আইজিএ প্রশিক্ষণ প্রকল্পে কর্মরত জনবলকে রাজস্বকরণের দাবি
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপজেলা পর্যায়ে মহিলাদের জন্য আয়বর্ধক (আইজিএ) প্রশিক্ষণ প্রকল্পে কর্মরত জনবলকে মন্ত্রণালয়ে রাজস্বকরণের সুপারিশ অনতিবিলম্বে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মহাসমাবেশ করছেন প্রশিক্ষক ও কর্মচারীরা।
রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সরকারি গেস্ট হাউজ যমুনার সামনে এ মানববন্ধন করছেন তারা।
এতে এক দফা দাবিতে সারা দেশ থেকে কর্মরত নারীরা একত্রিত হয়েছেন। তারা বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিচ্ছেন ‘আমার সোনার বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’।
মানববন্ধনকারীরা জানান, তারা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের ‘উপজেলা পর্যায়ে মহিলাদের জন্য আয়বর্ধক (আইজিএ) প্রশিক্ষণ প্রকল্পে’ কর্মরত প্রশিক্ষক ছিলেন। তারা ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে এখনও কর্মরত। দরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিত (১৬-৪৫ বছর বয়সী) মহিলাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি ও আত্মনির্ভরশীল জনশক্তিতে রূপান্তর করে দারিদ্র্য বিমোচন ও উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্তকরণের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রকল্পটির সূচনা হয়। দেশের পিছিয়ে পড়া নারীদের প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে উদ্যোক্তা তৈরি করে প্রকল্পটি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। বাস্তবিক প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে প্রকল্পটির মেয়াদ তিন দফায় বৃদ্ধি করা হয়। প্রকল্পটি ৩০ জুন ২০২৩ সমাপ্ত হয়ে যায়।
আরও পড়ুন
তারা আরও জানান, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন সেক্টর উপজেলা পর্যায়ে মহিলাদের জন্য আয়বর্ধক (আইজিএ) প্রশিক্ষণ (২য় সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ বৃদ্ধি সংক্রান্ত পত্রে সুপারিশ করেন যে অনুমোদিত ডিপিপির এক্সিট প্ল্যান অনুযায়ী প্রকল্পটি সমাপনান্তে এ ধরনের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম রাজস্ব বাজেটের আওতায় পরিচালনার কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে হবে। মাঠ পর্যায়ের সব কার্যক্রমের বাস্তবায়ন সফলতা ও প্রয়োজনীয়তার নিরিখে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এপ্রিল ২০২২ এডিপি সভার মাধ্যমে আইজিএ প্রশিক্ষণ প্রকল্পের জনবলের পদসৃজন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং এ সংক্রান্ত কার্যক্রম বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ সংক্রান্ত ফাইল বর্তমানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন।
মানববন্ধনকারীরা জানান, আইজিএ প্রশিক্ষণ প্রকল্পের শতকরা ৯৫ ভাগ প্রশিক্ষকই নারী, যাদের অধিকাংশই স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী, অনেকে বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা এবং পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। একাধিকবার মেয়াদ বৃদ্ধি করার কারণে কর্মরত জনবলের অন্য কোনো সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমাও অবশিষ্ট নেই। যার কারণে প্রকল্প সমাপ্তিতে সব জনবল বেকার হয়ে পড়বে, অসহায় হয়ে পড়বে নির্ভরশীল পরিবার। যা মানবতার লঙ্ঘন বলে স্পষ্ট প্রতীয়মান। এদিকে সব বিষয় উপেক্ষা করে ওই প্রকল্পের আদলে নতুন করে প্রকল্প গ্রহণ করার প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে। যা নতুন করে একটি জনগোষ্ঠীকে কিছুদিন পর বেকার বানানোর প্রক্রিয়া। বর্তমানে এ প্রকল্পে কর্মরত জনবল মানসিকভাবে অসহায় হয়ে পড়েছে। তাদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত অন্ধকার হতে যাচ্ছে। সব বিষয় বিবেচনা করে একটি উচ্চ শিক্ষিত জাতিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য উপজেলা পর্যায়ে মহিলাদের জন্য আয়বর্ধক (আইজিএ) প্রশিক্ষণ প্রকল্পে কর্মরত জনবলকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে।
এমএসআই/এসএসএইচ