ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও নতুন বাংলাদেশ
রক্তে কেনা বহু কাঙ্ক্ষিত এ দেশ আমাদেরই বাংলাদেশ। আগামীর বাংলাদেশ স্থায়ী নেতৃত্ব সংকটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস মাত্র তেপ্পান্ন বছরের। অনেক কিছুই দেখার সুযোগ হয়েছে আমাদের। স্বৈরশাসন, সামরিক শাসন, গণতান্ত্রিক শাসন, রাষ্ট্রপতি শাসিত, সংসদীয়, একদলীয়, বহুদলীয়, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার, অন্তর্বর্তীকালীন, সুশাসন, দুঃশাসন, ইত্যাদি ইত্যাদি নানাবিধ শাসন ব্যবস্থা।
এদেশে আমরা পেয়েছি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, মাওলানা ভাসানী, শেখ মুজিবুর রহমান, জিয়াউর রহমান-সহ আরো অনেক উজ্জ্বল নক্ষত্র, আরো অনেক উজ্জ্বল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
স্বাধীনতা পরবর্তীতে বাংলাদেশে আমরা দেখতে পাচ্ছি নেতৃত্ব তৈরির প্রধান মাধ্যম হচ্ছে উত্তরাধিকারী পদ্ধতি। সব পর্যায়ে একই চিত্র বিদ্যমান। যা সঠিক নেতৃত্ব তৈরিতে মূল অন্তরায় হয়ে দেখা দিয়েছে। পরিবার থেকেও যদি নেতৃত্ব দেওয়ার গুণাবলি কারো থাকে তার নেতৃত্ব দিতে কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু সে সংখ্যা তো হাতে গোনা।
বাংলাদেশ কিংবা পূর্ব পাকিস্তানের আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাই এদেশের সব আন্দোলন সংগ্রামে দেশের শিক্ষিত সমাজ নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল, যার মূল ভূমিকায় ছিল বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা। ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থান ছিল ব্যতিক্রম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে রাষ্ট্র ক্ষমতার বাহিরে থাকা সব ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে সরকারের পতন ঘটে।
অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়গত ৩০ বছরে বাংলাদেশে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় এ ছাত্র-সংসদ নির্বাচন হয়নি (শাকসু ও ডাকসু’র একটি নির্বাচন ব্যতীত)। ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা কোনো ছাত্র সংসদে প্রতিনিধি নির্বাচনের কোনো সুযোগ পায়নি। প্রত্যেকটি ক্যাম্পাসে পেশীশক্তির জোরে সরকারি দলের ছাত্র সংগঠনের (যে রাজনৈতিক দল যখন রাষ্ট্র ক্ষমতায়) আধিপত্য দেখতে পাওয়া যায়। অধিকাংশ রাজনৈতিক দলগুলোতে যেমন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেতা নির্বাচন করে না তেমনি ক্যাম্পাসভিত্তিক কমিটিগুলোতেও সাধারণ কর্মীদের গ্রহণযোগ্য নেতা নির্বাচন করার কোনো সুযোগ থাকে না।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে দলমত নির্বিশেষে নব্বই-এ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিল ছাত্র-শিক্ষক-কৃষক-শ্রমিক সহ সাধারণ জনগণ। সেই স্বৈরাচার শাসনামলেও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে প্রতিবছর ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতো।
’৯০ এর গণ-আন্দোলনের সময় আমান উল্লাহ আমান ও খায়রুল কবির খোকন ছিলেন ডাকসু’র নির্বাচিত ভিপি ও জিএস। আমান-খোকনের নেতৃত্বে ছাত্রদল, ছাত্রলীগ, ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফ্রন্টসহ সব ছাত্র সংগঠন একত্রিত হয়ে সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য গঠন করে এবং তাদের নেতৃত্বে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। পরিশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ স্বৈরশাসক ক্ষমতার মসনদ ত্যাগ করে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে হস্তান্তর করতে বাধ্য হন।
এদেশের যেকোনো আন্দোলনে ডাকসু, রাকসু, চাকসু, জাকসু, বাকসুসহ সব কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই ছিলেন নেতৃত্বে। ভাষা আন্দোলন, স্বাধিকার আন্দোলন, ছয়দফা, গণঅভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধ এমনকি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনেও ছাত্র নেতৃত্ব পিছপা হয়নি।
ক্যাম্পাসভিত্তিক ছাত্র-ছাত্রীদের যেকোনো দাবি-দাওয়া আন্দোলনেও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ছাত্র-সংসদের নেতৃত্বকে মেনে নিত কোনো ধরনের প্রশ্ন ছাড়া। কিন্তু বর্তমানে কোনো কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত ছাত্র-সংসদ নির্বাচন না হওয়ার কারণে নেতৃত্বের বিকাশ আমরা দেখতে পাই না। দলীয় আধিপত্য বিস্তার করাই হচ্ছে বর্তমান দলীয় নেতাদের মূল লক্ষ্য। ক্যাম্পাসে নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের। তাহলে ক্যাম্পাস থাকবে স্থিতিশীল।
প্রতিবছর কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের মাধ্যমে বিভিন্ন জাতীয় দিবসের ওপর আলোচনা সভা, বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, নাট্যানুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, উপস্থিত বক্তৃতা, অনেক ধর্মীয় অনুষ্ঠান (যেমন সরস্বতী পূজা), বার্ষিক ম্যাগাজিন, বইমেলা, বৈশাখি মেলা সহ সারাবছর আরো নানাবিধ অনুষ্ঠান পালিত হতো।
সারাবছর ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাস-পরীক্ষার বাহিরেও কো-কারিকুলাম কার্যক্রম নিয়েও ব্যস্ত থাকতো। আর যেকোনো ছাত্র সংগঠনের কাউন্সিল অধিবেশন তো ছিল একটা ছোটোখাটো আনন্দ উৎসব। নিজ দলসহ অন্য দলের কর্মীরা অপেক্ষা করতো বিরোধী ছাত্রসংগঠনের কে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়? এক দলের কাউন্সিলে অন্য দলের অতিথি হয়ে অংশগ্রহণ ছিল একটি ভ্রাতৃত্বসুলভ আচরণ। যা আমরা হারাতে বসেছি।
কোনো ক্যাম্পাসে ছাত্র-সংসদ নির্বাচন মানেই রীতিমতো একটি ঈদ উদযাপনের মতো এক বিশাল মহোৎসব। সবার প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা ছাড়াও সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করতো। কে কে আগামী এক বছর ক্যাম্পাসের নেতৃত্বে থাকবে তা নির্ধারিত হতো? কিন্তু বর্তমানে আমরা কি দেখতে পাচ্ছি, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
আমরা দাবি করি বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ, এ দেশে রয়েছে গণতন্ত্রের অনেক ইতিহাস। শুধু ক্যাম্পাসভিত্তিক সুষ্ঠু, সুচিন্তিত ছাত্র রাজনীতি বর্তমান অসহিষ্ণু রাজনীতির চিত্র পাল্টে দিতে পারে। আমরা যদি আমাদের ক্যাম্পাসগুলোকে ৩০ বছর আগের ক্যাম্পাসেও ফিরিয়ে নিতে পারি তবেই বর্তমান চিত্র পাল্টে যাবে।
প্রাসঙ্গিক একটি বিষয় উল্লেখ করা যেতে পারে, নব্বই দশকে এদেশের দু’নেত্রীকে কোনো অনুষ্ঠানে এক সঙ্গে দেখতে পেলে কিংবা দ্বিপক্ষীয় কোনো মিটিংয়ে উপস্থিত থাকলে আপামর জনসাধারণ উচ্ছ্বসিত হতো। এ যেন নেত্রীদের প্রতি আর দেশের প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। এ যেন ছিল রাজনীতিতে ভ্রাতৃত্ববোধের সরব উপস্থিতি। সব কিছুই ছিল গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাজনীতির চালচিত্র। জাতীয় নেতৃত্বের সহনশীলতাই ছিল ক্যাম্পাস রাজনীতির সব ছাত্র সংগঠনের মধ্যে।
একটু অতীত বিশ্লেষণে ফিরে গেলেই আমরা দেখতে পাই- প্রত্যেকটি ক্যাম্পাসে যারা ক্রীড়ামুখী ছিল তারা সারা বছর তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে চলত। ফুটবল, বাস্কেটবল, ভলিবল, হ্যান্ডবল, ক্রিকেট সহ দলীয় খেলা, বিভিন্ন অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতা কিংবা বিভিন্ন ইনডোর গেমস যেমন-দাবা, টেবিল টেনিস, ব্রিজ, ক্যারামসহ আরো নানাবিধ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। যেখান থেকে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতাসহ জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতো প্রতিযোগীরা। প্রতিভার স্বাক্ষর রাখার সুযোগ পেতো ছাত্র-ছাত্রীরা। কিন্তু বর্তমানে ছাত্র-সংসদ না থাকার কারণে এসব প্রতিযোগিতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সারা বাংলাদেশে সব কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা।
আমরা দেখতে পেয়েছি বার্ষিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় নজরুলগীতি, রবীন্দ্র সংগীত, আধুনিক গান, নৃত্য, দেশীয় সংস্কৃতিকে তুলে ধরে ছাত্র-ছাত্রীরা নানা প্রতিযোগিতায় সম্মুখীন হতো। যা তাদের মন ও মানসিক বিকাশ গঠনে সহায়তা করতো। বিভিন্ন উপন্যাস অবলম্বনে বার্ষিক নাটক হতো ক্যাম্পাসে যা, ছাত্র-সংসদ আয়োজন করতো। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা তাদের শিক্ষাদেবী হিসেবে সরস্বতী পূজা পালন করতো প্রত্যেকটি ক্যাম্পাসে, যাতে সব ধর্মের ছাত্র-ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করতো।
বিভিন্ন বিষয়ের ওপর উপস্থিত বক্তৃতার আয়োজন ছিল নিয়মিত। যেখান থেকে নেতৃত্ব বিকশিত হতো। বিতর্ক প্রতিযোগিতা ছিল একটা রেওয়াজের মতো। বিভিন্ন জাতীয় দিবসে আলোচনা সভা-র্যালি আয়োজন করতো কারণ সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সেই দিবসের ইতিহাস বিষয়ে সচেতন করার জন্য। বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সারা বছর ক্যাম্পাসে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বহির্ভূত কার্যকলাপে অংশগ্রহণে স্বীকৃতিস্বরূপ পুরস্কার দেওয়া হতো। যা ছাত্র-ছাত্রীরা আরো বেশি উজ্জীবিত হতো।
কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক লিখার হাতেখড়ি হিসেবে বার্ষিক ম্যাগাজিন ছিল অন্যতম মাধ্যম। প্রায় প্রত্যেকটি ক্যাম্পাস থেকেই একটি করে বার্ষিক ম্যাগাজিন বের হতো। একটু ভেবে দেখুন ছাত্র সংসদ না থাকায় বর্তমানে কত লেখনীর হাত স্তব্ধ হয়ে গেছে?
এ সকল কার্যক্রম কেন্দ্রীয় ছাত্র-সংসদ আয়োজন করতো প্রত্যেকটি ক্যাম্পাসে। কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের হল সংসদও ছিল সরব। হলের সব দাবি আদায়ের মূল কেন্দ্রই ছিল হল সংসদ।
আরও পড়ুন
সারা বাংলাদেশে কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-সংসদ নির্বাচন হলে সচেতন সবাই তা খোঁজ খবর রাখতো, সংবাদ মাধ্যমগুলো সে সংবাদ খুবই গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করতো। গত ত্রিশ বছরে ডাকসু ও শাকসু’র দুটি নির্বাচন ব্যতীত বাংলাদেশের কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা কোনো সরকারি কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি।
১৯৯৭ সালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (শাকসু) ছিল সর্বশেষ নির্বাচিত ছাত্র সংসদ। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাত্র সংসদ নির্বাচনের উদ্যোগ নিলেও কার্যত তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। ব্যর্থতার মূল কারণ হিসেবে দেখা যায় ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতা কর্মীদের সহাবস্থান নেই বললেই চলে। যে দল রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকে তাদের সমর্থনপুষ্ট ছাত্রসংগঠন ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তার করে রাখে। ক্যাম্পাসের প্রশাসন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হচ্ছে বারবার।
প্রায় প্রত্যেকটি ক্যাম্পাসেই দেখতে পাওয়া যায় সরকার কর্তৃক সিলেক্টেড ভাইস-চ্যান্সেলর কিংবা প্রিন্সিপাল তাদের অবস্থানকে শক্ত ভিত দেওয়ার জন্য সরকারি দলের ছাত্র সংগঠনকে ব্যবহার করার প্রবণতা। প্রতিবছর শিক্ষক সমিতির নির্বাচন, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে অথচ একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মূল স্তম্ভ হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রী। তাদের দাবি-দাওয়া আদায়ে কোনো ছাত্র সংসদ নির্বাচন নেই এই গণতান্ত্রিক দেশে। সত্যিই সেলুকাস, বিচিত্র এ দেশ আমাদের বাংলাদেশ।
সুস্থ রাজনৈতিক চর্চা না থাকায় ছাত্র-ছাত্রীরা নীতি-নৈতিকতা বিবর্জিত নানাবিধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। সব ক্যাম্পাসে নানারকম নেশাজাতীয় দ্রব্যের উপস্থিত, আত্মহত্যার প্রবণতা, অসহনশীল মনোভাব থেকে খুন, রাজনৈতিক পেশি শক্তি প্রদর্শনের প্রবণতা, যার কারণে ধর্ষণ এর মতো ঘটনা, কিছু কিছু শিক্ষকদের মধ্যে অনৈতিক চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ, ছাত্র-শিক্ষকদের হাতাহাতি যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা গেছে, যা ছিল শিক্ষিত সমাজের কাছে অনভিপ্রেত।
বার্ষিক শিক্ষা ক্যালেন্ডার যেকোনো ক্যাম্পাসের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ক্যাম্পাসে সুস্থ পরিবেশ বজায় থাকলেই বার্ষিক ক্যালেন্ডার সুষ্ঠভাবে পালন করা সম্ভব। গত ত্রিশ বছর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাত্র সংসদ এর জন্য বাৎসরিক ফি দিয়ে যাচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীরা। কিন্তু ছাত্র সংসদ না থাকার কারণে সেই খাতের অর্থ কোন খাতে ব্যয় হয়েছে এটাও ভাববার বিষয়। যেখানে শিক্ষা বহির্ভূত কোনো কার্যক্রম নেই সেখানে ছাত্র-সংসদ ফি কেনই বা নেয়া হয়, তা বোধগম্য নয়। যা প্রতিবছর শিক্ষা ব্যয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে।
ছাত্র সংসদবিহীন ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদের নামে কোটি কোটি টাকা উত্তোলন বন্ধ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। অবিলম্বে ছাত্র সংসদ প্রতিষ্ঠা করে ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু রাজনৈতিক চর্চার ব্যবস্থা করলে এ দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব সংকট থেকে পরিত্রাণের সুযোগ পাবে।
যদি নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে নেতৃত্বের বিকাশ না ঘটানো সম্ভব হয় নিকট ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে কঠিন নেতৃত্ব সংকটে পড়তে হবে। বিগত দিনের মতো পেশিশক্তি আর অর্থের কাছে পরাজিত হবে দেশের রাজনীতি।
মো. কামরুল ইসলাম, সাবেক জিএস, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (শাকসু) ও সাবেক সভাপতি, সাস্ট ক্লাব লিমিটেড