ সহকারী ডেন্টাল সার্জন পদ রয়েছে।
আবেদনের সময়সীমা ও পদ্ধতি
পরীক্ষার জন্য অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ এবং পরীক্ষার ফি জমাদান শুরু হবে ১ জুন সকাল সাড়ে দশটা থেকে। আবেদনপত্র জমাদানের শেষ তারিখ ২৫ জুন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মিনিট। প্রার্থীদের বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের ওয়েবসাইট (www.bpsc.gov.bd) অথবা টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ওয়েব অ্যাড্রেস (http://bpsc.teletalk.com.bd) এর মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। ২৫ জুন সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সিস্টেম হতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইউজার আইডি প্রাপ্ত প্রার্থীরা পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে (অর্থাৎ ২৮ জুন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত) ফি জমা দিতে পারবেন। নির্ধারিত তারিখ ও সময়ের পর কোনো আবেদনপত্র গ্রহণ করা হবে না। ফি জমা দেওয়ার আগে আবেদনপত্র সংশোধনের সুযোগ থাকলেও ফি জমাদানের পর আর কোনো সংশোধনের সুযোগ থাকবে না। তাই প্রার্থীদের হাতে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে সতর্কতার সঙ্গে আবেদন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বয়সসীমা
বিপিএসসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সহকারী সার্জন পদের জন্য এমবিবিএস অথবা সমমানের ডিগ্রি এবং সহকারী ডেন্টাল সার্জন পদের জন্য বিডিএস অথবা সমমানের ডিগ্রি প্রয়োজন। আর প্রার্থীর বয়স ১ মে পর্যন্ত ২১ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে হতে হবে। বয়স কম বা বেশি হলে আবেদনপত্র গ্রহণযোগ্য হবে না।
যদি কোনো প্রার্থী এমবিবিএস বা সমমান, অথবা বিডিএস বা সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিয়ে থাকেন এবং তার ফল আবেদনপত্র দাখিলের শেষ তারিখ (২৫ জুন) পর্যন্ত প্রকাশিত না হয়, তাহলেও তিনি অবতীর্ণ প্রার্থী হিসেবে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। তবে তাকে সেই পরীক্ষায় পাস করে ডিগ্রি অর্জন করতে হবে। আর না হলে তার প্রার্থিতা বাতিল বলে গণ্য হবে। এছাড়া, বিদেশ থেকে অর্জিত কোনো ডিগ্রিকে সমমানের দাবি করলে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) কর্তৃক প্রদত্ত ইকুইভ্যালেন্স সনদের সত্যায়িত কপি মৌখিক পরীক্ষার বোর্ডে জমা দিতে হবে।
আরও পড়ুন
পরীক্ষা পদ্ধতি ও নম্বর বণ্টন
৪৮তম বিসিএস (বিশেষ) পরীক্ষা হবে মোট ৩০০ নম্বরের। এর মধ্যে লিখিত পরীক্ষা (এমসিকিউ টাইপ) ২০০ নম্বরের হবে এবং পরীক্ষার সময়কাল নির্ধারণ করা হয়েছে ২ ঘণ্টা। পরীক্ষায় মোট ২০০টি প্রশ্ন থাকবে, যার প্রতিটির সঠিক উত্তরের জন্য ১ নম্বর দেওয়া হবে এবং প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য মোট নম্বর থেকে ০.৫০ নম্বর কর্তন করা হবে। প্রশ্নপত্রে বিষয়ভিত্তিক নম্বর বণ্টন নিম্নরূপ: বাংলা ২০, ইংরেজি ২০, বাংলাদেশ বিষয়াবলি ২০, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি ২০, মানসিক দক্ষতা ১০, গাণিতিক যুক্তি ১০ এবং সংশ্লিষ্ট ক্যাডার ও পদের জন্য প্রাসঙ্গিক বিষয়ের ওপর ১০০ নম্বর বরাদ্দ থাকবে। লিখিত পরীক্ষার পাস নম্বর কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত হবে এবং এ বিষয়ে কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।
সম্ভাব্যভাবে লিখিত পরীক্ষা এবছরের জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে পারে। নির্ধারিত তারিখ ও সময় যথাসময়ে কমিশনের ওয়েবসাইট এবং সংবাদমাধ্যমে জানানো হবে।
লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের পরবর্তী ধাপে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিকেল বোর্ডের সম্মুখে হাজির হতে হবে। এই পরীক্ষায় পুরুষ প্রার্থীদের জন্য ন্যূনতম উচ্চতা ১৫২ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার এবং ওজন ৪৯ দশমিক ৯৯ কেজি, এবং নারী প্রার্থীদের জন্য উচ্চতা ১৪৭ দশমিক ৩২ সেন্টিমিটার ও ওজন ৪৩.৫৪ কেজি থাকতে হবে। নির্ধারিত উচ্চতার কম হলে কোনো প্রার্থীকে নিয়োগের জন্য যোগ্য বিবেচনা করা হবে না।
আবেদনে খেয়াল রাখতে হবে যেসব বিষয়
বিপিএসসি বলছে, আবেদনপত্রে কোনো ভুল বা মিথ্যা তথ্য দিলে, প্রয়োজনীয় তথ্য গোপন করলে, জাল সার্টিফিকেট দাখিল করলে, অথবা পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করলে প্রার্থীকে ওই পরীক্ষাসহ কমিশন কর্তৃক পরিচালিত পরবর্তী যেকোনো পরীক্ষার জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হবে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিপিএসসি ফরম- ১ এ নাম, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, জন্ম তারিখ বা কোনো গুরুতর ত্রুটি থাকলে পরবর্তী সময়ে সংশোধনের কোনো সুযোগ থাকবে না এবং এরূপ ত্রুটির কারণে প্রার্থিতা বাতিল হবে বলেও জানানো হয়েছে।
আরএইচটি/এসএম